শহিদ আনাসের চিঠি হাতে মায়ের আর্তনাদ


নিজস্ব প্রতিবেদক
বছরঘুরে বেদনার ঝড় হয়ে ফিরছে, জুলাইয়ে হারিয়ে যাওয়া একেকটি নিষ্ঠুর হত্যার গল্প। তবে, এর মাঝে কিছু মৃত্যু মানুষের মনে রেখে গেছে গভীর ক্ষত। রাজধানীর গেন্ডারিয়ার স্কুল শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান আনাস তাদেরই একজন। শহিদ হওয়ার আগে লিখে যাওয়া যার চিঠি দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে প্রতিটি বিবেককে।
শহিদ সন্তানের চিঠিটা পড়ে শেষ করতে পারলেন না মা। এক বছর পরেও মাতৃ হৃদয়ের ক্ষতটা যে ভীষণ দগদগে। জুলাইয়ের উত্তাল দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মিছিল ক্ষত-বিক্ষত করেছিল দশম শ্রেণীর ছাত্র শাহরিয়ার খান আনাস। তাই তো, বাবা-মায়ের বারণ ধরে রাখতে পারেনি প্রতিবাদী সেই কিশোরকে।
৫ আগস্ট ভোরে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার বাসা থেকে না বলে বেরিয়ে যায় সে। চানখারপুল এলাকায় সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশের বুলেট এফোড়-ওফোড় করে দেয় আনাসের বুক। যেনো চিঠিতে লেখা কথাগুলোকে সত্যি করে আনাস বেছে নিয়েছিল গর্বের সে মৃত্যু।
আনাসের বাবা বলেন, আমি কাপুরুষের মতো আমার পরিবারকে বাঁচানোর জন্য ঘরে ছিলাম, কিন্তু আমি প্রতিদিন মাপ চাই ওর (আনাস) কাছে, আমি অপরাধী ওর (আনাস) কাছে। আমি ওকে আন্দোলনে নিয়ে যেতে পারি নাই, এই খুনি হাসিনার ভয়ে। যদি তার পতন না হয় তখন তো ঘর থেকে আমাদের নিয়ে নিয়ে মারবে, গুম করবে। শুধু এই ভয়ে আমি পারি নাই।
মিডফোর্ড হাসপাতালে নানা রহস্যের পর নিথর দেহের আনাস ফিরে আসে চেনা আঙিনায়। সুকান্ত ভট্টাচার্যের আঠারো বছর বয়স কবিতার আঠারো না ছুঁলেও এ বয়সেও প্রাণ দেয়া-নেয়ার ঝুলিটা থাকে না শূন্য। সঁপে আত্মাকে শপথের কোলাহলে।
আনাসের মা বলেন, স্কুলে যখন একটা ওয়াদা পাঠ করানো হয়েছিল, দেশের সেবায় সর্বদা নিয়োজিত থাকব, দেশকে একটা শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গঠন করব। সে ওয়াদাটা সে (আনাস) পূরণ করে গিয়েছে।
আনাসের বাবা বলেন, সকালে অফিসে যাওয়ার আগে যখন আমি কবরের সামনে যাই, দুইটা প্রজাপতি এসে খুব খেলা করে। প্রতিদিন আমি চিন্তা করি আর ওর মাকে বলি যে আমার আনাসকে আমি যেভাবে রেখেছি সেভাবেই আছে কবরে। আস কবরটা খুঁড়ে ওরে বের করে নিয়ে আসি। প্রতিটা দিন এই চিন্তা করি।
হুট করে এক ভোরে আন্দোলনে বেরিয়ে যায়নি আনাস। জুলাইয়ের শুরু থেকে কোটা আন্দোলন ঘিরে দেশে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে নিজের মতামত লিখতো খাতায়।
জুরাইন কবরস্থানে দাদির কবরে শায়িত জুলাই বিপ্লবের অকুতোভয় আনাস। আদরের নাতির রক্তাক্ত মরদেহ সেদিন কোলে করে এনেছিলেন নানা সাইদুল রহমান। পাহাড়সম সেই কষ্টের ভার আজও সইতে পারেন না তিনি।
আনাসের নানা বলেন, যে দায়িত্বটা বড়দের ছিল সে দায়িত্বটা আমাদের পক্ষ থেকে পরিবারের পক্ষ থেকে জাতির পক্ষ থেকে সে দায়িত্ব পালন করে গিয়েছে।
চিঠিতে আনাস লিখছিল যে অন্যের জন্য নিজের জীবনকে বিলিয়ে দেয়, সেই প্রকৃত মানুষ। বলেছিল যদি বেঁচে না ফিরি তবে, কষ্ট না পেয়ে গর্বিত হয়ো।
ভিওডি বাংলা/ এমপি
৬ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৭৭৮ জন : সেভ দ্য রোড
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সড়কপথে মোট …

বাংলাদেশে আসছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পপ্রধান
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতা সম্প্রসারণের …
