ঈদের পরের দিনেও আন্দোলনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা


নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মরত জনবলকে সমগ্রেডে পদ সৃজনসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে টানা ১২ দিনের মতো আন্দোলন করছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা।
রোববার (৮ জুন) সকাল ৯টা থেকে আবারও রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা।
এদিন সরেজমিনে বেলা সাড়ে ১১টায় দেখা যায়, নিজেদের দাবি সম্বলিত ব্যানার নিয়ে বসে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন শতাধিক কর্মীরা। শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও সন্ধ্যা নাগাদ সেখানে ছিলেন তারা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস পায়নি তারা।
তথ্য আপাদের চার দফা দাবিগুলো হলো—প্রকল্পে কর্মরত সব জনবলকে সমগ্রেডে পদ সৃজন করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর, যেহেতু রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য সময়ের প্রয়োজন তাই প্রয়োজনীয় সময় ৩-৫ বছর প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি, পদ সৃজন করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর সম্ভব না হলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদের ভিত্তিতে সম গ্রেডে আত্তীকরণ এবং কর্তন করা বেতন ও ভাতা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা।
আন্দোলনকারীরা জানান, গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের জন্য তিনটি মাধ্যমে ছয়টি বিষয়ে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন, কৃষি, লিঙ্গ সমতা এবং ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১১ সালে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। তথ্যকেন্দ্র ও বাড়িতে গিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সেবাগুলো চালু করা হয়। পাশাপাশি, তথ্যকেন্দ্রগুলো থেকে বিনামূল্যে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা, ওজন পরিমাপ, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ পরিমাপ, শরীরের তাপমাত্রা ও উচ্চতা পরিমাপসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে এসব কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন চাকরির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও বৃত্তি, প্রতিবন্ধীদের ভাতার ও বিভিন্ন চাকরির-প্রশিক্ষণের তথ্য ও আবেদন, উদ্যোক্তাদের ই-লার্নিং প্রশিক্ষণ প্রদান, পরীক্ষাসহ অনলাইনে প্রাপ্ত বিভিন্ন বিষয়ের ফল অবহিতকরণ এবং ক্যারিয়ারবিষয়ক পরামর্শসহ তথ্য ও পরামর্শ সেবা দেওয়া হয়। এমনকি উঠান বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধান ও সচেতনতা তৈরি, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেল, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ, আইনগত সহায়তা প্রদানের কাজও করেন এসব তথ্য আপারা।
তাদের অভিযোগ, প্রকল্প শেষে চাকরি স্থায়ীকরণের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বিভাগে স্থানান্তরের প্রতিশ্রুতির বিষয় উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব উল্লেখ করে এসব নারীকে নিয়োগ দেওয়া হলেও এখন তা বরখেলাপ করা হচ্ছে। চলতি জুন মাস থেকে বন্ধ হতে হতে যাচ্ছে প্রকল্পটি। সেজন্য মন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশে প্রতিটি উপজেলায় তথ্য আপাদের ব্যবহৃত কার্যালয় গুটিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য নিয়োগের তিন মাস পর থেজে বেতনের একটা অংশ কেটে রাখা হতো।
তারা আরও বলেন, একাধিক বার মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি আমরা। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য মাঠ পর্যায়ে সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছি আমরা। আমাদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তৃতীয় পর্যায়ে আউট সোর্সিংয়ে নিয়োগ দিচ্ছে বর্তমান সরকার। এজন্য আসলে রাস্তায় বসে আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছি আমরা।
আন্দোলনকারী আখতার জাহান বলেন জানান, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় কর্মরত তিনি। চাকরি স্থায়ী করার কথা বলে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে প্রতি মাসে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪০০ ও সহকারীদের বেতন থেকে ১ হাজার ৩৯০ টাকা কেটে নেয় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে দাবি পূরণের কোনও অগ্রগতি না দেখে গত ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আশ্বাস দিয়েছিলেন। মাঝে তিন মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
তথ্য আপা কর্মীদের ভাষ্য মতে, অন্যান্য সরকারি চাকরির মতো পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৮ সালের নভেম্বরে এ প্রকল্পে যোগ দেন তারা।
জানা যায়, ৪৯২টি উপজেলায় তথ্যকেন্দ্রে একজন করে তথ্যসেবা কর্মকর্তা (১০ম গ্রেড), দুজন তথ্যসেবা সহকারী (১৬তম গ্রেড) ও একজন করে অফিস সহায়ক (২০তম গ্রেড) মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৯৬৮ জন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত রয়েছেন। তৃণমূল নারীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, আইন, জেন্ডার, ব্যবসা, পরিবার পরিকল্পনা এবং সাইবার সিকিউরিটি এই ৮টি বিষয়ে জরুরি তথ্য সরবরাহ ও সহায়তা দিয়ে আসছেন দেড় হাজার কর্মী।
ভিওডি বাংলা/ডিআর
উপদেষ্টাদের সম্পদের হিসাব চাইতে দুদকে হানিফ বাংলাদেশি
নিজস্ব প্রতিবেদক
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সম্পদের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করতে দুর্নীতি …

দুই দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে চাকরি থেকে অব্যাহতি ও …

হঠাৎ উত্তপ্ত প্রেসক্লাব এলাকা, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশের …
