• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

আ’লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে বাংলাদেশ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে: প্রেস সচিব

   ১২ মে ২০২৫, ০৩:০০ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ‘সর্বজনীন স্বীকৃত’ মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘এ বিষয়টি সবাই গ্রহণ করেছে, ইউনিভার্সালি অ্যাকসেপ্টেড। দু-একটি দল-মতে ভিন্নতা থাকতে পারে। সেটা কোনো বিষয় নয়। নিষিদ্ধের বিষয় নিয়ে আমরা সব দলের সঙ্গেই কথা বলেছি। সুতারাং আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে সারা বাংলাদেশ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে।’

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।

প্রেস সচিব বলেন ‘আওয়ামী লীগ লুট করেছে, খুন-গুম করেছে। সাড়ে তিন হাজার মানুষ গুম হয়েছেন। ধরে নিয়ে আয়নাঘরে কঠিন শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বাচ্চারাও মুক্তি পায়নি। তারা মানুষের সব অধিকার খর্ব করেছে। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এটা তাদের নিষিদ্ধ হওয়ার বড় কারণ।’

এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে, তারা কী পরিমাণ খুন-গুম করেছে। নিষিদ্ধের জন্য বিশ্বজুড়ে সাপোর্ট ছিল। এ সিদ্ধান্তের পর পুরো দেশ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। এটা সব দলের সঙ্গে কথা বলেই করা হয়েছে।’

১৪ দল কিংবা জাতীয় পার্টির মতো দলগুলো নিষিদ্ধের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রতিবেদনে কিন্তু আওয়ামী লীগের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সুস্পষ্ট রয়েছে। অন্য দলগুলোর ভূমিকা সেভাবে আসেনি। হত্যা-গুম সবকিছু শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছে। এজন্য আওয়ামী লীগ সুস্পষ্টভাবে দায়ী।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে আওয়ামী লীগ যে কী পরিমাণ লুটপাট করেছে সেটা আপনারা জানেন। একটি কোম্পানি ৭৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। একজন কবিতা পাঠ করেন ওই দলের, তিনিও ফারমার্স ব্যাংক থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে গেছেন। এভাবে দেশের বিশাল সম্পদ লুট হয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরে সাংবাদিকতায় ব্যর্থতা অনুসন্ধানের জন্য জাতিসংঘে চিঠি দেওয়া হবে। কারণ বাংলাদেশে সাংবাদিকতার অসফলতা আছে। এগুলো আমরা জানতে চাই। গত ১৫ বছরে সাংবাদিকতা কেমন হয়েছে তা রিভিউয়ের আবেদন জানাবো। তারা ইন্ডিপেন্ডেন্ট এক্সপার্ট এনে ইনভেস্টিগেট করবে।’

সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো ১৫ বছর ধরে পূর্বাচলের প্লট নিয়ে ব্যস্ত ছিল-এমন অভিযোগ তুলে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাদের উচিত সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে আওয়াজ তোলা। কপিরাইট নিয়ম নিয়ে কথা বলতে হবে। ৩০ হাজারের নিচে বেতন হওয়া উচিত নয়। যারা পারবেন না তারা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিন। এ বিষয়গুলো নিয়ে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর কথা বলা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে শেয়ার বাজারে যে ভয়াবহ ডাকাতি হয়েছে তার কোনো বিচার হয়নি। এখন যেন শেয়ার বাজার ডাকাতের আখড়া না হয়। প্রতিটি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে বলেও জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নেই। এমনকি তাঁর কোনো ব্যক্তিগত গাড়িও নেই।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূস তার শাসন চলাকালে গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রামীণ এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সিসহ বেশ কিছু সুবিধা নিয়েছেন এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, আপনি দেখেন যে এখানে (এসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে) অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ বা ভূমিকা আছে কিনা? আর যে-সব প্রতিষ্ঠানের কথা বলছেন সেগুলো কোনোটাই ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত কি-না? এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তার কোনো শেয়ার আছে? এসব প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি কোনো সুবিধা পান? আসলে কী এগুলো ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান? গ্রামীণ নামটা না হয় ড. ইউনূস দিয়েছেন। তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের একটা শেয়ারের মালিক কি-না? উনার তো ব্যক্তিগত কোনো সম্পত্তি আছে কোথায়? কেউ দেখাতে পারবে?

তিনি বলেন, আপনারা বের করে দেখান যে এসব প্রতিষ্ঠান পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা বা সরকার কোনো ভূমিকা রেখেছে। আমি সবাইকে এসব বিষয়ে তদন্ত করার অনুরোধ জানাই। গ্রামীণ এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি ২০০৯ সালে আবেদন করেছিল। ওই সময়ে ড. ইউনূস সৌদি আবর গিয়েছিলেন, সেখানে সৌদি ও জার্মানের একটা হাসপাতালে চেইন তাকে বলেছেন আপনি নার্স এবং হাসপাতাল স্টাফ পাঠান। তারা বাংলাদেশের নিয়মিত কর্মী পাঠানো এজেন্সির মাধ্যমে নেবে না। কারণ ড.ইউনূসের মাধ্যমে নিলে খরচ একদম সীমিত পর্যায়ে থাকবে। সেই আলোকে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তারা অনুমোদন দেয়নি। এখন ২০২৪ সালের পর যদি লাইসেন্সের অনুমোদন পায় তাহলে দোষ কি? বাংলাদেশে এই রকম সাড়ে ৩ হাজার এজেন্সি আছে।

প্রেস সচিব বলেন, তিনি গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় করতে চেয়েছিলেন ২০১২-১৪ সালের মধ্যে। ২০১৪ সালে পূর্বাচলে তার ২-৩ শত বিঘা জমি কেনা হয়েছিল। তখন যতবারই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কাছে আবেদন নিয়ে গিয়েছিলেন, ততবারই তারা বলেছিলেন আবেদন জমা দিয়েন না। আমরা অনুমতি দিতে পারবো না। এখন গত ৬ মাস অডিট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি পুরো বিশ্বের বিখ্যাত অধ্যাপকদের আনতে চেয়েছিলেন, যেটা বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হবে।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
‘বাংলা এডিশন’-এর যাত্রা শুরু
‘বাংলা এডিশন’-এর যাত্রা শুরু
বাংলাদেশ–চায়না আপন মিডিয়া ক্লাব ও ডিআরইউ মধ্যে সমঝোতা সই
বাংলাদেশ–চায়না আপন মিডিয়া ক্লাব ও ডিআরইউ মধ্যে সমঝোতা সই
বিজিএমইএ সভাপতির সাথে ডিআরইউ নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ
বিজিএমইএ সভাপতির সাথে ডিআরইউ নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ