ভোরের আলোয় স্পষ্ট হলো কড়াইল বস্তির আগুনের ক্ষত

ভোরের আলো ফুটতেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে রাজধানীর কড়াইল বস্তির ভয়াবহ আগুনের ক্ষতচিহ্ন। সারারাত আগুনের সঙ্গে প্রাণপণে লড়াই করে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলো সকালে ফিরে দেখেছেন-তাদের সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ছাড়া খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেক পরিবার।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন নেভানোর পর ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহ চিত্র সামনে আসে। অধিকাংশ পরিবার খামারবাড়ি মাঠে অবস্থান নিয়েছে। শিশুদের অনেকেই গায়ে থাকা ভেজা কাপড়েই ঠান্ডার মধ্যে ঘুমিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন জানান, বস্তির ঘিঞ্জি পরিবেশ, পানি সংকট এবং সরু রাস্তার কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়। ১৯টি ইউনিট স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা লাভলী বেগম জানান, আগুনে তাদের সবকিছু পুড়ে গেছে-কাপড়, জমানো টাকা, কিস্তিতে কেনা জিনিস-সবই হারিয়েছেন। শিশুদের নিরাপদ আশ্রয় ও খাদ্যের অভাব নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার স্বামী মোহসিন আলী বলেন, আগুন লাগার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না, ফিরে এসে কিছুই রক্ষা করতে পারেননি।
এদিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে খাবার ও পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পুরুষ অভিভাবকরা উদ্ধারকাজে ব্যস্ত থাকায় নারী ও শিশুরা অধিক কষ্টে পড়েছেন। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি এবং সামাজিক সংগঠন খাবার ও পানি পৌঁছে দিলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।
ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে যানজট ও ভিড়ের কারণে সময় লাগে। পাইপ ও পানি সংকটও বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ঘনবসতি, প্লাস্টিক ও কাঠের ব্যবহার এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার আগুন দ্রুত ছড়ানোর কারণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে ঘটনাস্থলে তীব্র পানি সংকটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় কমিটি এখনও আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানাতে পারেনি।
ভিওডি বাংলা/জা






