• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

মেয়র নির্বাচনে ইতিহাসের আহ্বান দিলেন জোহরান মামদানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    ৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১৮ পি.এম.
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি ভোটারদের ইতিহাস সৃষ্টি করার আহ্বান জানান-ছবি সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) শুরু হয়েছে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের ভোটারদের ইতিহাস তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন। 

৩৪ বছর বয়সী মুসলিম মামদানির জয়ী হলে দুইটি নতুন ঘটনা ঘটবে-তিনি হবেন নিউইয়র্কের ইতিহাসের সবচেয়ে কমবয়সী নির্বাচিত মেয়র এবং প্রথম মুসলিম মেয়র।

ভোটগ্রহণের আগের দিন সোমবার শেষবারের মতো প্রচারাভিযানে নেমেছিলেন জোহরান মামদানি। নিউইয়র্কের কুইনস শহরের অ্যাস্টোরিয়াতে বক্তৃতা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে নিজের প্রচারাভিযান শেষ করেন ডেমোক্রেটিক পার্টির এই প্রার্থী। বক্তৃতায় তার নির্বাচনী প্রচারণায় যারা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।

বক্তৃতায় স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের পরিশ্রমের কারণেই আজ আমরা নিউইয়র্কের বাসিন্দারা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে আসতে পেরেছি। আমরা সবসময় মেহনতী মানুষের রাজনীতি করি এবং আমাদের প্রচারাভিযানেও আমরা সেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। নিউইয়র্ক সিটি আমাদের নিজেদের শহর এবং আপনাদের সবার অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার ভিত্তিতে এই শহরের রাজনীতি আমরা নতুনভাবে নির্মাণ করব।”

মামদানির পক্ষে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে অংশ নিয়েছেন ১ লাখেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী। প্রচারাভিযানের শেষ দিনের ভাষণে স্বেচ্ছাসেবীদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে মামদানি বলেন, “আমাদের কাজ শেষ। সবকিছু মাঠে ফেলে আসুন। এখন নিউইয়র্ক সিটির ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়।”

জোহরান মামদানির জন্ম উগান্ডায়। তার বাবা মাহমুদ মামদানি ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন লেখক, তাত্ত্বিক, অধ্যাপক এবং উগান্ডার নাগরিক, মা মীরা নায়ার একজন সুপরিচিত ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক। জন্মসূত্রে মুসলিম মামদানি নিজেকে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট’ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

শেষ দিনের প্রচারাভিযানে অ্যাস্টোরিয়াকে বেছে নেওয়ারও কারণ আছে। এই অ্যাস্টোরিয়া থেকেই রাজনীতিবিদ হিসেবে উত্থান ঘটেছিল জোহরান মামদানির। মেয়র নির্বাচনের আগে কাউন্সিলর হিসেবে নিউইয়র্ক সিটি কর্পেরেশনে অ্যাস্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।

এবারের মেয়র নির্বাচনে নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হয়েছেন কার্টিস স্লিওয়া, তবে মামদানির সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র অ্যান্ড্রু কুওমোকে। মামদানির মতো তিনিও ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা এবং জ্যেষ্ঠ নেতা। এবারের মেয়র নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য তিনিও দলের কাছে আবেদনও করেছিলেন।

এই অবস্থায় কে দলীয় প্রার্থী হবেন-তা নির্ধারনে গত ২৫ জুন অভ্যন্তরীণ নির্বাচন করে ডেমোক্রেটিক পার্টির নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য শাখা। সেই নির্বাচনে কুওমোকে পরাজিত করে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম নিশ্চিত করেন মামদানি। কুওমোও নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান।

তবে পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন কুওমো। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যে কুওমোকে সমর্থন দিয়েছেন। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, মামদানি যদি নির্বাচিত হন-তাহলে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বরাদ্দ বন্ধ করে দেবেন তিনি।

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যটি অভিবাসী অধ্যুষিত। এ কারণে নিউইয়র্ক সবসময়েই ডেমোক্রেটিক পার্টির অন্যতম ঘাঁটি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।

মামদানির স্বেচ্ছাসেবী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাসনুভা খান। সোমবার মামদানির শেষ জনসভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে তাসনুভা বলেন, “আমার দারুণ লাগছে। আমি তিন মাস ধরে জোহরান মামদানির প্রচারাভিযান টিমে আছি। এই যাত্রাটা দারুন ছিল।”

“তবে আমি এবং টিমের অন্যান্য সদস্যরা সংযত থাকার চেষ্টা করছি এবং ভোটারদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করছি। কারণ শেষ পর্যন্ত এটা নির্বাচন এবং এখানে জিততে হলে আপনাকে সর্বোচ্চ ভোট পেতে হবে।”

নিউইয়র্কের বাসিন্দা লিসা গঞ্জালেস বলেছেন, তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থক হলেও ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি তাঁকে দ্বিধাগ্রস্ত করেছে।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাসনুভা খান মামদানের প্রচারাভিযানে তিন মাস অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভোটারদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করাই মূল লক্ষ্য।

সূত্র: আলজাজিরা

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ৭ জন নিহত
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ৭ জন নিহত
যুক্তরাষ্ট্রকে এবার কড়া হুঁশিয়ারি ইরানের
যুক্তরাষ্ট্রকে এবার কড়া হুঁশিয়ারি ইরানের
ইউক্রেনে বিদ্যুৎবিহীন ৬০ হাজার মানুষ
ইউক্রেনে বিদ্যুৎবিহীন ৬০ হাজার মানুষ