‘উৎসবটা একটা প্রতিরোধেরও বিষয়'


নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈষম্যবাদী কিংবা সংকীর্ণতাবাদী এবং যারা উৎসবকে সহ্য করতে পারে না, যারা মানুষের আনন্দ সহ্য করতে পারে না, যারা নারীর সক্রিয়তায় ভয় পায়, এ ধরনের কিছু গোষ্ঠী আবারও খুবই সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
তিনি বলেন, এসব গোষ্ঠীর কারণে চট্টগ্রামে বর্ষবরণ উৎসব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মেলায় ভাঙচুর হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর হয়েছে ও ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিচারপতি শাহাবুদ্দীন পার্কে আয়োজিত নববর্ষের উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এ কথাগুলো বলেন। গুলশান সোসাইটি ও ‘অলিগলি বন্ধু’ এ উৎসবের আয়োজন করে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আমরা যখন উৎসব করি, উৎসবের সঙ্গে সঙ্গে উৎসবটা একটা প্রতিরোধের দিবসে পরিণত হয়, সেটা আমাদের মনে রাখতে হবে। এটা আনন্দের দিবস তো বটেই, আনন্দটা পরিপূর্ণ করার জন্য প্রতিরোধও গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রতিরোধ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়, যখন আমরা বিশ্বের দিকে তাকাই। আজকের দিনে আমরা যে বিশ্বের মধ্যে আছি, এই বিশ্ব একটা রক্তাক্ত বিশ্ব। হাজারো শিশু, নারী, পুরুষ খুন হচ্ছে প্রতিদিন; সেটা আমাদেরই কাছাকাছি একটা দেশে। ইসরায়েলের মতো একটা দেশ আরব বিশ্বের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় দশকের পর দশক বিশেষ করে গত কিছুদিনে হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুকে তারা হত্যা করেছে। শিশু হত্যার এ রকম ভয়ংকর দৃশ্য বাংলাদেশের মানুষকে কতটা আলোড়িত করে, তা আমরা দেখতে পাই ঘরে ঘরে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে।’
পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য প্রভাবশালীরা দায়ী উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এই শাহাবুদ্দীন পার্কে যে গরম দেখছেন, এর বাইরে তা আরও বেশি। এই গরম ও পরিবেশ বিপর্যয় প্রভাবশালীদের কারণে হয়েছে, বিগত সরকারের উন্নয়নের কারণে হয়েছে।’
ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের উৎসবের দিনে প্রতিরোধ, আমাদের টিকে থাকার যে প্রতিরোধ, তার সঙ্গে বিশ্বকে মানবিক করার যে ঐক্য, যে সংহতি, তার সঙ্গে এই প্রতিরোধের জায়গাটাও গুরুত্বপূর্ণ।’ সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি আহ্বান জানান বৈচিত্র্যের মাধ্যমে ঐক্য ও সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য।
আয়োজনে যোগ দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম। বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘পয়লা বৈশাখ আমরা খুব আবেগের সঙ্গে, খুব নিষ্ঠার সঙ্গে উদ্যাপন করি। এই পয়লা বৈশাখ যে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে উদ্যাপন করি, আমি মনে করি, আমরা এই দিন উদ্যাপনকেই আমাদের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারি কি না।’
মাহ্ফুজ আনাম অনুরোধ করে বলেন, ‘আমরা যেন আমাদের পরিবারে আরও বেশি বাংলা বলি; বিশেষ করে আমরা যারা একটু “এলিট সোসাইটি”র আছি, আমরা দেখি, অনেক কম বাংলা চর্চা হয় আমাদের পরিবারে। আমাদের বাচ্চাদের বাংলা ভাষা, বাংলা সংগীত, বাংলা সাহিত্যের যে মাধুর্য, আমরা কিন্তু তাদের তা দেখাচ্ছি না; কেমন জানি ভালো পড়াশোনা করে বিদেশ চলে যাওয়ার একটা প্রবণতা। আমাদের ভেতরে মনে হচ্ছে আসলে বিশ্বদরবারে বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে না যাওয়া পর্যন্ত আমাদের ব্যক্তিত্বের উন্মেষ হচ্ছে না। এটা হয়তো সত্যি, আমি উচ্চশিক্ষা চাই; কিন্তু আমার নিজের আমার আমিত্ববোধ আমি কতটুকু ধরে রেখেছি।’
মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘আপনার পরিচয় কিন্তু আপনার জাতিসত্তা নিয়ে, আপনার সংস্কৃতি নিয়ে, আপনার সাহিত্য নিয়ে। এই যে সামগ্রিকভাবে আমাদের ব্যক্তিত্ব, আমি অনুরোধ করব, এটা যেন আমরা আরও সচেতনভাবে উদ্যাপন করি।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গুলশান সোসাইটির সভাপতি ওমর সাদাত, অলিগলি বন্ধুদের পক্ষে নাভিন মুরশিদ। এ সময় গুলশান সোসাইটি ও অলিগলি বন্ধুরসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ার বিষয়ে যা জানালেন ড. ইউনূস
ডেস্ক রিপোর্ট
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস …

বিএনপিসহ ৩০ দলের সঙ্গে ফের সংলাপ করবে ঐকমত্য কমিশন
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা এবং …

পুলিশের ৪ অতিরিক্ত ডিআইজিকে বদলি
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত চারজন উপমহাপুলিশ পরিদর্শককে (ডিআইজি) বদলি করেছে …
