ভোটের মাঠে কেন শূন্য জোয়ার
আলেম সমাজের কর্মসূচিতে মানুষের ঢল


নিজস্ব প্রতিবেদক
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে বয়ে গেছে জনস্রোত। মিছিলের শহরে পরিণত হয়েছে রাজধানী। এ কর্মসূচির আয়োজকদের অন্যতম ছিলো দেশের প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার ও জনপ্রিয় বক্তারা। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে মানুষের ঢল নেমেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এর আগে একই ধরনের কর্মসূচি রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যানারে আয়োজিত হলেও এরকম সাড়া ফেলেনি। তবে আলেম সমাজের এই জনসমর্থন শুধু অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ, রাজনীতির মাঠ বা ভোটে তেমন কোনো প্রভাব পড়ে না।
কর্মসূচিতে লোকারণ্য, ভোটের রাজনীতিতে শূন্য কেন আলেমরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. স. ম. আলী বলেন, নির্বাচনের মাঠ আর অরাজনৈকি কর্মসূচি এক নয়। নির্বাচনের মাঠে জনসমর্থন দারুণভাবে বিভাজিত থাকে। তবে এ ধরনের কর্মসূচির কিছুটা প্রভাব পড়ে, বড় ধরনের নয়। ভোটের রাজনীতির সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত, তাই সেখানে প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না। এছাড়া ভোটের রাজনীতিতে আমাদের বিভাজন আছে। আলেম সমাজের নেতৃত্বের একটি ব্যর্থতাও আছে।
তিনি বলেন, ভোটের রাজনীতিতে রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক ভিত্তি কাজ করে। নিজস্ব এজেন্ডা, ইশতেহার ও পলিসি থাকে। এই বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আজকের কর্মসূচি হলো-ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা। এটি পুরো বাংলাদেশের সংবেদনশীল জায়গা। এ কর্মসূচির সঙ্গে আমারও আত্মিক সংহতি আছে।
একই ধরণের কর্মসূচিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আহ্বানে কেনো এতো সমাগম হয় না এ নিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের একটি আদর্শ থাকে। একটি সমর্থন থাকে। ওখানে একধরনের বিভাজন আছে। যেমন-বিএনপি কোনো ইস্যুতে আহ্বান করলে শুধু তাদের সমর্থকরাই আসবে, জামায়াতে ইসলামী কোনো আহ্বান করলে তাদের সমর্থকরা আসবে, এটি খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু গাজা ইস্যু সর্বজনীন, এ কারণে এখানে কোনো বিভাজন নেই। তাই বিপুল সমাগম হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের খুবই জনপ্রিয় বক্তা ও ইসলামি স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী ‘মাচ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন। এটিও একটি আবেদন তৈরি করতে পারে। তার অনেক ফলোয়ার আছে। এছাড়া এখানে বিএনপি, জামায়াত চরমোনাই সহ অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা ও ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তাই তাদের সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
আগামী নির্বাচনে এ ধরনের সমাগম বা আলেমদের আহ্বান কোনো প্রভাব ফেলতে পারে কিনা জবাবে অধ্যাপক আলী রেজা বলেন, নির্বাচনের মাঠ যখন তৈরি হবে তখন আজকের জনসমর্থন বিভাজিত হবে। কিছুটা প্রভাব পড়বে, তবে বড় ধরনের নয়।
এ বিষয়ে জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা ও তেজগাঁও মদিনাতুল উলূম কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার বলেন, আলেম সমাজ যখন অরাজনৈতিক ব্যানার থেকে আহ্বান করে তখন সব মহলের লোকজন অংশ গ্রহণ করে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রোগ্রামে তো সবাই অংশ গ্রহণ করবে না, কারণ রাজনৈতিক আন্দোলন সবার এক নয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেক মানুষ আছে যারা সাধারণভাবে ইসলামের পক্ষের লোক। কিন্তু রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক, এটি অনেকে চান না। না চাওয়ার কারণে আলেমরা যখন তাদের প্রতিনিধি সংসদে পাঠানোর জন্য বলেন, তখন সাধারণ মানুষ সেভাবে সমর্থন দেন না। মানুষ যদি বুঝতো আলেমরা রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করলে রাষ্ট্র আগের চেয়ে ভালো চলবে, তাহলে তারা সমর্থন দিতেন।
প্রচলিত রাজনীতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে রাজনীতির ব্যাপারে একধরনের বিরক্ত ও অনীহা তৈরি হয়েছে। কিছু রাজনৈতিক নেতার আচরণে বিভিন্ন সময় মানুষ বিরক্ত হয়েছে। এজন্য অসংখ্য মানুষ রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
ভোটের মাঠে আলেমদের প্রভাব নিয়ে ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার বলেন, অনেক সময় আলেমরা যোগ্য নেতা দিতে পারে না। অনেক যোগ্যতা সম্পন্ন আলেম আছে, তবে তারা মাঠে প্রমাণ দিতে পারছে না। এছাড়া আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে বুর্জোয়া রাজনীতি চলছে। অর্থ দিয়ে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আলেমদের হাতে অর্থ নেই। তাই আলেমরা অন্যদের মতো দল ভারী করতে পারে না। কিছু লোক মনে করে রাজনীতি আলেমদের মানায় না।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ আহ্বান আসলে পাল্টে যেতে পারে ভোটের মাঠের পরিস্থিতি। আজকের মতো এরকম না হলেও অনেকাংশ প্রভাব পড়বে। কিন্তু আলেমরা রাজনৈতিকভাবে এক ফ্লাটফর্মে আসে না। এক ব্যানারে যদি আসে, এক প্রতীকে নির্বাচন করে তাহলে বিশাল প্রভাব পড়বে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
পাচারের টাকা উদ্ধারে ব্রিটিশ আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে: প্রধান উপদেষ্টা
ভিওডি ডেস্ক
যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া দেশের অর্থ উদ্ধার করতে অন্তর্বর্তী …

গণভোটের পরিবর্তে গণবিতর্ক আয়োজন করুন : আব্দুন নূর তুষার
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গণভোটের পরিবর্তে জনতার সামনে গণবিতর্ক আয়োজন করার প্রস্তাব …

বাজেটের শিরোনামই প্রতারণামূলক : আনু মুহাম্মদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেছেন, এবারের বাজেটের সবচেয়ে বড় …
