অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২
যশোরে আ’লীগ নেতা-কর্মীসহ গ্রেপ্তার ১৯

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং 'ফ্যাসিস্টদের' দমনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী শুরু হওয়া বিশেষ অভিযান 'অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ–২'-এর অংশ হিসেবে যশোরের বিভিন্ন স্থানে এক রাতেই ১৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সাবেক ছাত্রনেতা, একজন ইউপি সদস্য, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অপরাধচক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতভর জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যৌথ অভিযানে তাদের আটক করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ডিবির অভিযানে গ্রেপ্তার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা
জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পৃথক অভিযান চালিয়ে মোট ছয়জনকে আটক করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল গাজীকে যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিলের ব্যানার তৈরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আটক করা হয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শরীফ আব্দুল্লাহ আল মারুফ পিয়াল ও পিয়ালের ভাই যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে সার্কিট হাউজ এলাকা থেকে আটক করা। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন বালিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে বোমা হামলার পুরনো মামলায় আলী হোসেন নামে যুবলীগ নেতা আটক হন। পুরাতন কসবার বাসিন্দা জিল্লু ফরাজি। আলী হোসেনের সাথে একই মামলায় আটক। চৌগাছা উপজেলার সলুয়া পূর্বপাড়ার স্থানীয় ইউপি সদস্য উজ্জ্বল হোসেন। যশোরে বিএনপির পার্টি অফিস পোড়ানোর মামলায় তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
কিশোর গ্যাং সদস্য ও থানা পুলিশের গ্রেপ্তার
ডিবির পাশাপাশি বিভিন্ন থানা পুলিশ আরও ১৩ জনকে আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে অন্যতম:
কিশোর গ্যাং চক্রের অন্যতম সদস্য ও পাঁচ মামলার আসামি অমিত হাসান। গত আগস্টে সংঘটিত একটি চুরির মামলায় তাকে স্টেডিয়ামপাড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।
বাঘারপাড়া থানা কর্তৃক নাশকতার মামলায় আটক দোহাকোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা এবাদুল ইসলাম, বাবু কুমার দে ও সাহেব আলী। শার্শা থানা কর্তৃক আটক মৎস্যজীবী লীগ নেতা ওহেদুজ্জামান ওহেদ। অভয়নগর থানা কর্তৃক আটক আমির মোল্লা ও ফিরোজ হোসেন। কেশবপুর থানা কর্তৃক আটক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউর রহমান। মণিরামপুর থানা কর্তৃক আটক ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান ওরফে জামানসহ চারজন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নাশকতার পরিকল্পনা ও ককটেল উদ্ধারের মামলায় তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ যা বলছে
যশোর জেলা পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা, বিস্ফোরক, রাজনৈতিক সহিংসতা এবং সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, নাশকতা দমন এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে 'অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ–২' শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে যশোরে এই জোরদার অভিযান চলছে।
ভিওডি বাংলা/ জুবায়ের হোসেন/ আ







