• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

প্রধান বিচারপতি

বিভিন্ন সময়ে অপশাসনের সহযোগী হয়েছে বিচার বিভাগ

আদালত প্রতিবেদক    ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৫ পি.এম.
সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সংগৃহীত ছবি

বিচার বিভাগ বিভিন্ন সময়ে অসাংবিধানিক ক্ষমতা, অপশাসন ও রাষ্ট্রীয় কপট-কৌশলের অঘোষিত সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে জেলা আদালতগুলোতে কর্মরত উচ্চপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী অভিভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, অনেক বিচারক দুঃশাসনের বলয়কে আড়াল করেছেন এবং অন্যায় ও অবিচারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। বিচারকদের এই নৈতিক বিচ্যুতি জনসাধারণকে শেষ পর্যন্ত জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী প্রতিরোধে নামতে বাধ্য করার অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, সুসজ্জিত আদালত কেবল বিচারকদের ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয় নয়, এটি বিচারপ্রার্থীদের মনে বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা সৃষ্টি করে। বিচারকদের আবাসন সংকট নিরসন, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত ও নৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি, নতুবা বিচারবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যমান সুযোগ ব্যবহারে অনেক বিচারকের অনীহা রয়েছে। বিচারকদের জ্ঞানার্জন ও পাঠাভ্যাসকে জীবনের দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

বিচারকদের সমাজ, সংস্কৃতি, ইতিহাস, অর্থনীতি, রাষ্ট্রচিন্তা ও আধুনিক প্রযুক্তি—বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পরিবেশ বিজ্ঞান ও সাইবার নিরাপত্তায় জ্ঞান অর্জনের ওপর জোর দেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি সতর্ক করে বলেন, বিচারিক সেবাকে যদি নাগরিক অধিকার না ভেবে প্রশাসনিক দয়া হিসেবে দেখা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে বিচার ব্যবস্থা প্রান্তিক ও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়তে পারে। অসৎ পন্থা ও হয়রানি বন্ধ না হলে বিচার বিভাগের ওপর জনগণের আস্থা নষ্ট হবে।

পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়কে কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের দায়িত্ব পরবর্তী প্রধান বিচারপতির ওপর বর্তাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করাই এর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

প্রধান বিচারপতি বিচারকদের প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ, ই-কজলিস্ট চালু, ভার্চুয়াল শুনানি, পেপার-ফ্রি আদালত, ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা এবং বিচারক নিয়োগ পরীক্ষার সিলেবাস সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেন।

অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বার কাউন্সিল ও সুপ্রিম কোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ভিওডি বাংলা/ আরিফ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের একটি সুপারিশও বাস্তবায়ন করেনি সরকার
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের একটি সুপারিশও বাস্তবায়ন করেনি সরকার
সুদানে প্রাণ দিলেন ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী
সেনাবাহিনীর নিন্দা সুদানে প্রাণ দিলেন ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী
মস্তিষ্কে অক্সিজেন স্বল্পতা, হাদির অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক
মস্তিষ্কে অক্সিজেন স্বল্পতা, হাদির অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক