• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

গগণবাড়ীয়া

অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাদের জ্যান্ত মাটি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়

রাজশাহী ব্যুরো    ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৩ পি.এম.
দূর্গাপুর স্মৃতিসৌধ। ছবি: সংগৃহীত

১৯৭১ সালের ২২ অক্টোবর রাতে সে সময়ের পাকিস্তানী সেনাদের সহযোগিতায় রাজাকার, আল-বদর, আল-শাম্স ও শান্তি কমিটির সদস্যরা রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষদের ধরে এনে গগণবাড়ীয়া গ্রামে বেঁধে রাখে। পরের দিন শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গগণবাড়ীয়া গ্রামের একটি মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা ও অসংখ্য জীবন্ত মানুষকে মাটি চাপা দেয়া হয়।

এ ঘটনার পর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং গণহত্যার স্মৃতি ধরে রাখতে গণকবরের পাশে নির্মাণ করা বধ্যভূমি। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তারা ২০১১ সালের ৬ মার্চ গগণবাড়ীয়া গ্রামে নারকীয় এ হত্যাযজ্ঞ ও জীবন্ত মানুষ মাটি চাপা দেয়ার গণকবর ও বধ্যভূমি পরিদর্শন করলেও এখন পর্যন্ত অধরা থেকে গেছে বিচার কার্যক্রম।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এ দিসব উপলক্ষে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধার পক্ষ থেকে গগণবাড়ীয়ায় ঐতিহাসিক গণকবর ও বধ্যভূমিতে গণহত্যায় শহিদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার গগণবাড়িয়া গ্রামে গণহত্যার ঘটনায় নির্মিত শহিদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, ঐতিহাসিক গণকবরের পাশে নির্মিত বধ্যভূমিটি ধুয়ে মুছে পরিস্কার হচ্ছে। দাওকান্দি সরকারি কলেজের প্রভাষক আয়নাল হক বলেন, স্থানীয় মুক্তিয়োদ্ধাদের বর্ণনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে গগণবাড়িয়া গ্রামের ১শ ৮৫ জন মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে গুলি করে এবং জীবন্ত মাটির নিচে চাপা দিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে সে সময়ের রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস্ ও শান্তি কমিটির লোকজন।

যুগিশো গ্রামের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা যদুনাথ সরকারের ভাতিজা ও প্রাইম ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) ড. প্রফুল্ল চঁন্দ্র সরকার জানান, স্বাধীনতার পরেও গগণবাড়িয়া গ্রামে গণহত্যার স্থানটি সরকারি পৃষ্ঠযোষকতার অভাবে উন্মুক্ত হযে পড়েছিল। এরপর বিভিন্ন জায়গায় ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হলে শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে ওই স্থানটিতে ২০০২ সালে গণকবরের পাশে বধ্যভূমি নির্মাণ করা হয়।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আনিছুর রহমান বলেন, গগণবাড়ীয়া ঐতিহাসিক স্থান। মহান মুক্তিযুদ্ধে সেখানে নারকীয় গণহত্যা চালানো হয়। দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশতুরা আমিনা বলেন, শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সকাল ১০টায় গগণবাড়ীয়ায় গণকবর ও বধ্যভূমিতে পুষ্প্যমাল্য অর্পণ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

ভিওডি বাংলা/মোঃ রমজান আলী/এম 

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কৃষি জমিতে জামায়াত নেতার পুকুর খনন, পাঁচ শ্রমিকের কারাদণ্ড
বাগমারায় কৃষি জমিতে জামায়াত নেতার পুকুর খনন, পাঁচ শ্রমিকের কারাদণ্ড
সাতক্ষীরা সুন্দরবনের নীরব গডফাদার শিশু মণ্ডল
সাতক্ষীরা সুন্দরবনের নীরব গডফাদার শিশু মণ্ডল
সৈনিক শামীম রেজার বাড়িতে শোকের মাতম
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সৈনিক শামীম রেজার বাড়িতে শোকের মাতম