• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

জলবায়ু তহবিলে ২ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি:

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক    ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১১ এ.এম.
ড. ইফতেখারুজ্জামান-ছবি সংগৃহীত

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকারি তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। এসব দুর্নীতির সঙ্গে সরকারি দলের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, “জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫০ শতাংশের বেশি ক্ষতির সঙ্গে রাজনৈতিক যোগসাজশ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বোর্ড ও প্রভাবশালী মহলের স্বার্থের দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তাদের দুর্নীতি মিলিয়ে এই খাতটি এখন রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত দুর্নীতির বিশেষ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।”

তিনি জানান, এই তহবিল থেকে ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ ও অপচয় হয়েছে।

বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান এবং আউটরিচ বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মো. মাহ্ফুজুল হক ও রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মো. সহিদুল ইসলাম।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত প্রকল্পে বরাদ্দের প্রয়োজন ছিল ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার। অথচ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পাওয়া গেছে মাত্র ১.২ বিলিয়ন ডলার। সেই সামান্য অর্থও স্বচ্ছভাবে ব্যয় হয়নি, বরং লোপাট হয়েছে।”

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিসিসিটি থেকে ৪৫৮.৫ মিলিয়ন ডলার অনুমোদিত হলেও, তার মধ্যে প্রায় ২৪৮.৪ মিলিয়ন ডলার (২ হাজার ১১০ কোটি টাকা) দুর্নীতিতে নষ্ট হয়েছে- যা মোট বরাদ্দের ৫৪ শতাংশ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকল্প অনুমোদনে রাজনৈতিক বিবেচনা, স্বজনপ্রীতি ও যোগসাজশ ছিল স্পষ্ট। তহবিল ব্যবস্থাপক সংস্থা হিসেবে বিসিসিটির কর্মকর্তারা অনিয়ম ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেননি।

এছাড়া ২০১৫–২৩ সময়কালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে বছরে গড়ে মাত্র ৮৬.২ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ০.৭ শতাংশ। সমাপ্ত প্রকল্পের ৮৫ শতাংশেরও বেশি এখনো যথাযথ মূল্যায়নের আওতায় আসেনি।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। অথচ জনগণের করের টাকায় গঠিত তহবিলেও চলছে লুটপাট ও স্বজনপ্রীতি। সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হলে এই দুর্নীতি রোধ সম্ভব নয়।”

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিদ্যুৎ বন্ধে আদানি পাওয়ারের হুমকি
বিদ্যুৎ বন্ধে আদানি পাওয়ারের হুমকি
দক্ষিণ এশিয় দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
দক্ষিণ এশিয় দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
সড়ক অবরোধ করে বসে পড়লেন নন-এমপিও শিক্ষকরা
সড়ক অবরোধ করে বসে পড়লেন নন-এমপিও শিক্ষকরা