দৌলতপুরে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে শত শত মানুষের মানববন্ধন

 
                                            
                                    
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার ভাঙ্গন প্রতিরোধ বাধ নির্মানসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে নদীপাড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে ।
শনিবার (০৪ অক্টোবর) বিকালে কোলদিয়াড় এলাকায় ভাঙ্গনের ক্ষতিগ্রস্ত শত শত নারী পুরুষ এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে স্থানীয়রা দাবি করেন, গত কয়েক বছর ধরে পদ্মার করাল গ্রাসে নিঃস্ব শত শত পরিবার, মরিচা ইউনিয়নের কোলদিয়াড়, ভূরকা, হাটখোলাপাড়া থেকে শুরু করে ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে এ বছরও তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী বারবার সরকারের কাছে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানালেও ভূরকা পাড়ার নিচে এক কিলোমিটার এলাকায় জিও ব্যাগ দিয়ে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে নদী কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা হলেও প্রায় দুই কিলোমিটার এরিয়া এখনো নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।
এসব এলাকায় প্রতিদিন ভাঙ্গনে ফসলের জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সরকার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। মানববন্ধনের মাধ্যমে এলাকাবাসী ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় অবিলম্বে জিও ব্যাগ অথবা স্থায়ী ব্লকের বাঁধ নির্মাণের দাবী জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আতার হক ফরাজী, হাবিবুর রহমান মেম্বার, হামিদুল ইসলাম, এজাজ আহমেদ মাস্টার, সুমন আলী প্রমূখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, এখনই ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব না হলে ফসলের জমি হারানোর পাশাপাশি মরিচা ইউনিয়নের কোলদিয়াড় থেকে ভেড়ারামা উপজেলার জুনিয়াদহ পর্যন্ত বিস্তির্ণ এলাকা বিলীন হয়ে যাবে। নদী থেকে মাত্র ৫শ ফুট দুরে রয়েছে ভারত থেকে আসা ৫০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন। যে কোন সময় বিদ্যুতের খুঁটিসহ লাইন নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে।
একই অবস্থা রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ, নদী ভরাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভুরকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় কান্দিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাটখোলাপাড়া জামে মসজিদ, জুনিয়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং জুনিয়াদহ বাজার। এছাড়াও ভুরকা, কোলদিয়াড়, জুনিয়াদহ, কোলদিয়াড় পূর্বপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের মাঝে ঘরবাড়ি হারানোর আতংক বিরাজ করছে।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্থানীয় বাসিন্দা নসিরত আলী বলেন, ভুরকাপাড়া এলাকায় নদীর কিছু অংশে জিও ব্যাগ দিয়ে বাধ হয়েছে। যা নদী ভাঙন রোধে এবছর কার্যকর ভুমিকা রেখেছে। ভাঙনকবলিত বাকী এলাকাগুলোতেও ওই ধরনের জিও ব্যাগ বা স্থায়ী বাধ (সিমেন্টের ব্লক) দেয়ার দাবী এলাকাবাসীর।
ভূরকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুমন আলী বলেন, ভাঙনে শত শত কৃষক জমি হারিয়ে এখন নিঃস্ব। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি। নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে এলাকাবাসীকে রক্ষার দাবী সরকারের কাছে।
মানববন্ধনের আয়োজক আতর ফরাজী বলেন, মানববন্ধনের পরেও যদি সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন হলে আগামী দিনে আরো বড় কর্মসূচি পালন করা হবে।প্রয়োজনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুষ্টিয়া অফিস সহ ঢাকা অফিস ঘেরাও করা হবে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দীকী বলেন, নদী ভাঙন রোধ করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ভাঙন রোধে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
 
                             
                         
                 
                





