কৃষকের বেঁচে থাকার লড়াই :আতাউর রহমান


কৃষকদের স্বার্থে ও সার ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে সরকার বর্তমানের 'সার ব্যবস্থাপনা আইন ও বিধিমালা-২০০৯' এর পরিবর্তে 'সার ব্যবস্থাপনা আইন ও সার ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২৫' জারি করতে যাচ্ছে। সরকারের এই অগ্রগণ্য উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও, প্রস্তাবিত নীতিমালায় একটি গোষ্ঠীর প্রতি 'চরম বৈষম্যমূলক' আচারণের অভিযোগ উঠেছে।
সার দেশের মোট ১০,৭৫৩ জন সরকারি সার ডিলারের মধ্যে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) এর নিয়োগকৃত ডিলার ৫,৬৬৯ জন এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর নিয়োগকৃত ডিলার ৫,০৮৪ জন।
আঞ্চলিক পরিচালক, বি.এ.ডি.সি সার ও বীজ ডিলার এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ আতাউর রহমান (নেত্রকোনা) জানান, প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালায় বিসিআইসির সকল ডিলার তাদের ডিলারশিপ নবায়নের সুযোগ পেলেও, বিএডিসির এই ৫,০৮৪ জন ডিলারের জন্য কোনো নবায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
একই সরকারি সেবার দুটি অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানভেদে এমন সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট ডিলারদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনাকে তাদের জীবিকা ও পরিবারের ভবিষ্যতের প্রতি 'চরম বৈষম্য' হিসেবে আখ্যায়িত করছেন বিএডিসি ডিলাররা।
বিএডিসি ডিলারদের পক্ষ থেকে মাননীয় কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নিকট একটি আকুল আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনে, বৈষম্য দূর করে বিএডিসির অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত সকল ডিলারের ডিলারশিপ নবায়নের সুযোগসহ 'সার ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২৫' চূড়ান্ত করার জোর দাবি জানানো হয়েছে।
বিএডিসি ডিলারদের প্রধান দাবিসমূহ:
১. বিভাজন দূরীকরণ: প্রস্তাবিত নীতিমালার ধারা ১.২-এ সকল ডিলারকে শুধুমাত্র "সরকার নিযুক্ত/সরকারি নিবন্ধনকৃত/সরকারি তালিকাভুক্ত সার ডিলার" হিসেবে গণ্য করতে হবে। বিসিআইসি ও বিএডিসি ডিলার নামক কোনো বিভাজন রাখা যাবে না। সকল ডিলারকে সমানভাবে ইউরিয়া ও নন-ইউরিয়া সার বরাদ্দ পেতে হবে।
২. বৈষম্যমূলক ধারা বাতিল: বিভাজন দূর করা হলে, ধারা ৫.৪-এর 'ঘ' উপ-ধারাটির কোনো প্রয়োজন থাকবে না,
৩. নবায়ন প্রক্রিয়ায় সমতা: প্রস্তাবিত নীতিমালার ধারা ৭.৩ শুধুমাত্র বিসিআইসি ডিলারদের নবায়নের কথা বলেছে। এখানে 'বিএডিসি সার ডিলার' শব্দটি সংযোজনের মাধ্যমে বিএডিসির সকল ডিলারকেও একইভাবে নবায়নের সুযোগ দিতে হবে।
বিএডিসি ডিলারদের পক্ষ থেকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, যদি তাদের এই যৌক্তিক দাবি না শোনা হয়, তাহলে এটি সরকারেরই অন্য একটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিয়োগকৃত ৫,০৮৪ জন ডিলার ও তাদের পরিবারের প্রতি চরম বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে ইতিহাসে স্মৃতি হবে। তারা আশা করেন, একটি ন্যায়পরায়ণ ও বৈষম্যহীন সরকার তাদের সমস্যার দ্রুত ও যৌক্তিক সমাধান করবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ