ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আজ থেকে কার্যকর


ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর আজ বুধবার (২৭ আগস্ট ) থেকে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষজ্ঞরা একে কার্যত বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার সমতুল্য হিসেবে দেখছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শুল্ক আরোপে ভারতের গার্মেন্টসশিল্পের কেন্দ্রস্থল তিরুপুরে অচলাবস্থা নেমে এসেছে। সেখানকার কারখানাগুলোয় উৎপাদন কমে যাওয়ায় শ্রমিকদের চোখেমুখে দুশ্চিন্তা স্পষ্ট।
তিরুপুরের একটি গার্মেন্টস ইউনিটের মালিক এন কৃষ্ণমূর্তি জানান, ‘সেপ্টেম্বরের পর হয়তো কোনো কাজই থাকবে না। ক্রিসমাস মৌসুম ঘিরে বছরের অর্ধেক অর্ডার আসে এই সময়ে। কিন্তু শুল্ক বৃদ্ধির কারণে সব গ্রাহক অর্ডার স্থগিত করেছে। ব্যবসা বড় করার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে, নতুন নিয়োগ দেওয়া ২৫০ কর্মীও বসে আছে।’
শুধু তিরুপুর থেকেই বছরে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। এসব পোশাক সরবরাহ করা হয় ওয়ালমার্ট, টার্গেট, গ্যাপ ও জারার মতো বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ডে।
রাফট গার্মেন্টসের মালিক শিবা সুভ্রামানিয়াম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ভারত একটি শার্ট বিক্রি করে ১০ ডলারে। অথচ চীন বিক্রি করে ১৪.২০ ডলার, বাংলাদেশ ১৩.২০ ডলার আর ভিয়েতনাম ১২ ডলারে। শুল্ক কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হলেও প্রতিযোগিতায় ভারত পিছিয়েই থাকবে।’
শুল্কের প্রভাব কমাতে ভারত সরকার কাঁচামালের আমদানি শুল্ক হ্রাস করেছে এবং বিকল্প বাজারে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এসব উদ্যোগ খুব কার্যকর হবে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে শুধু পোশাক নয়, ভারত ১০ বিলিয়ন ডলারের রত্ন ও গয়না এবং হিমায়িত চিংড়িও রপ্তানি করে। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫০ লাখ মানুষের জীবিকা এখন ঝুঁকির মুখে। ইতোমধ্যে অর্ডার স্থগিত হওয়ায় কারখানাগুলোতে মাসে মাত্র ১৫ দিন কাজ চলছে, হাজারো কর্মী চাকরি হারিয়েছেন।
এশিয়া গ্রুপ অ্যাডভাইজরি ফার্মের গোপাল নাদ্দুর বলেন, ‘ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো বাণিজ্যচুক্তি হবে কি না, তা এখন ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর নির্ভর করছে। তবে ভারতের নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়িক নেতাদেরও এখন আত্মনির্ভরশীল হতে হবে এবং অন্য বাজারের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।’
ভিওডি বাংলা/জা