বঙ্গোপসাগর থেকে জীবিত ফিরলেন বাঁশখালীর ১৫ জেলে


চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাংলাবাজার জেটিঘাট থেকে মাছ ধরতে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে ঝড়ে ট্রলার ডুবে যায়। পটুয়াখালীর কুয়াকাটা উপকূল-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলার ডুবির ঘটনায় ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৫ জন।
সোমবার (১৭ আগস্ট) ভোররাতে শেষ বয়া থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে ট্রলার ডুবির এ ঘটনা ঘটে।
ডুবে যাওয়া ট্রলাররে নাম এফবি মায়ের দোয়া। সাগর প্রবল উত্তাল থাকায় ট্রলারটি ডুবে যায় বলে উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানিয়েছেন।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে প্রথমে একটি মাছ ধরার ডিঙ্গি ট্রলার ভাসমান অবস্থায় ১৩ জন জেলেকে উদ্ধার করে। পরে অপর একটি ট্রলার থেকে আরও একজন এবং একই দিন সকালে পায়রা বন্দরের ২০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্র থেকে এফবি সাজেদা নামের আরেকটি ট্রলার থেকে আরও একজন জেলেকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
উদ্ধারকৃত জেলেরা হলেন-তৌহিদ ইসলাম (১৮), মো. মোরশেদ (২০), মো. হেলাল (২২), সাজ্জাদ (২২), শেখ অপু (২২), মো. নুরুল হাসান (২৫), আলী (২৬), আনসার (২৭), ফয়সাল (২৮), আনিস (২৮), বাদশা মাঝি (৩২), আবুল কাশেম (৪০), কবির (৪৫), নুরুল আলম (৬০) ও সোহাগ (২০)।
নিখোঁজ রয়েছেন-আবু তাহের (৫৫), কামাল (৩৫), রিয়াজ উদ্দিন (২২), তমিজ (১৮) ও শাহাবুদ্দিন (৪৫)। গুরুতর আহত ও নিখোঁজ সব জেলেই চট্টগ্রামের বাঁশখালি এলাকার বাসিন্দা।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানান, গত শনিবার চট্টগ্রামের বাঁশখালি থেকে তারা ট্রলারটি নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে বের হন। ডুবে যাওয়ার পর প্লাস্টিকের ড্রাম আঁকড়ে ধরে তারা টানা দুই দিন ভেসে ছিলেন। পরে অন্য ট্রলারগুলো তাদের উদ্ধার করে।
উদ্ধারকৃত মোরশেদ জানান, “আমরা ২০ জন একসাথে ছিলাম। হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ায় ট্রলারটি ডুবে যায়। এরপর আর কিছু মনে নেই।” কথা বলতে বলতেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
উদ্ধারকারী জেলে সিরাজ বলেন, “তাকে যখন আমরা পাই তখন তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় ছিলেন। গরম কাপড়ে ঢেকে রেখে তেল মালিশ করি, এরপর ধীরে ধীরে সুস্থ হন। নাম-ঠিকানা বলার পর আবার অজ্ঞান হয়ে পড়েন।”
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, উদ্ধার হওয়া জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের শরীরে পানিশূন্যতা ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিলেও সবাই আশঙ্কামুক্ত।
কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিকাশ মন্ডল জানান, উদ্ধার হওয়া জেলেদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্টগার্ডকে অবহিত করা হয়েছে।
এদিকে নিখোঁজ ৫ জেলেকে উদ্ধারে কোস্টগার্ড কাজ করছে বলে জানিয়েছেন এফবি আল্লাহর দান ফিশিং বোটের মালিক জমির কোম্পানী। নিখোঁজরা বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের কাহারঘোনা এলাকার বাসিন্দা।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ