প্রশাসনের নীরবতায় বাড়ছে ভুক্তভোগী
সিরাজগঞ্জে ভুয়া কবিরাজের দৌরাত্ম্য


সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের বড় পাকুরিয়া (ময়নাকুল) গ্রামে কবিরাজি চিকিৎসার নামে এক নারীর প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড বছরের পর বছর ধরে চললেও প্রশাসনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দা রাশিদা খাতুন নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। তিনি প্রায় দশ বছর ধরে নিজ বাড়িতে কবিরাজি চিকিৎসার নামে পানি পড়া, ঝাড়ফুঁক ও তাবিজ-কবজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
চটকদার প্রচারে ফাঁদে পড়ছেন অসহায় মানুষ। নিঃসন্তান নারীদের সন্তান হওয়ার গ্যারান্টি, গোপন রোগের চিকিৎসা, দাম্পত্য সমস্যা, প্রেমে ব্যর্থতা, চাকরি না পাওয়া সহ বিভিন্ন ‘জটিল সমস্যা’ থেকে মুক্তি দানের কথা বলে সাধারণ ও সরলপ্রাণ মানুষকে নিজের কাছে টেনে নিচ্ছেন তিনি। অথচ তার চিকিৎসার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলেই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়: রাশিদা খাতুনের বাড়িতে সিরাজগঞ্জ ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে নিয়মিত লোকজন ভিড় করছেন। তার নিজের ভাইও তাকে এই কার্যক্রমে সহায়তা করে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে তার চিকিৎসায় উপকার পাওয়া তো দূরের কথা, অধিকাংশ রোগীই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফিরে গেছেন।
একাধিক ভুক্তভোগী জানান,“আমরা শুনেছিলাম রাশিদার পানি পড়ায় কাজ হয়। কিন্তু বাস্তবে কোনো ফল পাইনি। শুধু টাকা নষ্ট হয়েছে।”
কবিরাজ রাশিদার দাবি: মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে রাশিদা খাতুন বলেন, “মানুষ আমার ওপর বিশ্বাস করে আসে। পানি পড়া দিলে আল্লাহর রহমতে কাজ হয়। আমি রোগী প্রতি টাকা নিই, সেটা তো অন্যায় না।”
স্থানীয়রা বলছেন, একাধিকবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো তদন্ত কিংবা অভিযান চালানো হয়নি। এতে করে প্রতারক আরও সাহস পাচ্ছেন, এবং নতুন করে মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। অনেকেই মনে করছেন, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও দায়সারা মনোভাব এ ধরনের প্রতারণা চলমান রাখার অন্যতম কারণ।
জনদাবি: ভুক্তভোগী ও সচেতন এলাকাবাসীরা দ্রুত এই ভুয়া কবিরাজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া, তার ‘চিকিৎসালয়’ বন্ধ করা এবং কুসংস্কার প্রতিরোধে প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কামারখন্দ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ বলেন, অতি দূত ফোর্স পাঠিয়ে দিয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ