• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রকল্পে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

ইবি প্রতিনিধি    ১১ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪৪ এ.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক সহায়িত ৪০০০ কোটি টাকার হায়ার এডুকেশন অ্যাকসেলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রকল্পে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষকবৃন্দ।

রবিবার (১০ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মোহা. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মাওলা, অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান, অধ্যাপক ড. এ.টি.এম. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক ড. মো. জাহিদুল ইসলাম ও ড. মুহা. শরিফুল ইসলাম।  

শিক্ষকদের অভিযোগ, হিট প্রকল্পে  ভালো এবং স্বীকৃত গবেষকদের বাদ দিয়ে লো প্রোফাইল ও কম সাইটেশনধারী শিক্ষকদের প্রজেক্ট নির্বাচিত করা হয়েছে। এক ফিল্ডের শিক্ষক দিয়ে অন্য ফিল্ডের প্রজেক্ট মূল্যায়ন করা হয়েছে। এমনকি প্রজেক্ট নির্বাচনে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের সমর্থক শিক্ষকরা বিকল্প পদ্ধতিতে প্রজেক্ট মূল্যায়নের রিভিউয়ার হওয়া এবং প্রজেক্ট পাওয়ার ব্যাবস্থা করেছিল  বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।

এসময় বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. মিজানুর রহমান বলেন, প্রায় ৪০ শতাংশ লো প্রোফাইলধারী (টোটাল সাইটেশন ১০০ এর কম) গবেষকদের প্রজেক্ট নির্বাচন করা হয়েছে। এছাড়া ৫০০ সাইটেশনের কম আছে এমন ৪০ শতাংশ গবেষকদের প্রজেক্ট নির্বাচন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত গবেষকদেরকে বাদ দিয়ে তুলনামূলক কম গবেষণা ও সাইটেশন রয়েছে এমন গবেষক নির্বাচন করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

বাযোটেকনলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, অনেক লো-প্রোফাইল আবেদনকারী, যাদের পিএইচডি নেই বা আন্তর্জাতিক মানের প্রকাশনা নেই, তারাই বরং অনুদান পেয়েছেন। অথচ যারা বাদ পড়েছেন, তাদের প্রোফাইল ছিল অনেক সমৃদ্ধ।

শিক্ষকরা আরও বলেন, রিভিউ কমিটিতে যে বিষয়ে যারা এক্সপার্ট তাদেরকে রাখা হয়নি। এমনকি পিএইচডি করেননি এমন ব্যক্তিকেও রিভিউ কমিটিতে রাখা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় গবেষণার জন্য অর্থায়নে বিচারহীনতা, স্বচ্ছতার অভাব এবং রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। ফলে প্রকৃত গবেষকরা বঞ্চিত হয়েছেন, যা গবেষণা ক্ষেত্রে এক ভয়াবহ সংকট বলেও অভিযোগ করেন তারা।

হিট প্রকল্পে শিক্ষকদের আনিত অভিযোগসমূহ হলো- রিভিউ প্রক্রিয়ার গুণগত মান ও স্বার্থের দ্ব›দ্ব রয়েছে, ইউজিসি থেকে যে ব্লাইন্ড পিয়ার রিভিউ এর কথা বলা হয়েছে এই দাবি মিথ্যা, প্রেজেন্টেশনে নিয়মের পরিপন্থি মূল্যায়ন, অঘোষিত বিভাগভিত্তিক বৈষম্য, রিসার্চ কোয়ালিটির নামে বিভ্রান্তি, শিল্প সহযোগী ছাড়াই ইন্ডাস্ট্রি প্রজেক্ট অনুমোদন, বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক বা বিভাগ ভিত্তিক প্রকল্প সংখ্ঙা ও অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্য, নৈতিক ও আদর্শগত সংকট, প্রকল্প জমাদানের সময় বর্ধিত করে অনৈতিক সুযোগ প্রদান, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও তার প্রভাব, চুড়ান্ত বাছাই বোর্ডে তাচ্ছিল্যমূলক ব্যাবহার এবং  HEAT রিভিউ পদ্ধতির মাধ্যমে এবং ব্যাবস্থাপনার নামে অর্থের অপচয়।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকদের তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়- ১. অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যমান সব প্রজেক্ট বাতিল করতে হবে। ২. ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক আসাদুজ্জামান এবং পরামর্শক অধ্যাপক মোজাহার আলীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে নতুন করে রিভিউ করে প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে।

জানা যায়, হিট প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) নিয়োগ পরীক্ষায় ৩২ প্রার্থীর মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোলায়মান। গত বছরের ১৪ মার্চ ইউজিসি তাকে নিয়োগ দেয়। কিন্তু ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মৌখিক নির্দেশে মাত্র এক দিনের মাথায় তার নিয়োগ বাতিল করে মন্ত্রণালয়।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
খামারিদের জন্য ‘ডিজিটাল খামারি’ অ্যাপ চালু
খামারিদের জন্য ‘ডিজিটাল খামারি’ অ্যাপ চালু
বাকৃবিতে নবাগত শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত
বাকৃবিতে নবাগত শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত
১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচন
১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচন