• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

১৫ বছর পর মহানগর বিএনপির সম্মেলন, আসছে তরুণ নেতৃত্ব

রাজশাহী ব্যুরো    ৯ আগস্ট ২০২৫, ০১:২৭ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

দীর্ঘদিন ধরে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলা রাজশাহী মহানগর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী রোববার (১০ আগস্ট)। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রাজশাহী বিএনপির দুর্জয় ঘাঁটি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। দীর্ঘদিনের চাওয়া এই সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করায় উৎফুল্ল স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সম্মেলন ঘিরে এরই মধ্যে বাড়তি চাঙা ভাব তৈরি হয়েছে স্থানীয় রাজনীতিতে। তবে এবার নেতাকর্মীরা চাচ্ছেন তরুণ নেতৃত্ব উঠে আসুক মহানগর কমিটিতে।

মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে পুরনোদের আধিপত্য কমতে যাচ্ছে। গতানুগতিক ধারার নেতৃত্ব থেকে এবার বের হতে চায় দলটি। কিন্তু ১৫ বছর আওয়ামী সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে ঘরবাড়ি ছাড়া ছিলেন দলটির নেতাকর্মীরা। পুলিশি হামলা ও হয়রানিতে দুর্বল হয়ে পড়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম। এবার মহানগর বিএনপির সম্মেলনের মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে স্বরূপে ফিরতে যাচ্ছে দলটি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মহানগর কমিটিকে ঢেলে সাজাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সরাসরি নজর রাখছেন। দলটি শীর্ষ নেতারা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে এবারের সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিনের একঘেয়ে নেতৃত্বে থাকা সিনিয়রদের বিশ্রামে পাঠানো এবং নতুন প্রাণশক্তি জোগাতে তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা হতে পারে। এর ফলে মহানগর বিএনপিতে নতুন মেরুকরণও ঘটতে পারে।

স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, দীর্ঘদিন রাজশাহী বিএনপিতে প্রভাব বিস্তার করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবির হোসেন, মিজানুর রহমান মিনু ও অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফার অনুসারীরা। এদের মধ্যে কবির হোসেন ও নাদিম মোস্তফা প্রয়াত হওয়ার পর রাজশাহীর নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। অন্যরা মিজানুর রহমান মিনুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ অবস্থায় আগামী ১০ আগস্ট রাজশাহী মহানগর বিএনপির অনুষ্ঠেয় সম্মেলন ঘিরে নতুন হিসাব-নিকাশ করা হচ্ছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর এরশাদ আলী ইশাকে আহ্বায়ক ও মামুন অর রশিদ মামুনকে সদস্য সচিব করে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০১৬ সালে ২৭ ডিসেম্বর কেন্দ্র থেকে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সভাপতি ও অ্যাড. শফিকুল হক মিলনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা জয়। তার আগে দীর্ঘদিন ধরে মিজানুর রহমান মিনু সভাপতি ও শফিকুল হক মিলন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং শফিকুল হক মিলন কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক।
জানা গেছে, আসন্ন সম্মেলন ঘিরে রাজশাহী মহানগর বিএনপিতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ও সাংগঠনিক তৎপরতা। দীর্ঘদিন পর মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জানান, এখন পর্যন্ত রাসিকের সাবেক মেয়র ও নগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ মামুন সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন। অথবা মামুন অর রশিদ মামুন সভাপতি ও যুবদলের রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন। তবে মামুন অর রশিদ ও মাহফুজুর রহমান রিটন দলের নেতৃত্বে আসছেন এমন এমন আলোচনা সর্বত্র। তারা তৃণমুল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।

সূত্র জানায়, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সম্মেলন সংক্রান্ত সার্বিক প্রস্তুতির জন্য দলের দুই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন, আমিরুল ইসলাম খান আলীম ও ওবায়দুর রহমান চন্দন। ইতোমধ্যে এই দুই নেতাকে এ বিষয়ে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ মামুন বলেন, তৃণমুলের নেতাকর্মীরা যদি চায় তাহলে আমি নেতৃত্বে আসবো। রাজশাহী বিএনপির ঘাঁটি। এই ঘাঁটি আবারও পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে দেশনেতা তারেক রহমান যাকে নেতৃত্বে দেবেন আমরা মেনে নেব।

মাহফুজুর রহমান রিটন বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাকে যোগ্য মনে করবেন, তিনিই দায়িত্ব পাবেন। তবে অবশ্যই সৎ, যোগ্য ও দলের জন্য নিবেদিত- এমন নেতৃত্ব আসবে বলে আশা করি।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. এরশাদ আলী ঈশা জানান, দলকে আরও সংগঠিত ও শক্তিশালী করতেই এই সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিএনপি পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে এটি হবে একটি ঐতিহাসিক সম্মেলন। যখন রেগুলার কমিটি হবে তখন দল চাঙা হবে। গণতান্ত্রিকভাবে যাকে নির্বাচিত করবে সে নির্বাচিত হয়ে আসবে। এবার প্রায় ৭০০ কাউন্সিলর থাকছেন। আমরা আশা করছি, এ সম্মেলনের পর দলের সব বিভক্তি কেটে যাবে।

রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহীন শওকত বলেন, যারা বিগত ১৫ বছর ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে কাজ করেছেন, মামলা খেয়েছেন, জেলে গেছেন, রাজপথে ছিলেন এবং সৎ ও যোগ্য; তারাই নেতৃত্বে আসবেন।

আগামী ১০ আগস্টের সম্মেলন সামনে রেখে এরই মধ্যে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলন সফল করতে মহানগরের প্রতিটি ইউনিটে কর্মিসভা, মতবিনিময় ও প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সম্মেলনে এবার প্রায় ৭০০ কাউন্সিলর। তবে সরাসরি ভোটে নেতা নির্বাচন করা হবে নাকি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি কেউই।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

 

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
করিমগঞ্জে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩২
করিমগঞ্জে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩২
ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি বাঁশখালী পৌরসভার কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি বাঁশখালী পৌরসভার কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
সিরাজগঞ্জে ভুয়া কবিরাজের দৌরাত্ম্য
সিরাজগঞ্জে ভুয়া কবিরাজের দৌরাত্ম্য