• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

উল্লাপাড়ায় চায়না জালে ডিমওয়ালা মাছ নিধন, বিপন্ন দেশি মাছ

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি    ৩ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩৬ পি.এম.
মাঠ-ঘাটে এখন মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুম-ছবি ভিওডি বাংলা

‎সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় অবাধে চলছে নিষিদ্ধ চায়না জাল ও কারেন্ট জালের ব্যবহার। বৃষ্টি ও বর্ষার পানি আসায়  নদী-নালা, খাল-বিল এবং মাঠ-ঘাটে এখন মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুম হলেও এসব প্রাকৃতিক উৎসে দিনরাত চলছে মা ও পোনা মাছ নিধনের মহোৎসব। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছ চরম হুমকির মুখে পড়েছে।

‎উপজেলার পূর্ণিমাগাতী,  মোহনপুর, উধুনিয়া, বাঙ্গালা, রামকৃষ্ণপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন  ঘুরে নদী নালা, খালবিলে দেখা যায় সারি সারি চায়না জাল। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যেখানেই একটু পানি জমেছে সেখানেই এই জাল পাতা হচ্ছে। আর অবাধে ডিমওয়ালা দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা হচ্ছে। 

‎সচেতন মহলের অভিযোগ, নিষিদ্ধ এসব জালের ব্যবহার রোধে প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা না থাকায় পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে চায়না জাল বা রিং জাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরার ফলে খুব সহজেই ডিমওয়ালা মা মাছ ও ছোট পোনাগুলো ধরা পড়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক ক্ষতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

‎মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন মৌসুম হওয়ায় এখন নদী-নালায় মা মাছ ডিম দিতে আসে। কিন্তু নিষিদ্ধ এ জালগুলো এতটাই সূক্ষ্ম যে, ডিমওয়ালা মাছ থেকে শুরু করে এক ইঞ্চির কম আকৃতির পোনাও ধরা পড়ে যাচ্ছে। এতে দেশীয় প্রজাতির রুই, কাতলা, মৃগেল, টেংরা, পুঁটি, শিং, মাগুরসহ বহু মূল্যবান মাছ বিলুপ্তির পথে।

‎এক মৎস্যজীবী বলেন, ‘চায়না জাল খুবই সস্তা, সহজলভ্য এবং সহজে মাছ ধরা যায় বলে আমরা ব্যবহার করি। কিন্তু জানি, এতে ছোট মাছ বেশি ধরা পড়ে। তবুও জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে ব্যবহার করি।’

‎পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়নের আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমাদের বিলে বেশ কিছু দিন ধরে নিষেধ চায়না জাল দিয়ে দেশিয় প্রজাতির ডিমওয়ালা মা মাছ নিধন চলছে , বিষয়টি নিয়ে আমি মৎস্য অফিসে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা দেখছি না মৎস্য অফিসের।

‎এই অবাধ মাছ নিধনের প্রক্রিয়ায় শুধু মাছ নয়, বর্ষাকালে পানিতে জন্ম নেওয়া নানা জলজ প্রাণীও হুমকির মুখে। অথচ মৎস্য অফিস বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চোখে পড়ার মতো কোনো নজরদারি নেই।

‎এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন,  ‘চায়না জাল ও কারেন্ট জাল আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ।  এগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।’

‎স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের দাবি, দেশীয় মাছ রক্ষায় অবিলম্বে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো, নিষিদ্ধ জাল বাজেয়াপ্ত ও জড়িতদের জরিমানা করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।

‎প্রাকৃতিক মাছের প্রজনন মৌসুমে মা মাছ রক্ষায় কঠোর নজরদারি ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি। নয়তো মাছের দেশ বাংলাদেশ এর ঐতিহ্য শুধু কাগজে কলমেই থেকে যাবে।

ভিওবি বাংলা-‎ রাকিবুল ইসলাম রাকিব /জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দিনব্যাপী কারাতে প্রশিক্ষণ, বেল্ট পরীক্ষা ও মোটিভেশন অনুষ্ঠান
রাজবাড়ী দিনব্যাপী কারাতে প্রশিক্ষণ, বেল্ট পরীক্ষা ও মোটিভেশন অনুষ্ঠান
চারঘাটের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর এখন বসবাসের অনুপোযোগী
রাজশাহী চারঘাটের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর এখন বসবাসের অনুপোযোগী
রাজবাড়ীতে সেনা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
রাজবাড়ীতে সেনা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন