ঝালকাঠি সরকারী মহিলা কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ


ঝালকাঠি সরকারী মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর হেমায়েত উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ অনিয়ম দুর্নীতির ডজনখানেক অভিযোগ রয়েছে। তিনি ২০২১সালের ৪ ফেব্রয়ারী যোগদান করে কলেজের মাছ, গাছসহ বিভিন্ন সম্পদ আত্মসাত করেন। মহিলা কলেজ হওয়া সত্তেও কলেজের অভ্যন্তরে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের পাশেই একটি কক্ষে বিশ্রাম করতেন তিনি। এছাড়াও তার স্বেচ্ছাচারীতার আচরণে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্টাফরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এমনকি তার অশোভনীয় আচরণে কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষক স্বেচ্ছায় অন্যত্র বদলী হয়ে গেছেন। কলেজের অধ্যক্ষ দাপ্তরিক প্রধান হওয়ায় তার নানান অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস করছেন না। চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে সংশ্লিষ্ট সবার মাঝে।
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, ২০২৪সালের ২৭মে প্রলয়করী ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাস রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে ৩০বছর বয়সী কয়েকটি গাছ কেটেছেন। যা দিয়ে তখন কলেজের বিভিন্ন আসবাবপত্র বানানোর ঘোষণা করা হয়েছিলো। কিন্তু সেই গাছ কাটিয়ে দুটি দরজা ও একটি টি টেবিল বানিয়ে বাকি গাছ তিনি আত্মসাত করেছেন। কলেজের অভ্যন্তরে পুকুরে চাষকৃত মাছ পুকুর সেচ দিয়ে সেই মাছ তুলে একাই নিয়ে গেছেন। অন্য শিক্ষকরা তখন মাছ ধরার আগ্রহ দেখালেও ধমক দিয়ে কটাক্ষ করার অভিযোগ করেছেন খোদ শিক্ষকরাই। অধ্যক্ষ পদে যোগদানের পরে চার বছর অতিবাহিত হলেও কলেজ শিক্ষক পরিষদের কোন কমিটি এবং মাসিক কোন সভাও অনুষ্ঠিত হয়নি।
কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান শাখায় অতিরিক্ত সেশন ফি এবং ভর্তিতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছে অধ্যক্ষের নির্দেশেই। একারণে এক শিক্ষার্থী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর আবদেন করলে পুলিশের একটি টিম কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেন। তখন তিনি পুলিশকে আশস্ত করেন। কলেজের বিভিন্ন কাজে খরচের ভাউচারে সুস্পষ্ট তথ্য না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্যাড ব্যবহার না করে সাদা কাগজে সবধরনের বিল-ভাউচার লিপিবদ্ধ করে ফাইলে জমা করেন। যা অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিষয়টি কলেজের অভ্যন্তরীণ অডিটে প্রকাশ পায়। অডিট কমিটিসহ শিক্ষকরাও ক্ষিপ্ত রয়েছে বিষয়টি নিয়ে। কলেজের বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে। ৬মাসের বেশি সময় ধরে পদ শুন্য থাকায় শিক্ষক আনার ব্যাপারে অধ্যক্ষের কোন পদক্ষেপ ছিলো না। কলেজে অধ্যক্ষ পদে ২০২১সালের ৪ফেব্রয়ারী যোগদান করে তার অশোভনীয় ও রূঢ় আচরণে ইংরেজি প্রভাষক দেলোয়ার হোসেন, সহকারী অধ্যাপক (ইংরেজি) তাসমিদা ত্বাহসীন, ব্যবস্থাপনা প্রভাষক শিল্পী আক্তার, ইংরেজি প্রভাষক মো. জাহিদুল ইসলাম, সহকারি অধ্যাপক (প্রাণি বিদ্যা) কামরুল ইসলাম মিলন তালুকদারসহ বেশ কয়েকজন কর্মচারীও স্বেচ্ছায় বদলী হয়ে গেছেন। তার অসহনীয় আচরণের কথা জানতে পেরে শিক্ষকের শূন্য পদে কেউ পদায়ন নিতে রাজি হয়নি। মহিলা কলেজ হওয়া সত্তে¡ও কলেজের অভ্যন্তরে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের পাশেই একটি কক্ষে বিশ্রাম করতেন তিনি। অন্য শিক্ষকদের যাতায়াতে বিলম্ব হলেই শুনতে হতো অধ্যক্ষের ধমক, অশোভনীয় ও অশালীন কথা। কিন্তু তিনি নিজেই সময়ানুবর্তিতা মেনে না চলেন না এমন অভিযোগ রয়েছে। কলেজের বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে তথ্য না দেয়ার শর্তে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি ফরমে স্পস্ট উল্লেখ করেন ২০২৩ সালের ফেব্রয়ারী মাসে। তার এসব অপকর্মের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এসব বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ জানান, রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত গাছ কেটে আসবাবপত্র তৈরী করা হয়েছে। বাকি গাছের কাটিং কলেজে আছে এবং উচ্ছিষ্ট হোস্টেলে রান্নার জন্য জালানী কাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কলেজের পুকুরে চাষকৃত মাছ শিক্ষক-কর্মচারী সবাইকে ভাগ করে দেয়া হয়েছে। কলেজ শিক্ষক পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩০জুন। এরপরে আমি আর কমিটি করে দেইনি। ৩আগস্ট অবসরে যাবো, এরপরে যিনি দায়িত্বে আসবেন তিনিই কমিটি গঠন করবেন। কলেজের কোন বিষয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়নি। নির্ধারিত ফি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করেছে। একজন ছাত্রী মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছিলো। কলেজের শূন্য পদে শিক্ষকের চাহিদা দিলেও কোন শিক্ষক আসতে আগ্রহী হয়নি। সঠিকভাবে কাজ করাতে গেলে সবাইকে সন্তুষ্ট রাখা সম্ভব না। আমি বয়স্ক মানুষ, একটু বিশ্রামের প্রয়োজন তো আছেই। সাংবাদিকদের তথ্য না দেয়ার শর্তের ব্যাপারে অধ্যক্ষ প্রফেসর হেমায়েত উদ্দিন জানান, মহিলা কলেজের অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় থাকে। যা বাইরের সবাইকে জানানো ঠিক না। যা জানার প্রয়োজন আমার কাছ থেকেই জানতে পারবে। এজন্যই ভর্তি আবেদন ফরমে একটি পয়েন্ট উল্লেখ করছিলাম। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়ে গেছে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
দোকান মালিককে হত্যার ঘটনায় বিএনপির ৫ জন বহিষ্কার
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপির কার্যালয়ের ভাড়া চাওয়ায় জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া (৫৭) নামের …

কুমিল্লায় আসিফ ও কায়কোবাদ অনুসারীদের সংঘর্ষ, আহত ৬৫
কুমিল্লার মুরাদনগরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা …

আ’ লীগ আমলে পাশের দেশের ব্যক্তিদের সঙ্গে গোপন চুক্তি হয়েছে- সি আর আবরার
আওয়ামী লীগ আমলে বিশেষ একটি দেশের প্রতিনিধিরা এসে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ …
