তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার বিকালে এক বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘যারা আজকে তারেক সাহেবের বিরুদ্ধে বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু, যারা দেশের বিরুদ্ধে বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু, তারা এই দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে। আসুন, আজকে এই শান্তিপূর্ণ র্যালির মধ্য দিয়ে আমরা সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই, গণতন্ত্রের প্রশ্নে আমাদের কোনো আপোষ নাই। আমি ধিক্কার জানাচ্ছি ওই সমস্ত তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাদেরকে যারা তারেক রহমান সম্পর্কে অম্লীল-অশ্রাব্য কথা বলেছেন।’
একই সঙ্গে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাই বলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অশ্লীল-অশ্রাব্য কথা বলব না… এটা মাথায় রাখতে হবে। আমাদের নেতাকে অশ্লীল-অশ্রাব্য কথা বললে মান ছোট হয় না… ছোট হয় তারা যারা এসব অশ্লীল কথা বলে। আমরা আমাদের যে ঈস্পাত কঠিন দৃঢ় ঐক্য নিয়ে ১৫ বছর আমরা যে লাঞ্ছিত হয়েছি, নির্যাতিত হয়েছি, নিপীড়িত হয়েছি সেই ঐক্য নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। আমি সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাব, আসুন গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একযোগে সামনে দিকে এগিয়ে যাই।’
মিটফোর্ড এলাকায় বুধবারে প্রকাশ্যে লালচাঁদ সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা পরিস্কার করে বলেছি, এই খুনের ঘটনার পুঙ্খানুপঙ্খু রুপে তার তদন্ত হতে হবে, যারা দায়ী তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এটা(নির্মম হত্যাকান্ড) যারা করছে তারা বাংলাদেশকে ধবংস করার জন্য করছে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে র্যালিতে অংশ নিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেই, দেশবাসীকে জানিয়ে দেই এবং একই সঙ্গে যারা আজকে ষড়যন্ত্র করছে তাদেরও জানিয়ে দেই বিএনপি একমাত্র দল যে দল জনগণকে তার লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে।’
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিনের যৌথ উদ্যোগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, অপপ্রচার এবং মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে লালচাঁদ সোহাগকে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এই বিক্ষোভ মিছিল হয়। ফকিরেরপুল থেকে শুরু করে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরার মোড় পর্যন্ত মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। মিছিলটি বিজয় নগর দিয়ে প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।
‘ওদের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেবেন না’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোধ থাকবে, আমরা যেন কারো পাতানো ফাঁদে পা দেই… তারা চেষ্টা করছে আমাদেরকে উত্তেজিত করে তাদের পাতা ফাঁদে পা দেয়ার জন্য… যাতে আমরা উত্তেজিত হয়ে যাই। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে গণতন্ত্র চাই। আমাদের লক্ষ্য এখন একটাই যে, বাংলাদেশে সেই ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হতে সেটা আমাদের তারেক রহমান সাহেব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে লন্ডনে আলাপ করে ঠিক করেছেন। এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ঠিক হওয়ার পরের থেকে ওদের মাথা বিগড়ে গেছে। যখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমান সাহেব নিশ্চিত করে ফেলেছেন যে, এবার নির্বাচন হবে তখন থেকেই তাদের মাথা বিগড়ে গেছে। আমরা নির্বাচন চাই, যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেই সময়টাতে আমরা নির্বাচন চাই। আমরা ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই, আমরা জনগণের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করতে চাই, চাকুরি সংস্থান করতে চাই, নতুন এক বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করতে চাই আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে।’
‘ওদের চক্রান্ত ভয়াবহ’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওদের পরিকল্পনাটা অত্যন্ত ভয়াবহ যে, বাংলাদেশে আবার একটা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা, অস্থিরতা সৃষ্টি করা, বিভাজনের সৃষ্টি করা, বাংলাদেশকে আবার একটা জায়গায় নিয়ে আসা যেখানে গণতন্ত্র আবার তিরোহিত হবে। সেজন্য আমাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বড় দল হিসেবে, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে, ১৬ বছর আমরা যে কষ্ট করেছি যে, আত্মত্যাগ করেছি…আমাদের দেশনেত্রীকে ছয়বছর অন্যায়ভাবে কা্রাগারে আটক করে রাখা হয়েছে, আমাদের নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে…. আমরা জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা একসাথে হয়ে ফ্যাসিস্টদের বিতাড়িত করেছি। আবার ফ্যাসিস্টদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য নয়। আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, কোনোদিন যেন ফ্যাসিজম এদেশে চালু হতে না পারে তার ব্যবস্থা আমরা করব। আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ রাখব যে, ধরয্য ধরে সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।’
‘ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল, এই দলকে দেশের জনগণ ভালোবাসে। এই দলকে সহজে জনগণের মন থেকে উঠিয়ে ফেলা যাবে না যত ষড়যন্ত্রই করেন। একটি কথা না বললেই নয়, এক লোক(চরমোনাইয়ের পীর রেজাউল করীম) এক লোকের দল… আমি নামটা তার বলতে চাই না।ওই লোকটি এবং তার দল(ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ) যারা বলছে, শ্লোগান দিচ্ছে, আওয়ামী লীগ গেছে যেই পথে বিএনপি যাবে সেই পথে। আরে বেটা এত সহজ নাকি এটা… এতোই সহজ। আমাদের কোথাও যাওয়ার রাস্তা নাই। এই বাংলাদেশ আমাদের স্থায়ী ঠিকানা। এই লোকটি এবং তার দল-বল বিএনপিকে এখন সহ্য করতে পারছে না কিন্তু আওয়ামী লীগকে ঠিক সহ্য করতেন।’
‘২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে যখন হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের ওপরে হামলা করা হয়েছিল এই চরমোনাইয়ের পীর সাহেব কোথায় ছিলেন? উনি কি মুসলমানদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন? দাঁড়ায় নাই।‘‘ কে দাঁড়িয়েছে? বিএনপি দাঁড়িয়েছে?’ বলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামের প্রতি ইংগিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আর একটি দল লম্বা লম্বা কথা ছাড়া সুকৌশলে চাঁদা নেয়া ছাড়া, সুকৌশলে হাদিয়া নেয়া ছাড়া কোনো কাজ নাই। টাকা নিয়েছেন বসুন্ধরার কাছ থেকে, টাকা নিয়েছেন সিটি গ্রুপের কাছ থেকে… আরও কোন কোন গ্রুপের কাছ থেকে টাকা খান আমাদের জানা আছে… সব কিছুর হিসাব হবে। গায়ের জোরে কথা বলেন। নিজের পায়ে জোর নাই। এরশাদের সময়ে এরশাদের কাঁধে ভর করেন, আওয়ামী লীগের সময়ে আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করেন, বিএনপির সময়ে বিএনপির কাঁধে ভর করেন… লম্বা লম্বা কথা বলেন। এখন বিএনপি ওদের একমাত্র মাথা ব্যথা…বিএনপিকে যদি শেষ করে দেয়া যায় তাহলে উনার রাজত্ব করতে পারবেন।তারা তারেক রহমানকে সহ্য করতে পারছে না। কেনো লাভ নাই তারেক রহমান তার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরেকটা আছে যে কী বলে বাংলাদেশ চিলড্রেন্স পার্টি… এই চিলড্রেন্স পার্টির অনেকে এখন তারেক রহমান সম্পর্কে কথা বলেন, জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কথা বলেন। আরে ভাই তোমাদের দাদাও তো জিয়াউর রহমানকে চিনে… কী সমস্ত কথা বলে এরা। এখন এই সমস্ত লোকের কথা-বার্তা শুনে আমাদের বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নাই।’
মহানগর দক্ষিনের সভাপতি রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় এই সমাবেশে মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হকও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুব দলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না প্রমূখ নেতারা ছিলেন।
‘ছাত্র দলের বিক্ষোভ মিছিল’
দুপুর ২টায় নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ছাত্র দলের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী সমবেত হয়ে মিছিল শুরু করে। এই মিছিলে ছিলেন ছাত্র দলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা।
‘রাজকার আর স্বৈরাচার মিলে মিলে এককার’ ‘দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, পিন্ডি যাবে রাজাকার’, ‘তুমি কে আমি কে বাংলাদেশী, বাংলাদেশী’ ‘দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, সবার আগে বাংলাদেশ’, ‘এই লড়াই মুক্তির এই লড়াইয়ে জিততে হবে’, ‘বাংলাদেশ, গণতন্ত্র হয়নি শেষ, সজাগ থাকো বাংলাদেশ’ ইত্যাদি নানা শ্লোগান দেয় ছাত্র দলের নেতা-কর্মীরা।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবণতির প্রতিবাদে ছাত্র দল এই বিক্ষোভ মিছিল বিজয় নগর, জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে শাহবাগে দিয়ে শেষ হয়।
ভিওডি বাংলা/ এমপি
মবকে যারা মদদ দিয়ে ছিল, তারা এখন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না : জি এম কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, মবের …

ইসলামের নামে লেবাসধারী দল অপপ্রচারে লিপ্ত: রিজভী
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অতীতের …

সংসদে নারী আসন ও উচ্চকক্ষ নিয়ে যে মতামত দিলো বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সংসদে …
