জয়ের আশায় স্টেডিয়ামে হাজারো মানুষ


ক্রীড়া প্রতিবেদক
সেই সকাল থেকেই জাতীয় স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকগুলোতে হাজারো সমর্থকের ভিড়। অধীর আগ্রহে ফুটবলপ্রেমীরা অপেক্ষায় গ্যালারিতের প্রবেশের। স্টেডিয়ামের চার পাশটাই যেন বদল গেছে একেবারে। কারও শরীরে হামজা চৌধুরীদের সাদা হোম জার্সি, কারও শরীরে টকটকে লাল অ্যাওয়ে জার্সি। আবার কেউ কেউ এসেছেন পুরানো লাল-সবুজ জার্সি পড়ে। তবে কম বেশি সবার কাছেই মিললো ছোট-বড় লাল-সবুজ পতাকা। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিড়ে গুলিস্তান-মতিঝিল পাড়া রেঙেছে ফুটবলের রঙে। হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়েছেন শুধুই হামজা-জামাল-শামিতদের একটা জয়ের আশায়।
পাক্কা নয় বছর পর সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। এশিয়ার দু'দেশের খুব বেশি সাক্ষাতের ঘটনা না থাকলেও মুখোমুখি লড়াইয়ের গল্পটা বেশ পুরানো। সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এক সুখস্মৃতিও জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের। ১৯৭৩ সালের ১৫ আগস্ট কুয়ালালামপুরে এই সিঙ্গাপুরকে হারানোর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে জয়োযাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। প্রয়াত নওশেরুজ্জামানের একমাত্র গোলে সেদিন লাল-সবুজের জয়োপতাকা উড়েছিল। এর ১২ দিন আগেও দেখা হয়েছিল দু'দলের। সেদিন ম্যাচটা ১-১ ড্র হয়। চতুর্থ মিনিটে কাজী সালাউদ্দিনের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ১৪ মিনিটে সামসুদ্দিন রহমত সমতাসূচক গোল করেন সিঙ্গাপুরের পক্ষে। এরপর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০০৭ সালে দু'দলের দেখা হয়েছিল মারদেকা কাপে। কুয়ালালামপুরেই সে ম্যাচে অবশ্য বাংলাদেশ হারের স্বাদ পায় ২-১ ব্যবধানে। আর ২০১৫ সালে ঢাকায় প্রীতি ম্যাচেও সিঙ্গাপুর জেতে একই ব্যবধানে।
প্রিমিয়ার লিগ তারকা হামজা চৌধুরীর সংযুক্তিতে এই বাংলাদেশ এখন অনেকটাই বদলে গেছে। অন্তত এই বিশ্বাস সঙ্গী করেই আজ জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে এসেছেন হাজারো বাংলাদেশ সমর্থক। ম্যাচের প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা আগেই গ্যালারির নব্বইভাগ ভরে গেছে। এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। যা হয়তো অনেকেই দেশের ফুটবলের বর্তমানের সঙ্গে মেলাতে পারবেন না। ফুটবলে অনেকদিন কোন সুখবর নেই্। নেই কোন সাফল্য। স্মৃতিতে জমে আছে সেই ২০০৩ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। ২২ বছর আগে এই মাঠেই মালদ্বীপকে টাইব্রেকারে হারিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর এখানে ২০১০ সালে এসএ গেমস ফুটবলের স্বর্ণ জয়। এরপর প্রাপ্তির খাতা একেবারেই শূণ্য।
সাফল্য আসে না বলেই ফুটবল নিয়ে আগ্রহের পারদ ছিল এতদিন নিম্নমূখী। সাফল্য মেলেনি, মেলার সম্ভাবনাও খুব বেশি মিলেনি নিকট অতীতে। অথচ এই ফুটবল নিয়েই দেশের মানুষের আগ্রহ আকাশ ছোঁয়ার অন্যতম কারণ হামজা চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা নিয়ে হামজা এসেছেন দেশের মরা ফুটবলকে চাঙ্গা করতে। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতোই তিনি লাল-সবুজে মোহগ্রস্ত করে তুলতে পেরেছেন আরও অনেককেই। যাদের অন্যতম শামিত সোম। কানাডা জাতীয় দল ও মেজর লিগ সকারে খেলা শামিতের আজ অভিষেক হবে। ইতালি চতুর্থ লিগে খেলা উইঙ্গার ফাহামিদুলের অবশ্য অভিষেকটা হয়েছে এ মাঠেই পাঁচদিন আগে। ভুটানের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল প্রভাব খাটিয়ে, ২-০ ব্যবধানে। সেদিন বাংলাদেশের হয়ে গোলের খাতা খুলেছিলেন হামজা। বর্ষীয়ান অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার কর্নারে নিঁখুত হেডে পোস্টের দেখা পাওয়া হামজার সেটিই ছিল বাংলাদেশের হয়ে প্রথম গোল। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে অসাধারণ গোলো ব্যবধান বাড়ান অভিজ্ঞ সোহেল রানা।
আজ অবশ্য প্রতিপক্ষ ভুটানের মতো ততটা সহজ নয়। বরং ধারে ভারে সিঙ্গাপুরই এগিয়ে। র্যাংকিংয়ের বিচারে তো ঢের এগিয়ে। তবে র্যাংকিংয়ের এই সংখ্যাকে দু'দলের কোচ-খেলোয়াড়রা একদমই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ তাই সিঙ্গাপুরের কাছেও বড় প্রতিপক্ষ। আর মার্চে ভারতের গিয়ে সুনীল ছেত্রীর দলের কাছ থেকে পয়েন্ট কেড়ে আনা বাংলাদেশ তো হোম ম্যাচে খেলতে নামছে তিন পয়েন্টের লক্ষ্য নিয়ে। নইলে গ্রুপ সেরার লড়াইয়ে যে পিছিয়ে যেতে হবে।
এখানেই বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার। প্রতিপক্ষকে চুলচেড়া বিশ্লেষণ করেই তাকে বেঁছে নিতে হবে সেরা এগার জনকে। আর নব্বই মিনিট জুড়ে তাদের বিকল্প বাছাইয়ে করা যাবে না ভুল। সেই সঙ্গে থাকতে হবে সিঙ্গাপুরের থামানোর কৌশল। কোচের কৌশল বাস্তবায়নের দায়টা ফুটবলারদের। দীর্ঘদিন পর হাজার হাজার সমর্থককে একটা জয় উপহার দেওয়ার সুযোগ নিশ্চয় হাতছাড়া করতে চাইবে না ফুটবলাররা।
সিঙ্গাপুর তাদের প্রথম ম্যাচ ড্র করেছিল হংকংয়ের সঙ্গে। এই ম্যাচটা তাই দু'দলের জন্যই এগিয়ে যাওয়ার। বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই প্রমাণের। তবে এগিয়ে যেতে হলে কেবল প্রবাসী ফুটবলারদের জ্বললে চলবে না, জ্বলতে হবে এ দেশের জল-হাওয়ায় বেড়ে ওঠাদেরও। রাকিব হোসেন, মিতুল মারমা, তপু বর্মণ, শাকিল আহাদ তপু, মোহাম্মদ হৃদয়, সাদ উদ্দিন, তাজ উদ্দিনদেরও নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে থাকতে হবে শতভাগ মনযোগী। তবেই হাভিয়ের কাবরেরার দলটি সত্যিকারের বাংলাদেশ হয়ে উঠবে।
ভিওডি বাংলা/ডিআর
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা
ক্রীড়া প্রতিবেদক
অবশেষে সোনার হরিণের দেখা পেলো দক্ষিণ আফ্রিকা। একটি হাতে …

তাবিথ আউয়ালের দুঃখ প্রকাশ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়া বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যকার …

চাটমোহর প্রিমিয়ার লীগে চ্যাম্পিয়ন শহীদ শামসুদ্দিন স্মৃতি সংঘ
পাবনা প্রতিনিধি
পাবনার চাটমোহরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ক্রিকেট ক্লাবের উদ্যোগে …
