মঙ্গল গ্রহে প্রথমবারের মতো বজ্রপাত শনাক্তের দাবি
মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডলে প্রথমবারের মতো বজ্রপাতের মতো বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ শনাক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভার থেকে পাওয়া অডিও ও ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ডেটা বিশ্লেষণ করে ফ্রান্সের গবেষকরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
পারসিভিয়ারেন্স রোভার চার বছর ধরে জেজেরো ক্রেটারে অনুসন্ধানের কাজ করছে। এর সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও রেকর্ডিংয়ে ‘মিনি লাইটনিং’ নামে পরিচিত ক্ষুদ্র বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ শনাক্ত হয়। গবেষকদের মতে, এগুলো মঙ্গলের ধূলিঝড় বা ‘ডাস্ট ডেভিল’-এর সঙ্গে সম্পর্কিত।
ডাস্ট ডেভিল হলো ছোট ঘূর্ণিঝড়, যা গরম বাতাস উপরে উঠলে তৈরি হয়। এর ভেতরের ঘূর্ণন থেকেই বৈদ্যুতিক স্রাব সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণার প্রধান লেখক ড. ব্যাপতিস্ত শিদে বলেন, “মঙ্গলে এ ধরনের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ শনাক্ত হওয়া এক বড় ধরনের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি। এটি মার্সের বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু ও ভবিষ্যতের মানব মিশনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
এতে মঙ্গল এখন পৃথিবী, শনি ও বৃহস্পতির মতো বৈদ্যুতিক কার্যকলাপযুক্ত গ্রহের তালিকায় যুক্ত হলো বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
তবে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহও রয়েছে। বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার-এ ড. ড্যানিয়েল প্রিচার্ড লিখেছেন, “প্রমাণ শক্তিশালী হলেও এগুলো মঙ্গলের সত্যিকারের বজ্রপাত কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়। বিতর্ক আরও কিছুদিন চলবে।”
এর আগে সেপ্টেম্বরে পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গলে অদ্ভুত দাগযুক্ত পাথর শনাক্ত করে, যেগুলোকে ‘লেপার্ড স্পট’ ও ‘পপি সিড’ নামে অভিহিত করা হয়। এসব পাথরে এমন খনিজ ছিল যা প্রাচীন জীবাণুর সঙ্গে সম্পর্কিত রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নাসা এটিকে এখন পর্যন্ত মঙ্গলে জীবনের সম্ভাব্য সবচেয়ে শক্তিশালী ইঙ্গিত- হিসেবে বিবেচনা করছে।
বর্তমানে মঙ্গল শুকনো ও ঠান্ডা হলেও বিলিয়ন বছর আগে সেখানে ঘন বায়ুমণ্ডল ও প্রচুর পানি ছিল-যা জীবনের উপযোগী পরিবেশের ইঙ্গিত দেয়। এসব কারণেই জেজেরো ক্রেটারকে অনুসন্ধানের মূল কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
ভিওডি বাংলা/জা
