• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

রাজনৈতিক দলগুলো

আলোচনা ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বেঁধে দেওয়ার এখতিয়ার নেই: সালাহউদ্দিন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক    ৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৫ পি.এম.
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি-সংগৃহীত

বিএনপি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সেটা এনসিপি হোক, জামায়াত হোক বা অন্যান্য পার্টি হোক। সবার সাথে আমরা গণতান্ত্রিক কালচার (সংস্কৃতি) হিসেবে রাজনৈতিক যোগাযোগ এবং আলাপ–আলোচনা, সম্পর্ক রাখব। কিন্তু কোনো বিষয়ে আলোচনা করার জন্য কোনো রেফারির ভূমিকায় কোনো দলকে দিয়ে আপনারা আহ্বান জানাবেন ইনডাইরেক্টলি, সেটা বোধ হয় সঠিক হচ্ছে না।’

জুলাই সনদ ও গণভোট নিয়ে সৃষ্ট মতভেদ নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোকে অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার আগের দিন শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। 

‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের ৫০ বছর’ উপলক্ষে আজ বিকেলে ছাত্রদলের আয়োজনে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এই আলোচনা সভা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের এভাবে সময় বেঁধে দেওয়ারও এখতিয়ার নেই বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কোনো নির্বাচিত সরকার নয়, এটা আপনারা যেন সব সময় ইয়াদ (মনে) রাখেন। আপনাদের এ রকম কোনো এখতিয়ার নাই, আমাদেরকে ডিকটেট (আদেশ) করার যে সাত দিনের ভিতরে আপনারা সিদ্ধান্ত না হলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এত শক্তি প্রদর্শন আপনাদের বোধ হয় মানায় না।’

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘সরকারের উদ্দেশে বলতে চাচ্ছি, আমরা মনে করেছিলাম জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে তার দায়িত্ব পালন করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করবে। অথচ এখন আপনারা রেফারি হয়ে হাত দিয়ে একটা গোল দিয়ে দিয়েছেন। এখন বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সাত দিনের মধ্যে, না হলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

এ সময় জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আপনারা যাঁরা ১৯৭১ সালে উল্টা দিকে যাত্রা করেছিলেন, ১৯৪৭ সালে বিপরীত দিকে যাত্রা শুরু করেছিলেন, জাতীয় পার্টির হাত ধরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সাহেবের সহচর হয়েছিলেন, আপনারা আবার যদি আওয়ামী লীগের হাত ধরে পুনরুত্থান চান, কী পরিণতি হবে, আল্লাহ মালুম। আপনারা যা শুরু করেছেন তাতে করে উৎসাহিত হবে পতিত ফ্যাসিস্ট। তাতে উৎসাহিত হবে বাংলাদেশে অন্য যেকোনো রকমের অগণতান্ত্রিক শক্তি। কিন্তু সে জন্য যদি আপনারা বলতে চান যে আপনারা খেতে পারবেন না, সে জন্য বাড়া ভাতে ছাই ছিটিয়ে দিবেন। সেটা বাংলাদেশের মানুষ আর কখনো গ্রহণ করবে না। সেই সুযোগ দেবে না।’

জামায়াতের উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘আপনারা ঘি খেতে চান, খান। কিন্তু আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথের এই ময়দানকে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আর উত্তপ্ত হতে দেব না। ঠিক। আপনারা বলেছেন ১১ তারিখ পর্যন্ত আলটিমেটাম। আলটিমেটাম কারা দিচ্ছেন সরকারকে? তো সরকার তো আপনাদের পক্ষে সুপারিশ দিয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তো আপনারা যা চান, তাই দিয়েছে। সে জন্য আপনারা তার সাথে সুর মিলিয়ে তাই কথা বলছেন।’

দেশে গণভোটের কোনো প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই গণভোটের মধ্য দিয়ে আইন প্রণীত হয়ে যাবে। এই গণভোটটার মধ্য দিয়ে সংবিধান পরিবর্তিত হয়ে যাবে। কিন্তু একটা নৈতিক বাধ্যবাধকতা সংসদ সদস্যদের ওপরে এবং আগামী সংসদের ওপরে আরোপিত হবে। যে জনগণ চায় এই সংস্কার বাস্তবায়ন হোক অথবা চায় না। নির্বাচনের দিন ছাড়া গণভোটের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

১৩ নভেম্বর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচি প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘১৩ তারিখ বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি রায় (রায়ের তারিখ) ঘোষণা হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। সেদিন নাকি লকডাউন সারা বাংলাদেশে। মানুষ বলে না যে পাগলের সুখ মনে মনে। এই এক বছরের ভেতরে কীভাবে আপনাদের মনে হলো যে ফ্যাসিস্ট পতিত শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তির পক্ষে বাংলাদেশে লড়া, আপনারা আহ্বান করবেন আর জনগণ সাড়া দেবে? যদি দুঃসাহস থাকে আপনারা আসেন। বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের কীভাবে আপ্যায়ন করে দেখব। আমরা তো চাই, আপনারা এসে বিচারের মুখোমুখি হোন।’

দেশ ক্রমেই অস্থিতিশীল হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম। আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার হচ্ছে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে অনেক কিছু বলা হচ্ছে। কারা রাজপথকে উত্তপ্ত করে রাখতে চায়, কারা গত এক বছর দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ভারতকে সুযোগ করে দিচ্ছে, ইতিহাসে তাদের কথা লেখা থাকবে। ভারত চায়, অস্থিতিশীল বাংলাদেশ। ভারতের সে প্রত্যাশা যারা পূরণ করতে চায়, তাদের আমরা ক্ষমা করব না।’

ভিওডি বাংলা/ এমএম

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় প্রমুখ।

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই, ধানের শীষের ভোট চাই: মির্জা ফখরুল
হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই, ধানের শীষের ভোট চাই: মির্জা ফখরুল
দেশ ছাড়তে বাধ্য হই: উষা
দেশ ছাড়তে বাধ্য হই: উষা
পরাজিত শক্তি গুপ্ত থেকে যেন সুযোগ না পায়: তারেক রহমান
পরাজিত শক্তি গুপ্ত থেকে যেন সুযোগ না পায়: তারেক রহমান