• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশের ধারা সংশোধনের আহ্বান টিআইবির

নিজস্ব প্রতিবেদক    ২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৬ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশে বৈষম্যমূলক কমিশন গঠনে সহায়ক এবং প্রতিষ্ঠানটিকে স্বাধীন ও কার্যকরভাবে কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঝুঁকি রয়েছে এমন সব ধারাসমূহ অব্যাহত থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

জন্মলগ্ন থেকে এই কমিশনের অকার্যকরতার অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে খসড়ার ওপর টিআইবিসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজন যে সুপারিশ ও মতামত দিয়েছে, তার অনেকগুলোই প্রশংসনীয়ভাবে অনুমোদিত খসড়ায় প্রতিফলিত হয়েছে বিধায় সন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি অধ্যাদেশটির প্রয়োজনীয় সংশোধন করার জোর দাবি জানায় সংস্থাটি।

রোববার (০২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।

গ্লোবাল অ্যাসোসিয়েশন অব ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ইনস্টিটিউশন (GANHRI) এর মানদণ্ডের উল্লেখ করে বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টিলগ্নে যে মৌলিক দুর্বলতার বীজবপন করা হয়েছিল, তা চিরকাল কেন অব্যাহত রাখতে হবে, তা বোধগম্য নয়। অধ্যাদেশে কমিশনের চেযারপার্সনসহ ৭ জন সদস্যের মধ্যে ২ জন সদস্যকে খণ্ডকালীন নিয়োগের যে বিধান রাখা হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক ও কমিশনের উভয় শ্রেণির সদস্যবৃন্দের জন্য বিব্রতকর, যা প্রতিষ্ঠানটির অকার্যকরতার অন্যতম উপাদান হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। কার্যক্রম পরিচালনায় কমিশন সদস্যদের মধ্যে মর্যাদা ও এখতিয়ারের বৈষম্য নিরসনের পাশাপাশি গতিশীলতা ও কার্যকরতা নিশ্চিতে এই বিধানটির সংশোধন জরুরি। একইসঙ্গে সকল কমিশনারগণের পদমর্যাদার সমতা, সমপর্যায়ের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা এবং তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য সুনির্দিষ্ট করতে হবে।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘স্বচ্ছপ্রক্রিয়ায় চেয়ারপার্সন ও কমিশনার বাছাইপ্রক্রিয়া সম্পন্নের পর নাম-পরিচয়সহ প্রাথমিক বাছাইকৃত প্রার্থীদের এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশকৃত ব্যক্তিদের তালিকা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশের বিধানের সুপারিশ করা হলেও, তা অগ্রাহ্য করা হয়েছে। তা ছাড়া কোনো সংস্থার আটকস্থল যদি কমিশনের নিকট আইনবহির্ভূত বলে বিবেচিত হয়, তবে তা বন্ধ করা ও দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিতের সুপারিশও গৃহীত হয়নি, যা হতাশাজনক।’

কোনো আইন, যার বিধানসমূহ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানবাধিকার সংরক্ষণের পরিপন্থি, কমিশনকে তা পর্যালোচনা ও সংশোধনের জন্য সরকারকে সুপারিশের  বিধান যুক্ত করার মতামত প্রদান করা হলেও, তা বিবেচিত হয়নি উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, ‘মানবাধিকারসংক্রান্ত অন্য কোনো আইন এই আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে এই আইন প্রাধান্য পাবে, ধারা ১৪ এর সঙ্গে এই অংশটুকু উল্লেখ করা হলে, ভবিষ্যতে মানবাধিকার প্রশ্নে আইনগত সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে কমিশনকর্তৃক মানবাধিকার সুরক্ষার প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করা সহজতর হবে, অথচ অধ্যাদেশে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘ঢালাওভাবে সকল অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অনুসন্ধান বাধ্যতামূলক না করে অভিযোগ আমলযোগ্য বিবেচিত হলে সরাসরি তদন্তের আদেশ প্রযোজ্য হওয়ার যে সুপারিশ করা হয়েছিল, তা গৃহীত হয়নি। এর ফলে কমিশনের কাজে অযথা দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হবে এবং ক্ষেত্র বিশেষে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তির হয়রানি বাড়বে এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তির সম্ভাবনা দুরূহ হবে।’

প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি বা সরকারি কর্মচারীকে কমিশনে বা কমিশনের তদন্ত দলে প্রেষণে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে সীমিত করা এবং  এ ধরনের পদে নিয়োগপ্রক্রিয়া ও সকল ক্ষেত্রে সবার জন্য উন্মুক্ত, স্পষ্ট, স্বচ্ছ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে হবে, এই বিধান যুক্ত করার সুপারিশ করা হলেও, তা বিবেচনা করা হয়নি। একইভাবে বিবেচিত হয়নি কোনো সরকারি কর্মচারীকে প্রেষণে নিয়োগের জন্য প্রস্তাব করা হলে, সেক্ষেত্রে কমিশনের দ্বিমত থাকলে, তা প্রত্যাখ্যানের সুযোগের বিধান করার সুপারিশও। তা ছাড়া কমিশনের আয়-ব্যয়ের হিসাবের ওপর পরিচালিত বাৎসরিক অডিট সম্পন্নের পর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশের ধারাও অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ বলে মনে করে টিআইবি।

ভিওডি বাংলা/ এমএম

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ভারতের নসিহত নির্বাচনে অগ্রহণযোগ্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ভারতের নসিহত নির্বাচনে অগ্রহণযোগ্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সব প্রার্থীকে সমান সুযোগ দেয়ার নির্দেশ ইসির
টিভিতে নির্বাচনী প্রচার সব প্রার্থীকে সমান সুযোগ দেয়ার নির্দেশ ইসির
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব