• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১
টপ নিউজ
চীফ প্রসিকিউটর বনাম শেখ হাসিনার মামলার ৫৪তম সাক্ষ্যগ্রহণ আজ মেধা কাজে লাগালে বিশ্বে স্বনামধন্য হওয়া যায় - আবদুস সালাম হোয়াটসঅ্যাপের নতুন চমক ‘শিডিউল কল’ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পূজা প্রস্তুতি পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে: আমিনুল হক ডাকসুর নেত্রীদের ‘গৃহদাসী’ মন্তব্য করে চাকরি হারালেন ব্র্যাক গবেষক ক্যান্সার আক্রান্ত হেফাজত নেতা মাওলানা ফারুকী’র পাশে তারেক রহমান ১৩ দিনে ১৬ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স এরদোগানের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল আঙ্কারা মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজের নবীনবরন অনুষ্ঠানে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম

সবজির চারা উৎপাদনে বিপ্লব

বগুড়ার শাহ্ নগর এলাকার মরিচ চারা যাচ্ছে ৩২ জেলায়

বগুড়া প্রতিনিধি:    ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৩১ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার শাহ্নগর এলাকার কৃষকরা তিন দশক আগেও ধান ছাড়া অন্যকোন আবাদ করতেন না। তাতে করে বাদবাকী সময় কৃষি জমি পতিত পড়ে থাকতো। কৃষকরাও বছরের প্রায় ৬ মাস হাত গুটিয়ে বসে থাকতেন। লেখাপড়া জানারা চাকরির পিছনে ছুটতেন। সেই এলাকায় দুই দশকের মধ্যে চিত্র পাল্টে গেছে। সেখানে ঘটেছে ফসলের চারা উৎপাদনের নিরব বিপ্লব। চাকরির পিছনে না ছুটে এলাকার অনেক যুবকই জড়িয়েছেন কৃষিতে। সেখানকার উৎপাদিত সবজির চারা নিজ জেলার গন্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে অন্তত ৩২টি জেলায়। মাত্র তিন মাসের সবজির চারার চলা কারবারে এর বাজার গড়ে ওঠেছে অন্তত সাড়ে ৭ কোটি টাকার। কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েক হাজারের। পাল্টে গেছে এলাকার অর্থনৈতিক চিত্র।

শুরুটা যেভাবে হলো- 

শাহ্নগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন(৬৫) অন্য ফসল চাষাবাদের পাশাপাশি ১৯৯৫ সালে পরীক্ষামূলক ১০ শতক জমি দুইখন্ড করে ফুল কপি ও মরিচের বীজ বপন করেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে বীজ বপন করার পর চারা গজালে পরিচর্যা করে বেশ বড় করেন। এরপর নিজের জমিতে চারা রোপন করে বেশ ভাল আবাদ পান। এভাবে তিনি প্রতি বছর নিজেই চারা উৎপাদন করে নিজের জমিতে শীতকালিন সবজির চাষাবাদ করতে থাকেন। তার দেখাদেখি এলাকার কৃষকরাও উদ্ধুদ্ধ হয়ে ধানের পাশাপাশি সবজির চাষাবাদ করতে থাকেন। সবজির চারা উৎপাদনের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে এলাকার কৃষকদের মাঝে। কৃষকরা আমজাদের নিকট থেকে চারা নিয়ে চাষাবাদ করতে থাকেন। চাহিদা বাড়ায় আমজাদ হোসেন ‘আখি বীজ এন্ড নার্সারী’ নামে সবজির নার্সারী গড়ে তোলেন। দুই দশক আগে এখান থেকে বানিজ্যকভাবে সবজির চারা নিজ এলাকা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা চারা নিয়ে চাষাবাদ করতে থাকেন। ধীরে ধীরে ২০০২ সালের পর থেকে এলাকায় প্রায় অর্ধশত সবজির নার্সারী গড়ে ওঠে। এলাকার সবজির চারা যেতে থাকে অন্তত ৩২ টি জেলায়। আগষ্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই তিন মাস চারা উৎপাদনের সময়। এই তিন মাস শাহ্নগর এলাকায় বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। এখন সেখানে নার্সারী সংখ্যা বেড়ে আড়াইশ ছাড়িয়েছে। 

আগে কৃষির অবস্থা কেমন ছিল:-

স্থানীয়রা জানান আগে এলাকায় কৃষকরা এক ফসলের বেশি অন্য কোন ফসলের আবাদ করতেননা। অন্য আবাদ করা যায় তাতে লাভ হয় বেশি তা কেউ আমুলে নিতেননা। বিঘাকে বিঘা জমি পতিত পড়ে থাকতো। কৃষির প্রতি মানুষের আগ্রহ তেমন ছিলনা। শাহনগর এলাকায় সবজির চারার উদ্যাক্তা আমজাদ হোসেনের সাফল্য দেখে কৃষকরা উদ্ধুদ্ধ হয়ে সবজির চাষাবাদ শুরু করেন। এখন সেখানকার কৃষকরা একেকজন উদ্যাক্তা হয়ে ওঠেছেন। তারা নিজেরাই চারা উৎপাদন করে অন্য জেলায় বিক্রি করছেন এবং কৃষকদের ধান চাষের পাশাপাশি সবজি চাষে উদ্ধুদ্ধ করছেন। সবজি চাষের কলা কৌশল শিখিয়ে দিচ্ছেন অন্য জেলার কৃষকদের।

যেসব গ্রামে চাষাবাদ করছে:-

শাহনগর সবজি চাষের সুতিকাগার হলেও এখন আরও তিনটি গ্রামের কৃষকরা বানিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন করছে। গ্রামগুলো হলো কামারপাড়া,বড় পাথার ও খোট্টাপাড়া। এই চার গ্রামের ২৭০ জন কৃষক এখন বানিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদনের সাথে জড়িত। ওই এলাকাগুলোই এ সময় গেলে দেখা যাবে ফসলের মাঠে শুধু পলিথিনে মোাড়ানো চারার প্লট আর প্লট। বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষি ও ব্যাপারিরা চারা নিতে আসছে। এখন সেখানকার মানুষের দম ফেলানোর সময় নেই।

যেসব চারা উৎপাদন হয়

মরিচ,ফুল কপি,বাধাঁ কপি বেগুন ও টমেটোর চারাই সবচেয়ে বেশি উৎপাদন করা হয়। মরিচের চারার মধ্যে আছে ৭-৮ জাতের। যেমন বিজলি মরিচ,বগুড়া কিং, কারিশমা, টাইগার, কিসমত, সুলতান, লাইলা ও লাইট মাস্টার উল্লেখযোগ্য। ফুল কপির মধ্যে আছে শিলা জাত,কুসুমজাত,নারিশজাতের। বাধাঁ কপিও একই জাতের। বেগুন আলতামাস,মেন্টাল বোম্বাই ও কালিয়াজাত। টমোটেও আছে নানা জাতের। 

এখান থেকে কেন অন্য জেলার কৃষকরা চারা নেন

শাহনগরসহ এই এলাকার সবজির চারার মান ভালো,ফসলের ও গাছের আকার আকৃতি বড় হয়। উৎপাদনও বাড়ে। চারার সাইজও ভালো,এখানকার উদ্যাক্তা কৃষকরা যা বলে ফসল চাষাবাদ করতে গিয়ে কথার সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়,চারার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি,এখানকার চারার বাজারে চাহিদা বেশি ইত্যাদি। যাচ্ছে যে সব উল্লেখযোগ্য জেলায় সিরাজগঞ্জ, পাবনা, গাইবান্ধা, রংপুর, নওগাঁ, নাটোর, টাঙ্গাইল, শেরপুর, কুষ্টিয়া, জামালপুর, ময়মনংসিং, চট্রগ্রাম, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কিশোরগঞ্জ।

অন্য জেলার কৃষকরা কি বলেন

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামূখি এলাকা থেকে কপির চারা নিতে এসেছেন যুব বয়সের কৃষক মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন,লেখাপড়া করেছি এইচএসসি পর্যন্ত এখন কৃষি কাজ করছি। নিজের জমি চাষাবাদ করছি। এখান থেকে গত ৬ বছর যাবত চারা নিয়ে শীতকালিন সবজির চাষাবাদ করে বেশ ভালই লাভবান হচ্ছি। এখানকার চারার গুনগত মান ভাল। তাই এখান থেকে চারা নিয়েই সবজির চাষাবাদ করে আসছি।

চাকরির পাশাপাশি কৃষি কাজ করেন গাইবান্ধার বোনাপরপাড়া এলাকার যুবক রায়হান আলী। তিনি বলেন একটি কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি কৃষি কাজ করি। বিশেষ করে শীতকালিন সবজির চাষাবাদ করার জন্য এখান থেকে গত ৩ বছর যাবত চারা নিয়ে গিয়ে বেশ ভালই উপকৃত হচ্ছি। এখানকার কৃষকরা যেভাবে বলে দেন সেভাবে চাষাবাদ করি তাতে ভাল ফলন পাই।

পাইকাররা কি বলেন

টাঙ্গাইলের করোটিয়া উপজেলার ক্ষুদিরামপুর এলাকার সবজি চারার ব্যাপারি আব্দুল কুদ্দুস। তিনি গত ৮ বছর আগে থেকে এ এলাকা হতে সবজির চারা নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন তার নিজ এলাকায়। তিনি ৩ মাসের এই ব্যবসা করেন। তিনি বলেন,প্রতিদিন রাতে এখানে এসে আবাসিক হোটেলে থাকেন। ভোরে ওঠে সবজির খামারে যান। নানা জাতের সবজির চারা কিনে নিয়ে নিজ এলাকায় গিয়ে দুুপুরের মধ্যে সবজির চারা বিক্রি করেন। কৃষকরা তার অপেক্ষায় থাকেন। সবজির চারা কৃষকরা তার নিকট থেকে নিয়ে বিকেলের মধ্যে জমিতে রোপন করেন। এই ব্যবসা করে বেশ ভালই লাভ হয় বলে জানান তিনি।
 
দুরের জেলায় যেভাবে পাঠানো হয়

এখানকার সবজির চারা চট্রগ্রাম জেলাতেও যায়। কার্টুনে বিশেষ কায়দায় প্যাকেট করে রাতের কোচে পাঠানো হয়। সকালে পৌছার পর চাষিরা কোচ থেকে নিয়ে গিয়ে জমিতে লাগান। এছাড়া অন্য জেলার ব্যাপারি ও কৃষকরা এসে নিজেরাই নিয়ে যান। চারা ২-৩ দিন পর্যন্ত রাখা যায় তাতে চারা নষ্ট বা পচেনা বলে উদ্যাক্তরা জানান। এছাড়া কুরিয়ারযোগেও পাঠানো হয়।

উদ্যাক্তা কৃষকরা বলেন

শাহনগর এলাকার সবজি চারার উদ্যাক্তা আলাল-দুলাল নার্সারীর মালিক ও শাহনগর সবজি চারা উৎপাদক সমিতির একাংশের সভাপতি উজ্জল হোসেন বলেন তিনি ২২ বছর যাবত সবজির চারা উৎপাদন করে আসছেন। এখানকার চারার গুনগত মান ভাল এবং ফসলের উৎপাদন বেশি হওয়ায় অন্য জেলার কৃষকদের কাছে এখানকার চারার চাহিদা বেশি। কৃষক ও ব্যাপারিরা এসে রাত্রিযাপন করে সকালে চারা নিয়ে যাচ্ছেন। এ পদ্ধতি চলছে প্রায় ২০ বছর আগে থেকেই। কোনদিন কোন কৃষক আজ পর্যন্ত কোন অভিযোগ করেনি। 

কামারপাড়া এলাকার কৃষক আবু সাঈদ বলেন,আমরা এক সময় শুধু ধানের আবাদ করতাম। আমরা জানতামনা অন্য ফসলও করা যায়। বিশেষ করে শীতকালিন নানা জাতের সবজির বিষয়ে আমাদের ধারনা ছিলনা। এক পর্যায়ে আমরা কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেরাই চারা উৎপাদন শুরু করে প্রথমে নিজেরা চাষাবাদ করি এখন করছি বানিজ্যিকভাবে। তাবে বেশ লাভবান হচ্ছি। চারা বিক্রি করে যে লাভ হয় তা দিয়ে সংসার চলছে এবং অন্য আবাদের অর্থযোগান দিতে পারছি।

উৎপাদনের পরিমান ও বেচাকেনা

শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যনুযায়ী সেখানে আগষ্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসে আগাম জাতের এবং উপযুক্ত মৌসুম সময়ে সবজির চারা উৎপাদন করা হয়। চারা উৎপাদনের পরিমান সবমিলিয়ে তিন মাসে প্রায় ৩৫ কোটি চারা উৎপাদন করা হয়। বেচাকেরা হয় আগাম জাতের চারা মরিচের প্রতি হাজার ১৫০০ টাকা। ফুলকপির ১২০০ থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা,বাঁধা কপিরও একই দাম এবং বেগুন এক হাজার টাকা ও টমেটোর চারা ১৫০০ টাকা। বীজ থেকে চারা গজানো  এবং বিক্রির উপযোগী করে তুলতে সময় লাগে ৪০ দিন। আগাম জাতের চারা অতিবৃষ্টিার কারনে এবার চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বিধায় সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে দামও বেড়েছে। অন্য সময় এই চারা প্রতি হাজার মাত্র ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। আগাম জাতের চারা এবার টিকেছে মাত্র গড়ে ২ কোটির মতো। সব মিলিয়ে সেখানে চারা বিক্রি হয় গড়ে সাড়ে ৭ কোটি টাকার।
 
ভাল ব্যবসা হয়েছে আগের বছর

চারার নার্সারী মালিক সমিতির হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অত্যান্ত ভাল ব্যবসা হয়েছে। সে সময় প্রতি সিজনে বিক্রি হয়েছে কমপক্ষে গড়ে ৯ কোটি টাকা করে। ২০২৪-২৫ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং লাগাতার বৃষ্টির কারনে উৎপাদন ও বিক্রি কমেছে প্রায় ২ কোটি টাকা। 

কর্মসংস্থান হয়েছে

ওই এলাকাকে অনেকেই চারার নগর নামেও চেনে। এর সঙ্গে যুক্ত আছে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। রাকিব হাসান নামে এক যুবক বলেন,তিনি এসএসসি পাস করার পর একটি নার্সারীতে ৫ বছর থেকে কাজ করছেন ১৩ হাজার টাকা বেতনে। বাড়িতে থেকে এই কাজ করে যে টাকা পাচ্ছেনা তা দিয়ে বেশ ভালই আছেন। তার স্ত্রীও একটি নার্সারীতে কাজ করেন।

চারার ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সেখানে বেশ কিছু দোকানপাট আবাসিক হোটেল গড়ে ওঠেছে। চারার নার্সারী পল্লীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বীজ, কীট নাশক, সারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নার্সারীসহ তাতে করে কর্মসংস্থান হয়েছে অন্ততপক্ষে ৫ হাজার মানুষের বলে জানান স্থানীয় শাহনগর বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ি সোহানুর রহমান। 

বীজ ও কীটনাশক কোম্পানি

দেশের বিভিন্ন বীজ ও কীটনাশক কোম্পানির প্রতিনিধিরা সব সময় লেগেই থাকেন সেখানে। তবে কৃষকরা বীজ বপন করার পর পরীক্ষা-নিরিক্ষা করেই তবে বীজ নেন। কীটনাশকের ক্ষেত্রেও তাই। এক কেজি মচিরের বীজ বিক্রি হয় কমপক্ষে ৭০ হাজার টাকা,কপির বীজ এক লাখ ৪০ হাজার টাকা,বেগুনের বীজ এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও টমেটোর বীজ একই দাম। এতো দামি বীজ নিয়ে কৃষক যাতে প্রতারিত না হন সে জন্য কোম্পানিগুলো তাদের প্রদর্শনী প্লট কৃষকদের ভিজিট করান। 

বীজ কোম্পানির এক প্রতিনিধি বলেন, সেখানকার উদ্যাক্তা কৃষকরা এতোটাই সচেতন যে ১০০টি বীজ নিলে অন্তত পক্ষে ৯৫টি চারা গজাতে হবে তবেই সেখানকার উদ্যাক্তা কৃষকরা বীজ নিবে নচেৎ নিবেনা। যদি কোন কারনে ৯০ টি গজায় তাহলে কৃষকদের লাভ হবেননা।
 
স্থানীয় কৃষিকর্মকর্তা

শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনা খাতুন বলেন,আশির দশক থেকে স্থানীয় কৃষকরা নিজেদের প্রয়োজনে চারা উৎপাদন শুরু করলেও বানিজ্যিকভাবে শুরু হয় দেড় থেকে দুই দশক থেকে। এখান চারার মান ভাল হওয়ায় দেশের ৩০-৩২টি জেলা থেকে কৃষকও ব্যবপারি এসে চারা নিয়ে যাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে তাদেরকে সার্বক্ষনিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে মাঝে মধ্যে ক্ষত্রিগ্রস্থও হয়। তারা আবার নানা পুষিয়ে নেন কৃষকরা। সেখানকার মাটি চারা উৎপাদনের জন্য অত্যান্ত ভাল।

প্রথম উদ্যাক্তা কৃষক

শাহনগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন প্রথম নিজের জমিতে চারার জন্য বীজ বপন করেছিলেন। এখন সেখান থেকে বানিজ্যিকভাবে সম্প্রসারণ হয়েছে। আমজাদ হোসেন বলেন,আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। আমি যুবক বয়সে আশির দশক  থেকে কৃষি কাজ করে আসছি। কিন্তু আমি দেখলাম কৃষির মধ্যে বৈচিত্র নেই একই শুধু ধান চাষের মধ্যে কৃষকরা সীমাবদ্ধ। আমি তখন শীতকালিন সবজি উৎপাদনের জন্য বীজ বপন করলাম। প্রথম বারেই বেশ ভাল ফলন হলো স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সাড়া পড়ে গেল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে যায়। এখন ছড়িয়েছে দেশব্যাপী। তিনি আরও বলেন,এখান থেকে যারা চারা নেন তাদেরকে ক্যাশ মেমো দেয়া হয়না কারন কোন নার্সারির নিবন্ধন নেই। তাতে করে ক্রেতাদের প্রতারিত হওয়ার সম্ভানা থাকে। তাই কৃষি বিভাগকে দ্রুত নিবন্ধনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন রোগমুক্ত সুস্থ সবল চারা উৎপাদনের জন্য দরকার উপযুক্ত মাটি ও দক্ষ কারিগর। যা শাজাহানপুরে রয়েছে।
 
জেলা কৃষি সম্প্রসারনের উপপরিচালক 

জেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের উপপরিচালক(ডিডি) সোহেল মো: শামসুদ্দিন ফিরোজ বলেন সেখানকার চারার বাজার আরও যেসব জেলায় বাকী আছে সেসব জেলাতেও ছড়িয়ে দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আর নার্সারিগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন,শাহনগরের চারা উৎপাদনের মতো ঘটনা দেশের আর কোথাও নেই। জেলা কৃষি বিভাগ এর জন্য গর্বিত।


ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
খাগড়াছড়িত রামছু বাজারে উপজাতি সন্ত্রাসীদের আগুন
খাগড়াছড়িত রামছু বাজারে উপজাতি সন্ত্রাসীদের আগুন
নড়াইলে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালি
নড়াইলে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালি
ডাসারে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
ডাসারে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ