• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

‘হাসিনার সঙ্গী, মাহবুব জঙ্গী’ স্লোগানে উত্তাল ইবি ক্যাম্পাস

ইবি প্রতিনিধি    ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০৬:১৫ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী শাসনামলে সাজানো ক্রসফায়ার, তথাকথিত জঙ্গি নাটক, বিরোধী মতের দমন-পীড়ন এবং শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগে সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহববুর রহমানের বহিষ্কার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। 

এসময় মিছিলে হাসিনার সঙ্গী, মাহবুব জঙ্গি; আওয়ামীলীগের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না; মাহবুবের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না; প্রক্টর মাহবুবের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও; মাহবুবের বহিষ্কার, করতে হবে করতে হবে’ নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার; ইসলামী ছাত্রশিবির, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ; ইত্যাদি স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। 

রবিবার (২৪ আগস্ট) বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়ামোড় থেকে ছাত্রশিবিরের আহ্বানে একটি মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এদের মধ্যে অধিকাংশ ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী ছিলেন। বিক্ষোভ সমাবেশে ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, অফিস সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাফি, দপ্তর সম্পাদক সহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহা. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘যারা শিক্ষার্থীদেরকে ক্রসফায়ার দেওয়ার জন্য পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে যায়, ছাত্রীদেরকে পর্দা করার জন্য জঙ্গি নাটক সাজায়, রুমে পিস্তল রেখে মামলা দেওয়ার চেষ্টা করে— তাদের দিয়ে ক্যাম্পাস কিভাবে নিরাপদ হয় আমার বুঝে আসে না। যদি এই সন্ত্রাসীদের বিচার না করেন তাহলে ক্যাম্পাসে আরও অঘটন ঘটে যেতে পারে। সব কিছুর পিছনে কলকাঠি তারাই নাড়ছে, ইবি প্রশাসন সেটা বুঝতে পারছে না।

মাহমুদুল বলেন, ‘তারা এখন বসে আছে, কাকে কিভাবে হত্যা করা যায়; কিভাবে ষড়যন্ত্র করা যায়, কাকে কিভাবে কট খাওয়ানো যায়, কাকে কিভাবে হেনস্থা করা যায় এসব কিছু নিয়েই আওয়ামী সরকারের একটা অংশ দিনরাত ব্যস্ততার সময় পার করছে।’

তিনি বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বিষয়ে বলেন, ‘শিক্ষকরা ছাত্রদের সাথে যেন ছাত্রর মত আচরণ করে সেইটা আমরা দেখতে চাই। আমার বোনদেরকে নিঃসঙ্কোচে পর্দা করতে দিতে হবে সেই অধিকার আমরা দেখতে চাই। আমাদের ছাত্র ভাইদেরকে তাদের আদর্শ চর্চার অধিকার দিতে হবে। গত শাসন আমলে শুধু ছাত্রশিবির নির্যাতিত হয়েছে ব্যাপারটা এমন নয়, নির্যাতিত হয়েছে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী’

অধ্যাপক মাহবুবর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তৎকালীন প্রক্টর মাহবুব ২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ছাত্রদের হুমকি দিয়েছিল— আন্দোলন বন্ধ না করলে তাদেরও গুম করে দেওয়া হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এমন কোনো কাজ নেই যা সন্ত্রাসী মাহবুবরা করতে পারে না। দ্বীনি শিক্ষার জন্য মসজিদে একটা মক্তব ছিল সেটাও ‘জঙ্গির প্রশিক্ষণ’ নাটক সাজিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রক্টর মাহবুব। এ ধরনের সন্ত্রাসীদের কারণে ক্যাম্পাস অনিরাপদ। আমরা সন্ত্রাসীদের ক্যাম্পাসে চাই না।’

ইবি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে মাহমুদুল বলেন, ৫ আগস্টের আন্দোলনে বিরোধিতাকারীর নাম আসছে ১৯ জনের। নাম যাদের আসছে তারা তো চুনোপুঁটি, কিন্তু রাঘববোয়ালদের কেন ধরছেন না আপনারা। শুধু আওয়ামী শাসন আমলে এমন হয়েছে ব্যাপারটা এমন নয়, আমরা এখনো ফ্যাসিবাদের শ্বাস শুরু হতে দেখছি। মাহবুবকে বহিষ্কার করুন। আপনারা করতে না পারলে আমরা তাদেরকে বয়কট এর ঘোষণা করবো। আমরা প্রশাসনকে বলি— যদি মুরুদ থাকে তাদের বিরুদ্ধে একশন নিন, বহিষ্কার করুন। আর না হলে আপনার চলে যান, আপনাদের দরকার নেই।’

তিনি ইকসু নিয়ে বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে কয়েকটা ইস্যু নিয়ে কথা বলছে, ইকসু, সাজিদ আন্দোলন। আমরা দাবি জানাচ্ছি, মেহেরবানি করে ছাত্র সংসদ ইকসু চালু করুন। দাবি একটাই ছাত্র সংসদ ইকসু চাই। এখন আপনারা আন্দোলন করলে দিবেন না-কি ঠান্ডা মাথায় দিয়ে দিবেন সিদ্ধান্ত আপনাদের।’

সাজিদ হত্যার বিচারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘আমার ভাই সাজিদ আবদুল্লাহ হত্যার বিষয়ে তদন্তের অগ্রগতি কতটুকু আপনারাই (শিক্ষার্থী) দেখতে পাচ্ছেন। প্রশাসন এর কাছে আহ্বান জানাই যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দ্রুত ফলো-আপ নিয়ে দ্রুত প্রকৃত অপরাধীদেরকে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করুন।’

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শিশুদের অংশগ্রহণে ইবিতে বৃক্ষরোপণ ক্যাম্পেইন
শিশুদের অংশগ্রহণে ইবিতে বৃক্ষরোপণ ক্যাম্পেইন
ডাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে দায়িত্ব ছেড়ে সব বলে দেবো: ঢাবি ভিসি
ডাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে দায়িত্ব ছেড়ে সব বলে দেবো: ঢাবি ভিসি
ডাকসুর ভোটকেন্দ্র স্থানান্তরের দাবি
ডাকসুর ভোটকেন্দ্র স্থানান্তরের দাবি