• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

সরকারী দলের সবাই একজোট হয়ে নির্বাচন করবে: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক    ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫১ পি.এম.
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, সরকারী দলের সবাই একজোট হয়ে নির্বাচন করবেন, কিন্তু এর বাইরে যে দলগুলো আছে তারা নির্বাচন করতে পারবে কি পারবে না তা নিয়ে রহস্য আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই সকল দলগুলো কি বাংলাদেশের সকল মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে? দেশে কি কোন বিরোধী দল বা বিরোধী কন্ঠস্বর দরকার নেই? বেশিরভাগ মানুষই কি এই কয়েকটি দলের সমর্থক? সবাই কি এই দলগুলোকেই ভোট দেবে? দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ মানে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষ এই সরকারের কর্মকান্ডের বিরোধী। 

শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকালে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান সহ নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আটককৃতদের মুক্তির দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের সভাপতির বক্তৃতায় একথা বলেন। 

 মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠির একমাত্র মুখপাত্র হচ্ছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টি এ দায়িত্ব পালন করে যাবে। আর একারণেই জাতীয় পার্টির উপর অত্যাচার ও নির্যাতন চলছে। বিগত সরকার জাতীয় পার্টির সাথে যে ষড়যন্ত্র করেছে, এই সরকারও ঠিক সেই ষড়যন্ত্রই করছে। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। শুধু আমাকে নয়, জাতীয় পার্টির অনেক নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে। বাদী, আইনজীবী ও বিচারকও জানে মামলাগুলি মিথ্যা। কিন্তু, মিথ্যা মামলা বন্ধ বা প্রত্যাহার হচ্ছে না। আমাদের সাবেক এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপু এবং মোহাম্মদপুরের জাতীয় পার্টি নেতা সেলিম প্রায় ১ বছর ধরে হাজতবাস করছে। তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিদিন আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। 

চেয়ারম্যান বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের পর একটি আরবী শব্দ উচ্চারিত হচ্ছে “ইনকিলাব”। এটাকে বলা হয় বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এই স্লোগানটি বিভিন্ন সময়ে ভারতে শোনা যায়। ইনকিলাবের নামে আবার শক্তিশালী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আবারও যদি ফ্যাসিবাদ তৈরী হয় তাহলে পরিবর্তন কি হলো? আমাদের উপর যত নির্যাতন চলবে, ততই আমরা ঘুরে দাঁড়াবো। আমাদের সাথে দেশবাসী আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। ২০২৪ সালের ১লা জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তখন ৩ জুলাই আমি সংসদে বক্তৃতায় বলেছিলাম, এই আন্দোলন হচ্ছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন। বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র হলো বৈষম্যের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পরে। 

কাদের বলেন, আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন চেয়েছিলাম, যা দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছিল না। সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের আশায় আমরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিলাম। আমাদের দাবী ছিল বৈষম্যহীন একটি সমাজ গঠন করা হোক। বেশিরভাগ মানুষ আন্দোলনে নেমেছে, জীবন দিয়েছে একটি সুন্দর নির্বাচনের জন্য। যার মাধ্যমে ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠন হবে, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। নির্বাচন হওয়ার কোন পরিবেশ আমরা দেখছি না। আমরা দেখছি, দেশে অন্যায় ও অবিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যাকে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে, জামিন দেওয়া হচ্ছে না, নির্যাতন-নিপিড়ণ করা হচ্ছে। দেশের বেশিরভাগ মানুষকে দোসর আখ্যা দিয়ে মব তৈরী করে জুলুম-নির্যাতন চলছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, যারা আমাদের নিয়োগদাতা বা অভিভাবক তাদের অধীনেই আমরা কাজ করবো। 

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, এই সরকার নিজস্ব স্টাইলে নির্বাচন করতে চাচ্ছে। আমরা মনে করি, এই সরকারের নির্বাচন করার সক্ষমতা নেই। এই সরকার নির্বাচন পরিচালনার জন্য উপযুক্ত নয়। কারণ, এই সরকার প্রশাসন, বিচার বিভাগ সহ সকল বিভাগের মনোবল ভেঙে দিয়েছে। অনেককেই মামলা দিয়ে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। যে পদগুলো খালি হচ্ছে সেখানে নিজস্ব লোকজন নিয়োগ দিয়ে দলীয়করণ করছে। মনোবলহীন ফোর্স দিয়ে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সঠিক নির্বাচন দেওয়ার ইচ্ছা কি এই সরকারের আছে? অবাধ নির্বাচন করতে চাইলে সবাইকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দিতে হবে। যদি, তথাকথিত সরকারী দলগুলোকেই নির্বাচন করতে দেওয়া হয়, তাহলে তো এই সরকার নিরপেক্ষ হলো না। সরকারী দলে যারা আছে, তাদের শুধু পুলিশ নয়, আর্মি দিয়ে প্রটেকশন দেওয়া হচ্ছে। এভাবে কি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়া সম্ভব? এখন বলছে, তারা বিচার ও সংস্কার না হলে নির্বাচনে যাবে না। সংস্কার হচ্ছে চলমান প্রক্রিয়া, যার কোন শেষ নাই। 

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, কো- চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, প্রফেসর মহসিনুল ইসলাম হাবুল, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, মেহেরুন্নেসা খান হেনা পন্নি, মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ, মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, মোঃ হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব সামছুল হক, জুবের আলম খান রবিন, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী অর্ণব, তাতী পার্টির সদস্য সচিব মোক্তার হোসেন, ওলামা পার্টির সদস্য সচিব মুফতি ফিরোজ শাহ, কৃষক পার্টির সদস্য সচিব মোঃ আব্দুস কুদ্দুস মানিক, সাংস্কৃতিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক সুজন, ছাত্র সমাজ এর যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল রেজা প্রমুখ।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনায় বিএনপির নতুন কার্যালয়
নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনায় বিএনপির নতুন কার্যালয়
বিএনপির রিল মেকিং প্রতিযোগিতা
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপির রিল মেকিং প্রতিযোগিতা
পাতানো নির্বাচনে যাব না: কাদের সিদ্দিকী
পাতানো নির্বাচনে যাব না: কাদের সিদ্দিকী