সিরাজগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় এক আসামির যাবজ্জীবন


সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার এক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন। অনাদায়ে তাকে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। একই মামলায় আরেক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম সালমা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, রায়গঞ্জ উপজেলার মোজাফফরপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার ভুইয়ার ছেলে মোঃ আবু কাছির হাসান হিরা। অপরদিকে, একই গ্রামের মোঃ ইমান আলীর ছেলে মোঃ নুরনবীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস প্রদান করেছেন।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবু কাছির হাসান হিরার ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫(এ) ধারা অনুযায়ী তার হাজতবাসের সময়কাল মূল সাজা থেকে বাদ যাবে। এছাড়া আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী ভুক্তভোগী পরিবার আসামির সম্পদ থেকে জরিমানার অর্থ আদায় করতে পারবে। বর্তমান সম্পদ থেকে আদায় সম্ভব না হলে ভবিষ্যতের সম্পদ থেকেও তা আদায়যোগ্য হবে।
মামলার এজাহার ও আদালতের রায়ে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আসামি ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে। এর ফলে তার গর্ভে সন্তান জন্ম নেয়। সন্তান অস্বীকার করলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আসামির পিতৃত্ব প্রমাণিত হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে মীমাংসার জন্য তাদের বিয়ে হয় এবং দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু এরপরও আসামি ভুক্তভোগী ও সন্তানদের অস্বীকার করলে ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা দায়ের করে।
রায়ে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ১৩ ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশু প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়ভার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে বহন করতে হবে। এই অর্থও তার বর্তমান বা ভবিষ্যতের সম্পদ থেকে আদায় করা যাবে।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আবু কাছির হাসান হিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানামূলক তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান রায়ের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এই রায় সমাজে নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের জন্য একটি কঠোর বার্তা দেবে।”
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ