মাদারীপুরে ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর বিনোদন কেন্দ্র শকুনি লেক


২০১৫ সালে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে মাদারীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে গড়ে তোলা হয় শকুনি লেক। তবে সময়ের ব্যবধানে জেলার একমাত্র বিনোদনকেন্দ্রটি এখন ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ। লেকের চারপাশে গড়ে ওঠা ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোর ব্যবহারকৃত পানির বোতল, কাগজ ও চিপসের প্যাকেট পড়ে থাকছে লেকের পানিতে। এতে পানির মান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লেকের দক্ষিণ পাশের পানিতে জমছে আবর্জনা। প্রতিদিনই ভ্যানে করে বালতি ভর্তি ময়লা সরিয়ে নিচ্ছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। অথচ লেকের চারপাশে থাকা ডাস্টবিনগুলো সত্যেও তা তেমন ব্যবহার হচ্ছে না।
জানা যায়, ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হাজারো মানুষ হাঁটাহাটি, বিশ্রাম ও বিনোদনের জন্য আসেন শকুনি লেকে। তবে লেকের পানিতে ভাসমান আবর্জনা ও দুর্গন্ধে ভোগান্তিতে পড়ছেন দর্শনার্থী ও পথচারীরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈদ, পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবসে হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় করেন লেকে। এছাড়াও সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতেও ভিড় থাকে উপচে পড়া। এই সুযোগে লেকের চারপাশে গড়ে উঠেছে শতাধিক ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান। দোকানগুলোর ব্যবহৃত সামগ্রী ঠিকমতো নিষ্পত্তি না হওয়ায় লেকের পানি হচ্ছে দূষিত। তবে দোকানিরা বলছেন, তারা নয়, দর্শনার্থীরাই ময়লা ফেলছেন।
ভ্রাম্যমাণ ফুচকা বিক্রেতা মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এখানে যারা ঘুরতে আসে তারাই লেকে ময়লা ফেলে। দোকানদাররা তাঁরা নিজেদের ব্যবহৃত ময়লা ঝুড়িতে নিয়ে যায়।
আরেক দোকানি লুৎফর মিয়া বলেন, আমি পানীয় ও আইসক্রিম বিক্রি করি। নির্দিষ্ট ঝুড়ি আছে, কিন্তু দর্শনার্থীরাই যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে। এতে আমাদেরই বদনাম হয়।
লেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী তৌহীদ চৌধুরী বলেন, প্রায়ই দেখি লেকের পানিতে ময়লা ভাসছে। এতে দুর্গন্ধও ছড়ায়। মূলত দোকানপাট থেকেই এসব ময়লা হয়।
আরেক দর্শনার্থী শামিম গাজি বলেন, প্রায়ই আমি আমার পরিবার নিয়ে লেকে ঘুরতে আসি। কিন্তু পানিতে এত ময়লা দেখে অবাক হয়েছি। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দুর্গন্ধ আরও বাড়বে।
পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী কালাম বেপারী বলেন, প্রতিদিন বালতি ভর্তি করে লেকের ময়লা পরিষ্কার করতে হয়। অথচ কেউ দায় নিচ্ছে না।
এ বিষয়ে মাদারীপুর পৌরসভার প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, অবৈধ ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো উচ্ছেদ করলেই সমস্যা কমবে। একাধিকবার পৌরসভা থেকে উচ্ছেদ করা হলেও তারা আবার ফিরে আসে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ দিন একটানা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালালে লেক পরিচ্ছন্ন থাকবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ