• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

শেখ হাসিনাকে রক্ষায় আন্দোলন

আন্দোলনে জড়িত শিক্ষা কর্মকর্তাদের তদন্ত নথি গায়েব

   ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৫:০৪ পি.এম.
ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনিয়ম-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত শিক্ষাক্যাডারের কর্মকর্তারা এতটাই অন্ধ মোহে ছিলেন যে, চাকরীবিধি লঙ্ঘণ করে সরাসরি নেমে পড়েন, শেখ হাসিনার সরকারকে রক্ষা করার আন্দোলনে। গেলো বছরের ৪ আগস্টের ঘটনা হলেও, বেশ দেরিতেই যা নিয়ে টনক নড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। শুরু হয় অনুসন্ধান, কিন্তু বিপত্তি সেখানেও। প্রথম দফার অনুসন্ধানে ১৬ জনকে শোকজের পরই লাপাত্তা হয়ে যায় অনুসন্ধানের ফাইল। বিশ্লেষকদের মতে, দলীয় লেজুড়বৃত্তিতে জড়ালে উচিত চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে নামা। 

সময়টা ১৯৯৬। সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আমলাদের মোটাদাগে অংশগ্রহণের ঘটনার শুরুটা তখনই। ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগকে সমর্থনে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে গড়ে ওঠে জনতার মঞ্চ। এরপর আমলারা বিএনপি, আওয়ামী লীগ নির্বিশেষে ক্ষমতাসীন দলের তাবেদারি করেছেন বহুবার। যার সবশেষ উদাহরণ, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থান। হাসিনা সরকারের সমর্থনে অন্য বহু ক্যাডারের মতোই মাঠে নামেন শিক্ষাক্যাডারের কর্মকর্তারাও। ৪ আগস্ট, শিক্ষা প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র শিক্ষাভবনে বের হয় জুলাই আন্দোলনবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল। 

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিষয়টি নিয়ে গেলো সেপ্টেম্বরে তদন্তে নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। চিহ্নিত করা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত ৩৭ কর্মকর্তাকে। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। তবে, মিছিলে অংশ নেয়া পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ১৬ জনকে শোকজের পর, রহস্যজনকভাবেই বন্ধ হয়ে যায় তদন্ত কার্যক্রম।

মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশান উইংয়ের পরিচালক কাজী মো. আবু কাইয়ুম বলেন, ৫ তারিখের আগে ফ্যাসিবাদের দোসর যারা বার বার বিভিন্নভাবে বলার পরও বহাল তবিয়তে আছেন। এটার ব্যখ্যা মন্ত্রণালয় দিতে পারবে। 

সেই তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, শিক্ষা ভবনে জুলাই অভ্যুত্থান বিরোধী আন্দোলনে অর্থায়ন করেন মাউশির পরিকল্পনা শাখার পরিচালক একিউএম শফিউল আজম। যিনি এখনো আছেন বহাল তবিয়তে।

৩ আগস্ট রাতে বৈঠক করে আন্দোলনের পরিকল্পনা যারা করেছিলেন, তাদের মধ্যে সাবেক পরিচালক প্রবীর কুমার, প্রশাসন ও কলেজ শাখার পরিচালক শাহেদুল খবির, মাধ্যমিক শাখার পরিচালক সৈয়দ জাফর আলী ও প্রশাসন শাখার উপ-পরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসের বদলি হলেও মাউশিতে রয়ে গেছে বিপুল প্রভাব। আর সহকারী পরিচালক তানভীর হোসেন নিজ ইউং এই এখনো দায়িত্বে রয়েছেন। সেসময় পুরো ঘটনার সার্বিক সমন্বয় করেন সাবেক মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ। যিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের আত্মীয়।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ একেএম সাইফুল বলেন, রাজনৈতিক প্রবণতার কারণটা হচ্ছে এখানে অনেক কিছু পাওয়া যায়। একজন সরকারি কর্মচারীকে মাথার মধ্যে থাকা দরকার যে তিনি আজীবন সরকারি কর্মচারী। 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই দলীয়করণ করা হয়েছিল প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে দেয়ার জন্য। যাতে করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না যায়। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারের জন্য, জাতীয় ঐক্যমত্যের জন্য কাজ করছেন তাদের উচিত হবে আরও দৃঢ় শক্ত অবস্থান নিয়ে এ ধরণের প্রবণতা থেকে দূরে থাকা। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম দফার অনুসন্ধানের পর ব্যবস্থা নেয়া হবে আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ঢের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগও।

ভিওডি বাংলা/ এমপি

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শিক্ষক নিয়োগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নতুন পরিপত্র
শিক্ষক নিয়োগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নতুন পরিপত্র
এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণা
এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণা
গণবিজ্ঞপ্তির আলোকে হবে শিক্ষক নিয়োগ
গণবিজ্ঞপ্তির আলোকে হবে শিক্ষক নিয়োগ