ঝালকাঠিতে ইতিহাস হারানোর শঙ্কায় শাহ সুজা মসজিদ


ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নলছিটি-বরিশাল সড়কসংলগ্ন মল্লিকপুর এলাকায় প্রাচীন মসজিদটির অবস্থান। এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
জানা যায়, শাহ সুজা ১৬১৬ সালের ২৩ জুন ভারতের আজমিরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মোগল সম্রাট শাহজাহান ও রানি মমতাজ মহলের দ্বিতীয় পুত্র এবং চতুর্থ সন্তান ছিলেন। শাহজাহানের সৎমা সম্রাজ্ঞী নূরজাহান শাহ সুজাকে তার জন্মের পর দত্তক নেন। তার উচ্চ পদমর্যাদা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং জাহাঙ্গীরের স্নেহের কারণে তাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। পিতামহ জাহাঙ্গীরের প্রিয় হওয়ায় শাহ সুজা সম্রাজ্ঞীর জন্যও ছিলেন গৌরবের প্রতীক। তিনি ১৬৩৯ থেকে ১৬৬০ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। ১৬৪৮ সালে সুগন্ধা নদীর তীরে নলছিটির মল্লিকপুর এলাকায় তার নামে নির্মিত হয় এই শাহ সুজা মসজিদ।
অসাধারণ নির্মাণশৈলীর এই এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি মোগল আমলের এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। ৩০ ফুট লম্বা ও ১৭ ফুট চওড়া মসজিদটি মোগল স্থাপত্যশৈলীর চমৎকার নিদর্শন। ইতিহাস ও ঐতিহ্যপ্রেমীরা প্রায়ই দেশের দূরদূরান্ত থেকে মসজিদটি দেখতে আসেন। তবে সঠিক নজরদারি, সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে এর স্থাপত্যকলা ধ্বংসের পথে। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে মসজিদটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ঐতিহাসিক স্থাপনাটির জরুরি সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন মুসল্লি ও পর্যটকরা।
মল্লিকপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ মজিবুর রহমান মল্লিকসহ অধিকাংশ প্রবীণ জানান, মোগল সম্রাট শাহ সুজা দক্ষিণ বঙ্গের নৌপথে জলদস্যু দমনে সুগন্ধা নদীতীরবর্তী মগড় ইউনিয়নসংলগ্ন এলাকায় একটি দুর্গ গড়ে তোলেন। স্থানীয় মুসল্লিরা তার আগমনের খবর পেয়ে একটি মসজিদ নির্মাণের আবেদন করেন। পরে সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে শাহ সুজা মসজিদটি নির্মাণ করে দেন।
মসজিদের মুসল্লি মোঃ আলামীন গাজী বলেন, প্রাচীন এই মসজিদটি যে কোনো মূল্যে সংরক্ষণ করা উচিত। কয়েক শতাব্দী আগের মোগল নির্মাণশৈলী এখনও মুগ্ধ করে। তবে সংস্কার না হলে স্থাপনাটি আর বেশিদিন টিকবে না।বর্তমানে এখানে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং জুমার নামাজ আদায় করেন স্থানীয় মুসল্লিরা।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান মল্লিক বলেন, মোগল সম্রাট শাহ সুজার আমলে নির্মিত এই মসজিদটি নলছিটি উপজেলার প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতীক। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাধ্যমে মসজিদটিকে প্রাচীন পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা জরুরি।
নলছিটি পৌরসভার একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি জানান, মসজিদটি মোগল আমলে নির্মিত। আমাদের পূর্বপুরুষরা এখানে নামাজ পড়তেন, তখন আশপাশে মসজিদের সংখ্যা ছিল কম। সংরক্ষণের অভাবে মসজিদটির অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, যথাযথ নিয়মে আবেদন করলে সংস্কারের জন্য সুপারিশ করা সম্ভব। তবে প্রাচীন নিদর্শনগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
মাদারীপুরে ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু
মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরে চলন্ত ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে আয়শা আক্তার (২২) …

শিবালয়ে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ না পাওয়ায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় নালী বড়রিয়া কৃষ্ণ চন্দ্র উচ্চ …

কুড়িগ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে ১মণ গাঁজা উদ্ধার
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম জেলা শহরের সুজামের মোড় এলাকায় ১ মণ …
