• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

দুর্যোগকালে আলোর দিশারী লাইট হাউজ

   ১১ জুলাই ২০২৫, ০২:৩১ পি.এম.
আলোর দিশারী লাইট হাউজ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের জনপদে যখন বন্যা, নদীভাঙন বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেয়, তখন সাধারণ মানুষ ভয়ের মধ্যে পড়ে। সেই সময়ে পাশে দাঁড়ায় যারা, তারা সত্যিকারের মানবিক শক্তি। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লাইট হাউজ এমনি এক প্রতিষ্ঠান। যারা শুধু ত্রাণ সামগ্রী নয়, দেয় সাহস, সহানুভূতি ও সহায়তা। ১৯৯২ সাল থেকে এই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটি নারী, কিশোর, শিশু, হিজড়া ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং অধিকার রক্ষায় কাজ করে আসছে। বাংলাদেশের প্রান্তিক, দুর্যোগ প্রবণ ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর পাশে থেকে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে লাইট হাউজ। বর্তমানে লাইট হাউজ বাস্তবায়ন করছে  ‘Empowering Communites for Inclusive Disater Resilience’ ACSO-Media Partnership to Protect Safety of Women and Girls. নামের একটি প্রকল্প, যার লক্ষ্য হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মানসিক স্বাস্থ্য ও সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। প্রকল্পটি কুড়িগ্রাম জেলার ৫টি উপজেলা সদর, রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারী ও চর রাজিবপুরে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এখানে ৩৫টি ইউনিয়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ৭০ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক ভলান্টিয়াররা কাজ করছে মাঠ পর্যায়ে।

লাইট হাউজ বিশ্বাস করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কমিউনিটির সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। তাই প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক, যুব সমাজ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও বিভিন্ন সুশীল সমাজের সদস্যদের যুক্ত করে গড়ে তুলেছে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। তারা দুর্যোগ প্রস্তুতি, দুর্যোগ পরবর্তী সহিংসতা, প্রয়োজনীয় তথ্য পৌছে দেওয়া। নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলা করার জন্য মোবাইল অ্যাপ, বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সচেতন করে যাচ্ছে। প্রকল্পের একটি ব্যতিক্রমধর্মী দিক হলো এটি মিডিয়া পার্টনার শিপ ভিত্তিক। এর প্রেক্ষিতে লাইট হাউজ কর্তৃক আয়োজিত দুর্যোগকালীন সময়ে জেন্ডার সংবেদনশীল ও রিপোটিং বিষয়ক জাতীয় পর্যাযের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবক নাসরিন ইসলাম শিলা বলেন- আমি এই প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার পর দেখেছি দুর্যোগের সময় শিশু ও প্রতিবন্ধীরা কিভাবে সবচেয়ে বিপদে পড়ে। আগে এ সব বিষয় নিয়ে কেউ তেমন ভাবতো না। আমরা এখন ইউনিয়ন পর্যায় সচেতনতা করছি, পরিবারগুলোকে জানাচ্ছি কিভাবে দুর্যোগের সময় নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হয়। এই কাজের মাধ্যমে আমি নিজেও অনেক কিছু শিখেছি, মানুষকে সাহায্য করতে পারছি এবং নিজের এলাকার জন্য কিছু করতে পারছি। এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। 

আলিফা আইনুর নাহার সৃষ্টি বলেন- এই প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় আমার জীবনে একটা নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। আগে আমাদের কেউ গুরুত্ব দিতো না, এখন আমি নিজেই ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদেরকে নিয়ে কাজ করছি। 

দুর্যোগকালীন সময়ের সামগ্রীক পরিস্থিতির উপর প্রতিবেদনের জন্য নির্বাচিত সাংবাদিকদের ফেলোশীপ প্রদান করা যারা বিভিন্ন প্রতিবেদন ও সচেতনতামূলক কনটেন্টের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করছে। লাইট হাউজের প্রধান নির্বাহী হারুন অর রশিদ বলেন- লাইট হাউজের কার্যক্রম শুরু থেকেই সমাজের উপেক্ষিত সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পাশে দাড়ানোর লক্ষ্যে পরিচালিত হয়ে আসছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় শিশু, প্রতিবন্ধী, হিজড়া ও অন্যান্য প্রান্তিক মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় আমরা সবসময় অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব। প্রকল্পটি যদি ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদে সম্প্রসারিত হয় তাহলে কুড়িগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী সহায়তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।


ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যারা বিএনপি করেন, তাকে সিজদা করতে হবে : রেজাউল করিম
যারা বিএনপি করেন, তাকে সিজদা করতে হবে : রেজাউল করিম
জামায়াত অফিস ভাঙচুরের মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
জামায়াত অফিস ভাঙচুরের মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ায় আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
কুষ্টিয়ায় আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত