নির্বাচন ঘিরে আসন পুনর্বিন্যাসে সতর্কতার তাগিদ


নিজস্ব প্রতিবেদক
২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) করা সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ নিয়ে এখনও বিতর্ক আছে। সেসময় আওয়ামী লীগকে সুবিধা দিতে ইসি মনমতো সীমানা ঠিক করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এবার সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে সতর্কতার সঙ্গে আসন পুনর্বিন্যাসের তাগিদ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বিগত পাঁচ নির্বাচনের সীমানা পরিবর্তনের তুলনামূলক বিবরণী প্রস্তুত করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে সবচেয়ে জটিল কাজ হবে এই সীমানা নির্ধারণ। তাই জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং প্রশাসনিক বাস্তবতা বিবেচনায় একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার উদাহরণ টেনে বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্রিটিশ আমল থেকে আলাদা দুই উপজেলা হলেও ২০০৮ সালে হঠাৎ সেগুলো একীভূত করে একটি আসন করা হয়। এতে দুই উপজেলার উন্নয়ন ও জনসেবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে একই জেলার কেরানীগঞ্জের আয়তন কম হওয়া সত্ত্বেও দুটি আসন বরাদ্দ করা হয়েছে, যা চরম বৈষম্যের উদাহরণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘দুই উপজেলার কাজ একজন এমপি কীভাবে সামাল দেবেন?’ এই প্রশ্ন থেকে বোঝা যায়, মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছেন।
এমন বৈষম্যের আরেকটি দৃষ্টান্ত কুমিল্লা-৯ আসন। নির্বাচন পূর্ববর্তী সীমানা পুনর্বিন্যাসে আসনটি ভেঙে তিনটি নতুন আসনে যুক্ত করা হয়। সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমার নিজের ইউনিয়ন অন্য আসনের সঙ্গে যুক্ত করে আমাকে আসনবিহীন করে রাখা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক।’
২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রায় দেড়শ’ আসনের সীমানা পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক বাস্তবতার ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ জরুরি। শুধু জনসংখ্যা নয়, ভৌগোলিক অখণ্ডতাও দেখতে হবে।’
বিশ্লেষক বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন, ‘এই দায়িত্ব একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে দেওয়া উচিত, যেখানে ভূগোলবিদ, জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্টরা থাকবেন। সংবিধান সংশোধন সম্ভব না হলেও ইসি চাইলে নিজ উদ্যোগে কমিটি গঠন করতে পারে।’
ইসি সূত্র জানায়, ২০০১, ২০০৮, ২০১৩, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের আসন সীমানার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৮০টি আসনের সীমানা নিয়ে ৭০০টিরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। এবার জনশুমারির ফলাফলের ভিত্তিতে শহরের আসন কমানো এবং গ্রামাঞ্চলে আসন বাড়ানোর ইঙ্গিত মিলেছে।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো বড় শহরে অনুপাত অনুযায়ী বেশি আসন দিলে গ্রামাঞ্চলের মানুষের প্রতিনিধিত্ব সংকুচিত হবে। তাই একটি ফর্মুলা নির্ধারণ জরুরি।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সীমানা পুনঃনির্ধারণের কাজ যেন কোনোভাবেই বিতর্কিত না হয় এবং পূর্বের ভুলের পুনরাবৃত্তি রোধ হয়, সেজন্য নির্বাচন কমিশনের এখনই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।
ভিওডি বাংলা/ডিআর
ড. ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণার ইচ্ছা নেই: সরকারের বিবৃতি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে "জাতীয় সংস্কারক" …

এনবিআরের ৮ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর বিভাগের পাঁচ যুগ্ম কর …
