• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

বাবার শূন্যতা প্রতিক্ষণে অনুভব করি: শামা ওবায়েদ

   ১৫ জুন ২০২৫, ১০:৪৯ এ.এম.

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ 

কে এম ওবায়দুর রহমান। দেশের একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিক, ছিলেন বিএনপির মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী। আইয়ুববিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অংশ নিয়েছেন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে, ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ১৯৪০ সালের ৫ মে ব্রিটিশ ভারতের পূর্ব বাংলার ফরিদপুরের নগরকান্দার লস্করদিয়ায় জন্ম নেওয়া মানুষটি ইন্তেকাল করেছেন ২০০৭ সালের ২১ মার্চ। অসংখ্য স্বজন, গুণগ্রাহী, নেতাকর্মী রেখে বিদায় নিয়েছেন তিনি। এতসব পরিচয়ের বাইরেও ওবায়দুর রহমানে ছিলেন একজন বাবা। একমাত্র কন্যা তরুণ রাজনীতিক শামা ওবায়েদ বাবার কাছ থেকে দেখে শিখেছেন কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। রাজনীতির কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে কীভাবে এগিয়ে যেতে হয় তাও শিখেছেন বাবাকে দেখে। বিশ্ব ‘বাবা দিবসে’ বাবাকে নিয়ে ঢাকা মেইলের সঙ্গে স্মৃতিচারণ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

শামা ওবায়েদের বাবার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সন্তানের কাছে সারাবছরই বাবা-মা দিবস। আমার বাবা আমার জন্য আইডল। আমি বাবার কাছ থেকে অনেক অনেক কিছু শিখেছি। যেটা বলে বোঝানো মুশকিল। তিনি অন্তত সিম্পল ছিলেন। উনি গণতন্ত্রমনা মানুষ ছিলেন। মানুষকে ভালোবাসতেন। মানুষের জন্য করতে ভালোবাসতেন। নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতেন। বদলে কিছু চাইতেন না। তিনি রাজনীতি গিয়ে বহুবার জেলও খেটেছেন।’

বাবার শূন্যতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাবা দেশকে ভালোবাসতেন। দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন। বাবার মধ্যে কোনোদিন লোভ দেখিনি। এটা আমি তার সন্তান হিসেবে ধারণ করার চেষ্টা করছি। বাবাকে খুব মিস করি। বাবা বেঁচে থাকলে রাজনৈতিক সমস্যার সময় হয়তো বাবা দেশের জন্য অনেক কাজ করতে পারতেন। ভালো ভূমিকা রাখতে পারতেন।

শামা ওবায়েদ বলেন, যেহেতু বাবা আজ নেই, সেই চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। বাবার চলে যাওয়ায় তার নির্বাচনী এলাকার মানুষ তো অনুভব করেই। তার মৃত্যুর পরে সবাই এসে আমাকে বলেছে আমাদের মাথার ওপর বটগাছটা তো চলে গেছে। আমরা এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো? তিনি যখন মারা গেছেন তখন দেশের অনেক জায়গা থেকে এসেছেন। কারণ, তিনি কোনো না কোনোভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। মাঝেমধ্যে ভাবি একজন মানুষ কীভাবে এত কাজ করতেন, এত মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। এমন রাজনীতিবিদ বিরল। সন্তান হিসেবে বাবার শূন্যতা প্রতিক্ষণে অনুভব করি।

বাবা থাকলে সন্তানদের জীবন যে সহজ হয়ে যায় সে কথা তুলে ধরে তরুণ এই রাজনীতিক বলেন, বাবা একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে ব্যস্ত মানুষ ছিলেন। তার ঘটনাবহুল জীবন ছিল। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন ছিলেন। তারপরও একজন বাবা থাকা, না থাকার মধ্যে অনেক অনেক পার্থক্য। আমি যেহেতু একমাত্র সন্তান, বাবাকে প্রতি মূহুর্তে ভীষণ মিস করি। উনি থাকলে হয়তো ব্যক্তিগতভাবেও আমার জীবনের অনেক কিছু ভিন্ন হতো। উনি থাকলে রাজনীতি করতেন। আমার রাজনীতিতে তিনি হতেন পথপ্রদর্শক। আর বাবা থাকলে অনেক সমস্যার সমাধান তো এমনিতেই হয়ে যায়।

শৈশবে স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বাবার ১৯৭৫-৭৬ সালের দিকে বাবার ডায়াবেটিকস ধরা পড়ে। অনেক আগে থেকেই বাবা প্রচণ্ড আম খেতে পছন্দ করতেন। মা যখন স্কুলে থাকতেন তখন আমি আর বাবা মিলে লুকিয়ে লুকিয়ে ঝুড়ি ভরে আম খেয়ে ফেলতাম। এটা খুব মনে পড়ে আমার।

শামা ওবায়েদ বলেন, বাবার জেলে থাকার সময়টা অনেক কষ্টের হলেও আমার জন্য এটা স্মৃতি হয়ে আছে। আমরা জেলখানায় বাবার সঙ্গে দেখা করতে যেতাম। বাবা তো সব আমলেই জেল খেটেছেন। ওনাকে দেখেছি একটা মানুষ কতটা স্ট্রং থাকতে পারেন। আমাদেরকে উল্টো তিনি সান্ত্বনা দিতেন।

বাবার স্মৃতি ধরে রাখার চেষ্টা করছেন জানিয়ে ওবায়দুর রহমানের একমাত্র কন্যা বলেন, বাবা যখন বেঁচে ছিলেন তখন কোরবানির ঈদ সবসময় গ্রামে করতেন। আমাদের কাজিনরা সবাই থাকতেন। অনেকগুলো গরু জবাই হত। বাবা বসে বসে দেখতেন। আমিও সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করছি। প্রতিবছর গ্রামে কোরবানির ঈদ করার চেষ্টা করি। এবারও করেছি। সন্তান হিসেবে বাবার জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন।

ভিওডি বাংলা/এম 

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
লন্ডনের ‘একান্ত বৈঠক’ বিষয় ও সিদ্ধান্ত পরিস্কার করতে হবে- রেজাউল করীম
লন্ডনের ‘একান্ত বৈঠক’ বিষয় ও সিদ্ধান্ত পরিস্কার করতে হবে- রেজাউল করীম
সংসদে সরাসরি ভোটে ১০০ নারী এমপি প্রয়োজন: সারজিস
সংসদে সরাসরি ভোটে ১০০ নারী এমপি প্রয়োজন: সারজিস
মোস্তফা মোহসীন মন্টু আর নেই
মোস্তফা মোহসীন মন্টু আর নেই