• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

কুমিল্লায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতার গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর

   ১২ জুন ২০২৫, ০৪:০৮ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির আরেক পক্ষের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় একটি হোটেলেও ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা।

মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে লালমাই উপজেলার ভুশ্চি বাজারে অবস্থিত আবদুল করিম মজুমদার মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। 

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বুধবার দুপুরে উপজেলার ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবদল নেতা মো. জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আট জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন- লালমাই উপজেলার পরতী গ্রামের মৃত মন্তাজ উদ্দিনের ছেলে মো. ফরহাদ উদ্দিন (৪৭), জামুয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে জাকির হোসেন (৪০), মাওলানা আব্দুল লতিফের ছেলে কাজী জাফর আহম্মদ রাজন (৩৭), মৃত আলী আশ্রাফ মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন (৪৫), আমুয়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে আবু হানিফ (৩৩), আব্দুল বারিকের ছেলে ডা. জুবায়ের (২৭), সুলতান আহম্মদের ছেলে জয়নাল কাজী (৩৭), রহমতপুর চেঙ্গাহাটা গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে আবুল হাশেমসহ (৫২) অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বাগমারা উত্তর-দক্ষিণ, পেরুল উত্তর-দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে ভুশ্চি বাজার হয়ে মোবাশ্বের আলম নাঙ্গলকোটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ভুশ্চি বাজার পৌঁছেই মাগরিবের নামাজ শেষে স্থানীয় করিম মজুমদার মার্কেটে অবস্থিত মেজবান হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে বিকালের নাস্তা করছিলেন তিনি। এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরীর কয়েকজন অনুসারী সম্প্রতি মোবাশ্বের আলমের একটি বক্তব্যে ‘কুমিল্লা নিয়ে কটূক্তি কেন করা হলো’ এর কারণ জানতে চান। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী ওই রেস্টুরেন্টে হামলা চালায়। পরে হোটেলের কাছে রাখা মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার গাড়ি ভাঙচুর করেন তারা। মোবাশ্বের ভূঁইয়ার ব্যবহৃত ব্যক্তিগত গাড়ির গ্লাসগুলো ভেঙে ফেলে তারা। একইসঙ্গে করিম মজুমদার মার্কেট ও মেজবান হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। 

মোবাশ্বেরের অনুসারীদের ভাষ্য, লালমাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফরহাদ উদ্দিনের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ফরহাদকে। ফরহাদ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরীর অনুসারী। ২০১৮ সালে দলীয় মনোনয়নে সর্বশেষ এ আসনে নির্বাচন করেন মনিরুল হক; এবারও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা ফরহাদ উদ্দিন বলেন, আমি ঘটনাস্থলের পাশে মসজিদে নামাজ আদায় করে বের হয়ে হট্টগোলের আওয়াজ শুনি। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টি আসে এবং বিদ্যুৎ চলে যায়। কিছু যুবক গাড়ি ও হোটেলে ভাঙচুর করে। এ সময় আমি দৌড়ে গিয়ে দু’পক্ষকে সরিয়ে দিই। হামলা নয়; রক্ষার চেষ্টা করেছি। ঘটনার সঙ্গে ন্যূনতম সম্পর্ক নেই আমার। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে।

মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার ভাষ্যমতে, কী কারণে নিজ দলের লোকজন তার গাড়ি ও স্থানীয় একটি হোটেল ভাঙচুর করেছে সেটি জানেন না তিনি। হামলার সময় নিরাপদ করে তাকে সরিয়ে নেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

হামলার বিষয়ে মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, হামলার সঙ্গে যারা জড়িত আছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পুলিশকে। এ ছাড়া দল থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। দলের কেউ জড়িত থাকলে রিপোর্ট পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে লালমাই উপজেলা বিএনপি। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ করিম স্বাক্ষরিত তদন্ত কমিটির সদস্য পদে আছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার উল্লাহ, জাহাঙ্গীর হোসাইন সর্দার ও সদস্য আবদুল খালেক। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ওসি মো. শাহ আলম জানান, মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে এখনো কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

ভিওডি বাংলা/ডিআর

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাজাপুরে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
রাজাপুরে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
যমুনা সেতুর দুই প্রান্তে ৩০ কিমি যানজট
যমুনা সেতুর দুই প্রান্তে ৩০ কিমি যানজট
সিরাজগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানে আটক ১৭
সিরাজগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানে আটক ১৭