• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

ধর্ম কোনো টিকিট বিক্রির বিষয় নয়: আলাল

নিজস্ব প্রতিবেদক    ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৬ পি.এম.
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল-ছবি-ভিওডি বাংলা

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মন্তব্য করেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সবচেয়ে উদার ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল বিএনপি বলেই ১৯৭১ সালের আত্মসমর্পণকারী শক্তিগুলো আজ রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (আইইবি)-এ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

ধর্মকে ব্যবসার হাতিয়ার বানানোর কঠোর সমালোচনা করে আলাল বলেন, ধর্ম কোনো টিকিট বিক্রির বিষয় নয়, না জান্নাতের, না জাহান্নামের। ধর্ম হলো হৃদয়ের বিষয় এবং জীবনাচরণের অংশ। যারা ধর্মের নামে ব্যবসা করছে, তারা শিরক, বিদআত ও নাফরমানিতে লিপ্ত।

তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে শুধুমাত্র একটি দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করলে ইতিহাস ও বাস্তবতার প্রতি অবিচার করা হবে। ১৯৭১ সালের শুরু থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের নেতৃত্বদানের উপযোগী মেধাবী মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছিল, যা ছিল একটি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার নীলনকশা।

আলাল বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী মূলত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অক্সিলারি ফোর্স হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ দলিলেও অক্সিলারি প্যারামিলিটারি ও পলিটিক্যাল ফোর্সের উল্লেখ রয়েছে। ফলে কারা এই হত্যাযজ্ঞে যুক্ত ছিল, তা বুঝতে দীর্ঘ তর্ক-বিতর্কের প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, যখন কোনো রাষ্ট্র তার জনগোষ্ঠীর একটি অংশকে হত্যাযোগ্য বলে বিবেচনা করে, তখন সেই রাষ্ট্র ফ্যাসিস্ট শাসকে পরিণত হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেই পথেই হেঁটেছিল।

আলাল অভিযোগ করেন, সে সময় ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খান, ভুট্টো ও গভর্নর এম এ মালিকসহ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। একই সঙ্গে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়ে তিনি নিজে আত্মসমর্পণ করেছিলেন এবং তার পরিবার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় ছিল।

তিনি আরও বলেন, হাজারো মানুষ শহীদ হয়েছে, লাখ মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছে। অথচ যারা সেই অপরাধে যুক্ত ছিল, তারা আজও নতুন রূপে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে আলাল বলেন, অধ্যাপক গোবিন্দচন্দ্র দেব, শহীদুল্লাহ কায়সার, আলতাফ মাহমুদসহ অসংখ্য মানুষকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। জহির রায়হানের নিখোঁজের ঘটনাও স্বাধীন বাংলাদেশে একটি ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।

ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বীর উত্তমের শাহাদাতের কথা স্মরণ করে আলাল বলেন, ‘আজকের দিনটি একদিকে শোকের, অন্যদিকে গৌরবের।’

তিনি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে সার্বভৌমত্ব রক্ষা কঠিন। এই দায়িত্ব এখন নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ধানের শীষ বুকে নিয়েই আমি জন্মেছি, এই মাটিতেই মরতে চাই। বেগম খালেদা জিয়া, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এবং আগামীর নেতৃত্ব তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি সুশৃঙ্খল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
উন্নত চিকিৎসায় সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে ওসমান হাদিকে
উন্নত চিকিৎসায় সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে ওসমান হাদিকে
এলাকার উন্নয়নে ঐক্যের আহ্বান হাবিবের
ঢাকা-৯ এলাকার উন্নয়নে ঐক্যের আহ্বান হাবিবের
বাংলাদেশের মানুষ অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না
বাংলাদেশের মানুষ অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না