• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১
টপ নিউজ
ধর্মকে রাজনীতির অস্ত্র বানানো বিশ্বাসঘাতকতা: আমিনুল হক চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়ায় ১২ দলীয় জোটের তীব্র নিন্দা গণতন্ত্র রক্ষায় তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহালের রায় ইতিবাচক: রিজভী মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে স্বতন্ত্র হলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্বাচন করতে দেয়া হবে না তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়ে যা বললেন খসরু ‘শুটার জনি’র সঙ্গে ৩০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়: র‌্যাব নারীদেরকে পিছনে রেখে আমরা এগিয়ে যেতে পারব না: ধর্ম উপদেষ্টা প্রচারে তারেক ও জিয়ার ছবি ব্যবহার করা যাবে না: এনসিপি

পোড়ানোর মামলায় রাজসাক্ষী আবজালুলের জেরা ঘিরে ট্রাইব্যুনালে হট্টগোল

নিজস্ব প্রতিবেদক    ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০১:২২ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আশুলিয়ায় ছয় তরুণের লাশ পোড়ানোর মামলায় রাজসাক্ষী এসআই শেখ আবজালুল হকের জেরা চলাকালীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ ঘটনা ঘটে।

অন্য সদস্য হলেন-জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। 
 
এদিন সাড়ে ১০টার পর আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া রাজসাক্ষী আবজালুলের জেরা শুরু হয়।
 
জেরার একপর্যায়ে সাক্ষীকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট থানার কোনো পুলিশ মারা গেছেন কিনা।

জবাবে রাজসাক্ষী বলেন, না। তবে একজন মারা গেছেন। তিনি অন্য ইউনিটের। যার তদন্তে ছিলাম আমি। কিন্তু শেষ করতে পারিনি।

এমন প্রশ্নে আপত্তি জানিয়ে প্রসিকিউশন থেকে বলা হয়, এমন প্রশ্ন এখানে আসবে না।

এ নিয়ে প্রসিকিউশনের সঙ্গে ডিফেন্স আইনজীবীর প্রায় ঘণ্টাখানেক তর্কাতর্কি চলে। একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনালের হস্তক্ষেপে থামেন তারা।

এর আগে, গতকাল বুধবার এ মামলায় ২৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে মুখ খোলেন আবজালুল। রাজসাক্ষী হয়ে পুরো সত্য উদঘাটনের কথা ছিল তার। তবে অনেক কিছুই যেন চেপে রেখেছেন তিনি। ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে বহু তথ্য সামনে আসেনি বলেও মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। যদিও রাজসাক্ষী হিসেবে নিজের জানা সবকিছুই প্রকাশ করেছেন বলে দাবি প্রসিকিউশনের।

এদিন বেলা ১১টায় সাক্ষীর ডায়াসে ওঠেন আবজালুল। এরপর পরিচয় দিয়ে সাক্ষ্য শুরু করেন। মিনিট পঞ্চাশেকের মধ্যেই তার জবানবন্দি সম্পন্ন হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট থানার সামনে লাশ পোড়ালেও নিজ চোখে দেখেননি তিনি। থানায় অস্ত্র-গুলি জমা দিতে গেলে ১৫ আগস্ট অন্যের মুখে শোনেন তিনি। অর্থাৎ ৫ আগস্ট লাশ পুড়িয়েছিলেন ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ। সবশেষ তিনি ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

চলতি বছরের ২১ আগস্ট এ মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। ওই সময় উপস্থিত আট আসামির সাতজনই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। 

তবে দোষ স্বীকার করেন এসআই শেখ আবজালুল হক। একইসঙ্গে রাজসাক্ষী হতে চেয়ে মামলার ব্যাপারে যা জানেন সব আদালতের কাছে বলতে চেয়েছেন। পরে তার দোষ স্বীকারের অংশটুকু রেকর্ড করা হয়। একইসঙ্গে লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজসাক্ষী হওয়ার অনুমতি পান তিনি।

গত ১৮ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও বিশেষ পরিস্থিতির কারণে হয়নি। যদিও আসামিদের হাজির করা হয়েছে। ১২ নভেম্বরও একই কারণে সাক্ষীকে হাজির করেনি প্রসিকিউশন। ৫ নভেম্বর ২২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন প্রত্যক্ষদর্শী শাহরিয়ার হোসেন সজিব। তার সামনেই একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এমনকি তার বন্ধু সাজ্জাদ হোসেন সজলকেও আগুনে পুড়িয়ে দেয় পুলিশ।

৩০ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন গুলিবিদ্ধ হওয়া ভুক্তভোগী সানি মৃধা। ২১ নম্বর সাক্ষী হিসেবে দেওয়া জবানবন্দিতে পুলিশের গুলিতে নিজে আহত হওয়ার কথা জানান তিনি। একইসঙ্গে গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ার নির্মমতার দৃশ্যের বিবরণ দেন। ২৯ অক্টোবর জব্দতালিকার সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আশুলিয়া থানার এসআই মো. আশরাফুল হাসান। তিনি একই থানার ওসির নির্দেশে চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল রাইফেলের ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেন বলে জানিয়েছেন। পরে থানায় জমা দেন এ আলামত।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম দিনের মতো সাক্ষ্য দেন শহীদ আস সাবুরের ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের বাবা মো. খলিলুর রহমান। এর আগের দিন সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ার সেই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি।

গত ২ জুলাই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগের সঙ্গে অন্যান্য তথ্যসূত্র হিসেবে ৩১৩ পৃষ্ঠা, সাক্ষী ৬২, দালিলিক প্রমাণাদি ১৬৮ পৃষ্ঠা ও দুটি পেনড্রাইভ যুক্ত করা হয়। পরে এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

এ মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামি হলেন- ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল। তবে সাবেক এমপি সাইফুলসহ আটজন এখনও পলাতক রয়েছেন।

এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। আটজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, যার মধ্যে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও এসআইরা রয়েছেন। সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ বাকি আটজন এখনও পলাতক। গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত এবং তাদের লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

ভিওডি বাংলা/জা

 

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাজসাক্ষী আবজালুলের ট্রাইব্যুনালে ক্ষমাপ্রার্থনা
রাজসাক্ষী আবজালুলের ট্রাইব্যুনালে ক্ষমাপ্রার্থনা
যে কারণে রায়ের কপি মন্ত্রণালয়গুলোতে যাচ্ছে না আজ
যে কারণে রায়ের কপি মন্ত্রণালয়গুলোতে যাচ্ছে না আজ
সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট তিন ব্যক্তির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ
সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট তিন ব্যক্তির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ