‘নোট অব ডিসেন্ট’ নিয়ে যা বললেন রুমিন ফারহানা

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, আমাদের তিনটি জায়গায় ঘোরতর আপত্তি আছে। প্রথমত হচ্ছে— যেই জুলাই সনদে আমরা স্বাক্ষর করেছি, সেদিন আমাদের পুরো ডকুমেন্টটি দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ঐকমত্য কমিশনে যে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে এবং একমত হয়েছে, সেগুলোর প্রতিফলন মূল সনদে দেখা যাচ্ছে না। তার দুটি স্পেসিফিক উদাহরণ আমাদের দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক্লারিফাই করেছেন।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে বিএনপির এই নেত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৪(ক) সংবিধানের যেখানে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানে ছবি অফিস-আদালতে না রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ঐকমত্য কমিশনে, সেই প্রস্তাবে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। আরেকটি হচ্ছে, সংবিধানের ১৫০ অনুচ্ছেদের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফশিল সংবিধানে না রাখার জন্য। এখানে দলগুলোর ঐকমত হয়েছে। দেখা গেছে, মূল সনদে এটার প্রতিফলন নেই।
রুমিন ফারহানা বলেন, জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা করে নোট অব ডিসেন্ট থেকে বিএনপি সরে আসতে পারে এনসিপির পক্ষ থেকে এমনটি বলা হচ্ছে। আসলেই কি নোট অব ডিসেন্ট থেকে বিএনপি সরে আসবে?
তিনি বলেন, বলা হচ্ছে ২৭০ দিনের মধ্যে পরবর্তী পার্লামেন্ট, যেটা সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে, সেখানেও বিএনপির আপত্তি আছে। কারণ, এই সংবিধান সংস্কার পরিষদের ব্যাপারে ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা হয়নি বা দলগুলো একমত হয়নি।
এরপরও যখন সংবিধান সংস্কার পরিষদের কথা বলা হচ্ছে পরবর্তী পার্লামেন্টে, সেখানে বিএনপির আপত্তি আছে। ২৯০ দিনের মধ্যে একটি সময় বেঁধে দেওয়া এবং সেটাকে বাধ্যতামূলক করা যে ২৭০ দিনের মধ্যে করতেই হবে সংবিধান সংস্কার। যদি দলগুলো বা সংসদ ব্যর্থ হয়, তাহলে সেটা অটোম্যাটিকেলি সংবিধানে অর্ন্তভুক্ত হয়ে গেছে বলে গণ্য হবে। এভাবে জীবনে কোথাও কোনো দেশে কোনো কালে সংবিধান সংস্কার হয়নি।
রুমিন ফারহানা বলেন, আপনাকে বুঝতে হবে, আপনি সুপ্রিম ল নিয়ে কথা বলছেন।
আপনি এমনটি একটি আইন নিয়ে কথা বলছেন, যেই আইনের সঙ্গে বাংলাদেশের যে কোনো বিধান, যে কোনো আইন, যে কোনো প্রজ্ঞাপন এমনকি সংবিধানের নিজস্ব কোনো অনুচ্ছেদও যদি মূল স্প্রিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, যতটুকু সাংঘর্ষিক হয়, ততটুকু বাতিল বলে গণ্য হবে। আপনি এমন একটি আইন বা সুপ্রিম ল কে যখন পরিবর্তনের কথা বলেন, তখন একটি প্রসিডিউর আছে, আপনাকে সেই প্রসিডিউর ফলো করেই সংবিধান এমেন্ড করতে হবে।
বিএনপির এই নেত্রী বলেন, গণভোটের ব্যাপারে বিএনপির কথা আছে। নির্বাচনের সময় যদি আপনি গণভোটের আয়োজন করেন এবং যেখানে নির্বাচন কমিশন নিজেই বলছে তাদের দেড়মাস সময় দিতে হবে। আজকে থেকে যদি ধরি, তাহলে ডিসেম্বরের ১৭ তারিখের আগে এই গণভোট আয়োজন করা সম্ভব নয়। এটা নির্বাচন কমিশনের কথা। তাদের হিসাব অনুযায়ী, তিন হাজার কোটি টাকা বাড়তি লাগবে। আপনাকে যদি গণভোট আয়োজন বা ভিন্ন তারিখে করতে হয়। এগুলো নিয়ে বিএনপির দ্বিমত আছে। কিন্তু অন্যান্য দলগুলো যদি মনে করে একেক সময় একেকটি ইস্যু সামনে নিয়ে এসে নির্বাচনটিকে ডিলে করবে এবং এর মধ্য দিয়ে তারা কিছু সুবিধা নেবে, সেটা তারা ভাবতে পারে। আপনি যদি সার্বিক দিক বিবেচনা করেন, সেটা সরকার, অর্থনীতি বা আইনশৃঙ্খলার তরফ থেকে বলেন এই একটি নির্বাচিত সরকার বা আসু ইলেকশন ছাড়া বাংলাদেশ অন্য কিছু ইফোর্ট করতে পারে না।
জামায়াতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের যতগুলো পলিটিক্যাল পার্টি আছে, কোনো দলের এত আগে থেকে এত ভালো নির্বাচনি প্রিপারেশন নাই জামায়াতের প্রিপারেশন যতটা ভালো। তাহলে তারা কেন নিম্নকক্ষে পিআর নিয়ে কথা বলছে। তাদের ৩০০ আসনে ক্যান্ডিডেট। ফজরের ওয়াক্ত থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত তারা ক্যাম্পেইন চালায়। তারপর আসর থেকে রাত পর্যন্ত ক্যাম্পেইন চালায়। এটা হচ্ছে তাদের স্ট্রাটেজি। ১০/১২ মাস ধরে তারা এ স্ট্রাটেজি ফলো করছে। এই যে প্রিপারেশন নিজের ঘরে শতভাগ রেখে অন্য দলকে পুশ করছে নির্বাচনকে ডিলে করার সুবিধার নেওয়া জন্য, এটা ঠিক না।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ




