• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে : আবদুস সালাম

নিজস্ব প্রতিবেদক    ১ নভেম্বর ২০২৫, ০২:২৭ পি.এম.
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। ছবি: ভিওডি বাংলা

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বলেছেন, আমাদের আবারও স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে। কারণ আজও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। ১৯৭১ সালের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। 

শনিবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের উদ্যোগে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

সালাম বলেন, ৭ নভেম্বরের চেতনা আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যদি ৭ নভেম্বর না হতো, তাহলে আমরা সেদিনই আমাদের স্বাধীনতা হারাতাম। গণতন্ত্র তো আগেই হারিয়েছিলাম। কাজেই বাংলাদেশের মূল চেতনা যদি বলি, তাহলে সেটা হলো ৭ই নভেম্বরের চেতনা।

১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত সময় আমাদের ভুলিয়ে দিয়েছিল—কী কারণে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, কী কারণে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। মনে হয়েছিল, যেন একটি রাষ্ট্রকে খুশি করার জন্যই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। অনেকে বলে থাকেন, পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ হয়েছিল ভারতের স্বার্থে; কিন্তু সেটি সত্য নয়। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা, আমরা যুদ্ধ করেছিলাম দেশের স্বাধীনতার জন্য, কারো পরাধীন হওয়ার জন্য নয়।

তিনি বলেন, কিন্তু সেই সময় আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছিল। যখন বাংলাদেশকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখনই ৭ই নভেম্বরের উদ্ভব হয়। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কোনো মার্শাল ল বা কূ  করে ক্ষমতায় আসেননি। সেই সময়ে দেশের সৈনিক ও জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে বিপ্লব সংঘটিত করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন,অনেকে বিপ্লব ও অভ্যুত্থানকে এক করে দেখেন, কিন্তু এ দু’টি এক নয়। বিপ্লব হলে একটি দেশের সম্পূর্ণ চেহারা বদলে যায়—এবং তখন তাই হয়েছিল। বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আসলে “নতুন বাংলাদেশ”-এর ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।

তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। দরিদ্র মানুষের মুখে আহার তুলে দিয়েছিলেন, বস্ত্রহীন মানুষের গায়ে বস্ত্র পরিয়েছিলেন, সারাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে অনেকে বোঝা ভাবত, কিন্তু জিয়া প্রমাণ করেছিলেন—মানুষই শক্তি। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠা শক্তিকে দেশ গঠনে ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। সেই শক্তিকেই জিয়াউর রহমান কাজে লাগিয়ে দেশ গড়েছিলেন।

জিয়াউর রহমান ছিলেন মহান সংস্কারক। এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে তিনি সংস্কার করেননি। তিনি প্রশাসন, অর্থনীতি, কৃষি, পররাষ্ট্রনীতি—সবখানেই নবজাগরণ এনেছিলেন বলেন তিনি।

আবদুস সালাম বলেন, আজ আমাদের আবারও স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে। কারণ আজও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। ১৯৭১ সালের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। 

শেখ হাসিনা নির্বাচন দিতে চান নাই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন দিতে চান না মন্তব্য করে সালাম বলেন, কারণ স্বাধীনতার চেতনার ধারক বিএনপি জনগণের ভোটে জয়ী হবে। ৫ আগস্টের পরও আমরা এই অবস্থান নিয়েছি জনগণের অধিকারের জন্য, বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। কিন্তু তারা জানে, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, বিএনপি ক্ষমতায় যাবে—তাই তারা ভোটকে ভয় পায়।

তিনি বলেন, বিএনপি হলো এই দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের দল, মুক্তিযুদ্ধের দল। বিএনপির কারণেই স্বাধীনতা রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্র ফিরে এসেছে, আধিপত্যবাদী শক্তির হাত থেকে দেশ রক্ষা পেয়েছে। এজন্যই তারা বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দিতে চায় না।

এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আজ আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপিকে ধাক্কা দিলেই পড়বে, এমনটা মনে করবেন না। বিএনপির শিকড় এই মাটির গভীরে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন, স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করেছিলেন। কিন্তু জামায়াত কী করেছে? পাকিস্তান সৃষ্টির সময় তারা বিরোধিতা করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় শুধু বিরোধিতাই নয় মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে।কেউ কেউ বলে জামায়াত হিন্দুদের নিয়ে বৈঠক করছে তাহলে কি তাদের সদস্য বানাবেন? তাদের পদ দিবেন , মহাসচিব বানাবেন?  একটা সীমা থাকা দরকার। 

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাত এর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সহ প্রমুখ।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জামায়াত মরার পর নিজেদের নাম পাবে: আলাল
জামায়াত মরার পর নিজেদের নাম পাবে: আলাল
পেশিশক্তির রাজনীতি আর চলবে না : তাসনিম জারা
পেশিশক্তির রাজনীতি আর চলবে না : তাসনিম জারা
৪ ক্যাম্পাসে শিবিরের ভূমিধস জয় রহস্যজনক: নুরুল হক নুর
৪ ক্যাম্পাসে শিবিরের ভূমিধস জয় রহস্যজনক: নুরুল হক নুর