মাল্টা চাষ করে স্বাবলম্বী নবাবগঞ্জের স্বাধীন

 
                                            
                                    
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে দিনদিন বাড়ছে মাল্টা চাষ। বিদেশি এই ফল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন নবাবগঞ্জ উপজেলার স্বাধীন নামে এক শিক্ষিত বেকার যুবক। লেখাপড়া (ডিগ্রি) শেষ করে চাকরির পিছনে না ছুটে ১০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন মাল্টার বাগান। শুরুটা কঠিন হলেও বর্তমানে তিনি দেখছেন সফলতার মুখ।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এই জেলার উৎপাদিত মাল্টা এখন ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করা হচ্ছে। এখানকার মাটি এই ফল চাষে উপযোগী হওয়ার কারণে প্রতি বছরই বাড়ছে কৃষি জমির পরিমাণ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগানে সারিবদ্ধ মাল্টার গাছ। প্রতিটি গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ডালে ঝুলে রয়েছে আধপাকা মাল্টা। ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক সাজু মিয়ার ছেলে মাহামুদুন্নবী স্বাধীনের মাল্টা বাগানে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। মাল্টা চাষ করে স্বাধীন এখন সফল ও স্বাবলম্বী হয়েছেন। ২০১৮ সালে মাত্র ষোল শতক জমিতে উপজেলা কৃষি অফিসের দেয়া পরীক্ষামূলক মাল্টা ফলের প্রদর্শনী চাষ দিয়ে শুরু করেন কৃষি খামার। ভালো ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি লিজ নিয়ে বর্তমানে ১০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন তার কৃষি খামার।
নবাবগঞ্জের মাল্টা চাষী মাহামুদুন্নবী স্বাধীন বলেন, নিরাপদ ফল উৎপাদনের লক্ষ্যে আমি নিজেই বাড়িতে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করেছি। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে আমার কৃষি খামারে ব্যবহার করছি নিজের তৈরি ভার্মি কম্পোস্ট সার। ফলে আমার বাগানে উৎপাদিত হচ্ছে নিরাপদ ফল। চলতি বছরে ১৫ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির আশা করছি। সব খরচ বাদ দিয়ে এবারে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় করবেন বলে মনে করছেন তিনি। গড়ে তার বাগানে সারা বছর ৬/৮ জন শ্রমিকের কর্ম সংস্থান হয়েছে। প্রতিনিয়ত বেকার যুবকেরা আসছেন তার বাগানে উদ্যোক্তা হতে, নিচ্ছেন পরামর্শ নিতে। সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে তার বাগানটি পরিধি বৃদ্ধি ও নতুন নতুন প্রজাতির ফলের বাগান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তার বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় কয়েক জন যুবক বাগান দেখতে এসে বলেন, স্বাধীন একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার সফলতা এখন বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের জমিতে মাল্টা চাষ করার জন্য তারা স্বাধীনের কাছে পরামর্শ নিতে এসেছেন।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, তিনি একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তাকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে পরামর্শ ও সহযোগিতা। স্বাধীনের মত বেকার যুবকেরা কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে এলে যেমন বেকারত্ব কমবে তেমনি কৃষি সেক্টর হবে আরও সমৃদ্ধ। এ বছর দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
 
                             
                         
                 
                





