সকালের এক কাপ কফি বাড়াতে পারে আয়ু


সকালে এক কাপ কফি দিয়ে দিন শুরু করেন? তাহলে আপনার জন্য রয়েছে দারুণ সুখবর! এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত সকালে কফি পান হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং আয়ু বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
ইউরোপের একটি স্বনামধন্য মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, যারা দুপুরের আগেই কফি পান করেন, তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি ১৬ শতাংশ এবং হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি ৩১ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। প্রায় ৪০,০০০ মানুষের উপর ১০ বছর ধরে চালানো এই গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বিশেষভাবে দেখা গেছে, যারা কালো কফি পান করেন বা সামান্য চিনি ব্যবহার করেন, তাদের অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা প্রায় ১৪ শতাংশ কম। তবে যারা কফিতে অতিরিক্ত চিনি, ফুল-ক্রিম দুধ বা ক্রীমজাত উপাদান ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রে এই উপকারিতাগুলো লক্ষ্য করা যায়নি।
গবেষণাটিতে ২০ বছর বা তার বেশি বয়সী ৪৬,৩৩২ জন মার্কিন নাগরিকের স্বাস্থ্যতথ্য বিশ্লেষণ করা হয়, যাদের ৯ থেকে ১১ বছর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়। এ সময়ের মধ্যে ৭,০৭৪ জন মারা যান। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিদিন কফি পানকারীদের মধ্যে অকাল মৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে কম।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কফিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং প্রদাহনাশক উপাদান শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তবে কফিকে স্বাস্থ্যকর রাখতে হলে এতে চিনি ও চর্বিযুক্ত উপাদান যোগ না করাই শ্রেয়।
গবেষণার প্রধান গবেষক ও এপিডেমিওলজিস্ট বিংজি ঝৌ বলেন, ‘এর আগে খুব কম গবেষণাতেই দেখা হয়েছে কফিতে কী যোগ করা হচ্ছে এবং তা স্বাস্থ্যঝুঁকির সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কিত। আমরা প্রথমবারের মতো চিনি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বিশ্লেষণ করে এই ফলাফল পেয়েছি।’
গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো:
দিনে ২ কাপ বা তার বেশি কফি পান সবচেয়ে বেশি উপকার এনে দেয়, সকালে কফি খাওয়া হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো, সন্ধ্যা বা রাতে কফি পান শরীরের স্বাভাবিক রুটিনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে ও কফি ও ক্যান্সারে মৃত্যুর সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের একটি বড় অংশ উচ্চ আয়ের এবং শ্বেতাঙ্গ ছিলেন, তাই ফলাফলটি সবার জন্য একেবারে একই রকম প্রযোজ্য নাও হতে পারে। তাছাড়া, অংশগ্রহণকারীরা নিজেরা কখন এবং কতটা কফি খান, তা জানিয়ে থাকায় তথ্যের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে।
পরামর্শ:
সকালে ১-২ কাপ কফি খাওয়া উপকারী হতে পারে। বিকেল বা রাতের কফি এড়িয়ে চলাই ভালো, বিশেষ করে ঘুমের সমস্যা থাকলে। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি ব্যক্তির শরীর ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ভিন্ন, তাই কফি পানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
ভিওডি বাংলা/জা