ভৌতিক বাড়ী নিয়ে প্রবন্ধ
চন্দনকুটির ও এর রহস্যময় প্রকৃতি


অ আ আবীর আকাশ
কাজল হঠাৎ বলে উঠলো- ‘চাচা, আপনার বাড়ির উত্তর পাশে খালের পাড়ে রেইনট্রি গাছের ওদিক দিয়ে জ্বীন থাকে। আমি বুধবার রাতে মাছ শিকারে গেলে আমাকে বিভিন্ন ভাবে ভয় লাগানোর চেষ্টা করে। আমি সুরা কেরাত পড়ে গায়ে ফুঁ দিই।’ কথাগুলো শুনে আমি মুচকি মুচকি হাসি। সাথে ছিলেন মাসুদ মামা। সেও কাজলের কথা শুনে হাসে। জ্বীন ভুত আমাদের পুকুরঘাটের দক্ষিনে চালতা গাছেও থাকে বলে কাজল আমাকে বিশ্বাস লাগানোর চেষ্টা করে। চালতা গাছটা আমার মায়ের হাতে লাগানো।
আমার জন্মভিটা অর্থাৎ বাবার বাড়ি তিতাগাজী পাওয়ারী বাড়ি। অত্যান্ত নাম ডাক সম্পন্ন বাড়ি। বাড়ির সব দলিল দস্তাবেজে এ নামটি থাকলেও জনস্বার্থে দাদার বাবা একটি লাল চন্দন গাছ রোপন করেন। মৃত মানুষের কাপনের কাপড় লাল চন্দন পুড়িয়ে ধোঁয়া করে মেলে ধরলে সুগন্ধ হয়। এজন্য মানুষ বহু দূরদূরান্ত হতে চন্দনের খোঁজ করে আসতে আসতে বাড়ির নাম বদলে গিয়ে হয়ে যায় চন্দন গাজী বাড়ী। পরে বাবা সে বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে দু’দিক দিয়ে বয়ে চলা খাল পাড়ে টেকের মধ্যে নতুন বাড়ি করেন। আমি সে বাড়ির নাম দাদার বাড়ির নামের সাথে মিলিয়ে রাখি চন্দনকুটির। চন্দনকুটিরের বয়স ৩৫ পেরিয়ে গেলেও এখন মানুষজন এ নামেও চিনে না। সাংবাদিক আবীর আকাশ এর বাড়ি বলে চিনে ও এ নাম-ই ছড়িয়ে যায়। যা-ই হোক আজকে চন্দনকুটিরের কিছু অজানা দিক তুলে ধরবো। যা অকল্পনীয় ভাবে সত্যি এবং চলমান নিত্যদিনের ঘটনার বহিঃপ্রকাশ।
বাংলার গ্রাম্য প্রকৃতির এক অপূর্ব নিদর্শন ‘চন্দনকুটির’। এটি শুধু একটি বাড়ি নয়, এটি একটি অনুভূতির নাম, একটি জীবন্ত ইতিহাসের খন্ডচিত্র। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অতিপ্রাকৃত কাহিনি এবং রহস্যময় পরিবেশ মিলিয়ে একে এক কথায় বলা যায়-মায়ার রাজ্য। চন্দনকুটিরের চারপাশে বিস্তৃত বাগান, খাল, বিল এবং জনশূন্য বিল আর বিলের মধ্যোখানে দ্বীপের মতো দুখন্ড বাগান যেন একেকটি কল্পকাহিনির পাতা থেকে উঠে আসা গল্প।
* উত্তরে ‘নোয়া বাগান'-নিঃশব্দের রাজত্ব
চন্দনকুটিরের উত্তরে অবস্থিত ‘নোয়া বাগা’। প্রকান্ড এই বাগানটি যেন সময়ের সাথে একটি নিজস্ব সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ও ঝোপঝাড়ের মধ্যে ছায়া-আলো খেলা করে। দিনের বেলায়ও সেখানে একটি নিস্তব্ধতা বিরাজ করে, যেন প্রকৃতি নিজেই কোনো এক গোপন রহস্য লুকিয়ে রেখেছে। সন্ধ্যা নামলেই পাখিদের কিচিরমিচির থেমে যায়, আর শুরু হয় এক অদৃশ্য শব্দের খেলা-পাতার নড়াচড়া, হাওয়ার চাপা হাহাকার, কখনোবা মাটি থেতলানোর শব্দ। কখন সখনো আমি ক্লান্ত শ্রান্ত মনে ঝির ঝির হাওয়ায় বাগানের মধ্যোখান দিয়ে চলে যাওয়া ইরিগেশনের পানির পাকা ড্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে গা জুড়ানোর নামে একটুখানি যেই মোবাইল টিপতে থাকি ওমনি নেট অফ করে দেয়। এরোপ্লেন মোড অফ অন করেও প্রায় সময় নেট পাওয়া না গেলে ‘ধ্যাৎ’ বলে সরে আসি। তখন বুঝতে বাকি থাকে না যে, মহাজন মামা আশপাশে আছেন। পাকা ড্রেন দিয়ে তিনি বিলের মধ্যোখানের দ্বীপ বাগানে যাবেন।
নোয়া বাগানে দূরে দূরে কয়েকটি একক ঘর আছে। এই ঘরগুলো আজ পরিত্যক্ত না হলেও মাঝে মাঝে বাবুলের বউ, ইব্রাহিমের বউ আসে -থাকে। এরা না থাকলে মাঝে মাঝে মনে হয় কেউ যেন ভিতরে হেঁটে বেড়াচ্ছে। স্থানীয়রা বলে এখানে রাত হলে অদ্ভুত আলো দেখা যায়, আমরা জানালা দিয়ে আলেয়া দেখি, বিলের মধ্যোখান দিয়ে আলেয়া এসে এ বাগানে ঢুকে খালের উপর দিয়ে সোজা জনাগো বাড়ির ওদিকে যেতে কতো যে দেখেছি, আবার কারো পায়ের শব্দ শোনা যায় কাঁকড়ভাঙা শুকনো মাটিতে, এমনও হয়েছে। ভয় যেন না পাই মা দোয়া পড়ে আমাদের গা বন্ধ করে দিতেন। আলেয়া ঘরের পাশ দিয়া যাওয়ার সময় যেন চিৎকার না করি মা মুখ চেপে ধরতেন। এসব ঘটনা এলাকায় বিদ্যুৎ আসার আগের হলেও এখন এ আমলেও সমানতালে চলমান রয়েছে।
* দক্ষিণ দিকের বাগান-সৌন্দর্যের অন্তরালের গা ছমছমে অনুভব
চন্দনকুটিরের দক্ষিণ পাশেও একটি বিস্তৃত বাগান রয়েছে। যদিও এটি তুলনামূলকভাবে বেশি বড় না, পরিচর্যাপ্রাপ্ত হলেও মাঝে মাঝে আগাছায় ঢেকে যায়, কিন্তু সন্ধ্যার পর এই বাগানেও কেউ একা যেতে চায় না। বাগানের মাঝখান দিয়ে একটি সরু চিকন পথ আছে। কেউ কেউ বলেন, এখানে মাঝেমধ্যে কালো ছায়া দেখা যায় গাছের আড়ালে, আবার হঠাৎ করেই তাপমাত্রা নেমে যায় যেন পাশ দিয়ে শীতল কোনো কিছু ছুঁয়ে গেল। একসময় এই বাগানে গভীর রাতে আমার বৃদ্ধ মা সাদা কাপড় পরিহিত এক মহিলাকে হেঁটে যেতে দেখে ডাকলেন। এতো রাতে একা একা, আহারে কোন বাড়ির মেয়ে এতো রাতে যায়... এসব ভেবে ডাকলেন। পরে তো আমার মায়ের উপর ভর করেছে পেত্নী। মাকে রেইনট্রি গাছে উঠিয়ে সারাদিন চিকন একটা মগডালে বসিয়ে রাখে,তাতে নাওয়া খাওয়া নেই। এটা আমার চোখে দেখা কিশোর বয়সের ঘটনা। এখানে একসময় গরু বেঁধে রাখলে গরুকে পুঁতে রাখার ঘটনাও ছিল বলে গুজব আছে, যদিও তার প্রমাণ মেলেনি বা আমরা দেখিনি।
* পূর্ব দিকের বিল ও দ্বীপ-অদ্ভুত নীরবতার ছায়া
চন্দনকুটিরের পূর্ব পাশে রয়েছে একটি বিশাল বিল। বছরের অর্ধেক সময় এই বিল থাকে পানিতে টইটম্বুর, বাকি সময়ে শূন্য জলাধারটির বুক চিরে দেখা যায় কাদার ছোপ। বিলের মধ্যেই দু’টি ছোট্ট দ্বীপের মতো বাগান রয়েছে-অবিকল দ্বীপ, যেখানে মাঝেমধ্যে গাছগাছালি ছাড়া কোনো মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ে না। দিনের বেলাতেও গ্রামের মানুষজন এ দ্বীপ বাগানের কাছাকাছি যায় না।
এক বার আমরা কয়েকজন এ বাগানের ভেতর দিয়ে আসার সময় টাটকা ইলিশ মাছ কুটার ঘ্রাণ পাই। তাতে সকলে ভয়ে বিলে ধান কাটা চাষিদের কাস্তে ছুঁই ও জোরে জোরে জিকির আসকার করতে থাকি।
বিলের এই দ্বীপ বাগান ঘিরে বহু গল্প প্রচলিত আছে। অনেকেই বলেন, ‘সেখানে রাতের বেলায় অদ্ভুত আলো দেখা যায়। কেউ কেউ বলেন, সেখানে কারো ডাক শোনা যায় যেন কেউ সাহায্য চাচ্ছে। স্থানীয় মিজি বাড়ির মুক্তার নামের পঁয়তাল্লিশর্ধো বয়সী এক ব্যক্তি রাত নয়টার দিকে টেঁটা হাতে মাছ শিকারে গেলে গজার মাছের রুপ ধরে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। অদূরে থাকা অন্যরা খেয়াল না করলে মেরেই ফেলতো। অনেকবার স্থানীয়রা চেষ্টা করেছে সেসব দ্বীপ বাগান, হাওলাদার আড়ায় যেতে, এখনও কিন্তু সাহস করে না।’
* পশ্চিমের চন্দনাদী-ভয় আর আকর্ষণের দ্বন্দ্ব
বাড়ির পশ্চিম পাশে রয়েছে খাল, যা স্থানীয়ভাবে ‘চন্দনাদী’ নামে পরিচিত। এই খাল বছরের অধিকাংশ সময়ই জলে পূর্ণ থাকে। এর ধারে বড় বড় চালতা, তেঁতুল আর বিশাল রেইনট্রি গাছ রয়েছে। এই গাছগুলোর নিচে হঠাৎ করেই অন্ধকার ঘনিয়ে আসে, যেন সূর্যের আলো সেখানে পৌঁছায় না। স্থানীয়দের মতে, এই গাছগুলোতে জ্বীন-ভূত বাস করে। বিশেষ করে রেইনট্রি গাছটি নিয়ে রয়েছে সবচেয়ে বেশি গল্প। রেইনট্রি গাছের পাশে ছিলো এক জোড়া তালগাছ। একদিন রাত নয়টার দিকে পানিতে সশব্দে তাল পড়লো। আমি আর মা এভারেডি টর্চ লাইট হাতে তালগাছ তলে তাল কুড়াতে যাই। এমন সময় আরেকটি তাল পড়লো, দড়াম করে আরেকটি পড়লো, কিছু বুঝে উঠার আগেই গা ঘেঁষে আরেকটি পড়লো। তাতে আমি কিছু বুঝার আগেই মা বললো -‘ বাবা, ঘরদিগে আঁট, কাইল বেনে তাল টোগাই লমু।’ সকালে উঠে দেখি তালের কোনো চিহ্ন নেই। ভোরবেলায় এসে কেউ তাল টোগাই নিয়ে গেলো নাকি!
অনেক সময় যারা খালে মাছ ধরতে আসে, তারা অদ্ভুত ঘটনার মুখোমুখি হয়। কেউ বলে, হঠাৎ করে জাল ছিঁড়ে যায়; কেউ বলে, পেছন থেকে কেউ টেনে ধরে অথচ কেউ থাকে না; আবার কেউ বলে, পানির নিচ থেকে কেউ যেন নাম ধরে ডাকে। বাড়ির লোকজনও অনেক সময় খালপাড় দিয়ে হেঁটে যাবার সময় অদ্ভুত শব্দ, নিঃশ্বাসের শব্দ অথবা ঝোপে নড়াচড়ার আওয়াজ শুনেছে। কেউ কেউ দাবি করে যে, গভীর রাতে ওই রেইনট্রির নিচে সাদা কাপড় পরা এক নারীকে বসে থাকতে দেখা গেছে।
* চন্দনকুটির-ভয়ের মাঝেও মায়া
এই রহস্যময় পরিবেশ সত্ত্বেও চন্দনকুটিরে একধরনের মায়া আছে। গ্রীষ্মের দুপুরে বিল থেকে উঠে আসা কাদার গন্ধ, মুক্ত হাওয়া, কোকিলের কুহুকেকা ডাক, ফিঙে, বুলবুলি, দোয়েল, টুনটুনিসহ আরওনাম না জানা কতো কতো পাখির গান, সকাল সন্ধ্যায় ডাহুকের সভাসদ কিংবা খালের ধারে বসে থাকা বক, ঘরের সামনে ছেলেমেয়ে নিয়ে আসা ডাহুক, রেইনট্রি গাছের মগডালে বসে আওয়াজ করা কালের ঘড়ি ঈগল অথবা নোয়া বাগানে আমের ঝরা পাতা-সবকিছু মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে। দিনের বেলায় পাখিরা কিচিরমিচির করে, প্রজাপতিরা ওড়ে, আর বাগানের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। তবে রাত নামলেই সবকিছু বদলে যায়। ঘরের উত্তর পাশে ছাতিম গাছে প্রায়শই ভিন্ন কিছুর উপস্থিতি পরিবেশকে ভারী করে তুলতো। বছরে একবার সুগন্ধি বিলালেও বাকি সময়গুলোতে এ ঝামেলার দরুন ছাতিম বৃক্ষ নিধনে উদ্যেত হই।
বাবার ভগ্ন ঘরটি মেরামত করার সময় আমরা টং আকৃতির একছালা ঘর করে বাগানের ভেতর থাকি। মা অনুরূপ আরেকটি ঘরে আলাদা ঘরে থাকেন। শুকনো মৌসুম থাকায় চারদিকে খোলামেলা। হালকা কুয়াসা শীত নামাতে ব্যস্ত। আমি মশারীর ভেতর মালচি কাঁথা গায়ের উপর দিয়ে মোবাইল নিয়ে। রাত সাড়ে নয়টার দিকে কেমন যেন পরিবেশটা ভার ভার মনে হচ্ছে। আমি মাথা তুলে তাকাতে উত্তর দিকে খেজুর গাছতল দিয়ে দেখতে পাই- লম্বা বোধহয় সাড়ে সাত আট ফুট হবে হয়তো, সাদা আলখাল্লা পরিহিত পাগড়ি পরা মৌলভী সাব আসছে। আমি ছট করে মোবাইল উপুড় করে কাঁথায় ছেপে ধরে মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে রাখি। বুক ধড়পড় শুরু- ওরে মারে... এডা কিরে... বাবাগো... মাগো... আল্লাহ আল্লাহ...।
একদিন সন্ধ্যার পরে আমার স্ত্রী ও ছেলে পাশের বাড়ি থেকে আসার সময় সাঁকোর পশ্চিম পাড় হতে চুলের মুঠো ধরে উড়িয়ে বাঁশ মুড়ায় নিয়ে ফেলে। ছেলে চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠে। আমিও ঘর থেকে জোরে আওয়াজ করে দৌঁড়ে যাই। পরে অন্ধকারে টর্চ লাইট দিয়ে খুঁজে বের করি। অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকা স্ত্রীকে পাঁজা কোলা করে ঘরে সামনে নিয়ে আসতেই সে এবার আকস্মিক চিৎকার করে বলে আমি ঘরে যাবো না। ঘরে কে আছে, ওই দেখা যায়, এরা কে, আমি ঘরে যাবো না। আমি ঘরে যাবো না। পরে আমি ও আমার ছেলেসহ বহু ধমক টমক দিয়ে তাকে জোর করে ঘরে তুলি। অজু করে ছেলে কোরআন শরিফ পড়া শুরু করলে এবার জ্বীন ভুত আস্তে আস্ত আমার সাথে কথা বলতে শুরু করে। এরপর কত কথা, কত গল্প, কতো অভিজ্ঞতা।
এ বাড়িতে থাকা মানে শুধু দৈনন্দিন জীবনের অংশ হওয়া নয়, বরং এটি এক নিরব চুক্তি-প্রকৃতির সঙ্গে, অতিপ্রাকৃতের সঙ্গে, ইতিহাসের সঙ্গে। এখানে আপনি যতই বাস্তবতাকে আঁকড়ে ধরুন, কোনো এক সময় অনুভব করবেন এক অদৃশ্য উপস্থিতি।
উপসংহার
চন্দনকুটির কেবল একটি বাড়ির নাম নয়-এটি একটি জীবন্ত চরিত্র, যেখানে প্রকৃতি, অতিপ্রাকৃত এবং মানবিক অভিজ্ঞতা মিশে এক অনবদ্য জগৎ সৃষ্টি করেছে। এর চারদিকের বাগান, বিল, দ্বীপ, খাল ও বৃক্ষরাজি যেন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়-প্রকৃতির সৌন্দর্য যতটা মুগ্ধকর, এর রহস্য ততটাই গভীর। চন্দনকুটির সেই রহস্যময় প্রকৃতির এক ছোট্ট কিন্তু তীব্র প্রকাশ-যা কখনও ভয় দেখায়, কখনও টানে, কিন্তু সবসময় মনে গেঁথে থাকে। আর এখানে না এলে যেন শান্তির ঘুম অপূর্ণই থাকে আর মাথা ভর্তি কিলবিল করে অস্থিরতা।
লেখক, কবি প্রাবন্ধিক কলামিস্ট সাংবাদিক ও লোকসাহিত্য গবেষক