• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

দ্য স্টেটসম্যানের সম্পাদকীয়

হাসিনার ফাঁস হওয়া তথ্য দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে অন্ধকার অধ্যায়

   ১২ জুলাই ২০২৫, ০৩:২১ পি.এম.

শেয়ার করুন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত

ভিওডি বাংলা ডেস্ক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ড এবং ফরেনসিক প্রতিবেদন দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে এক ভয়াবহ অধ্যায়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। একসময় যিনি গণতন্ত্রের রক্ষক ও উন্নয়নের রূপকার হিসেবে আন্তর্জাতিক প্রশংসা অর্জন করেছিলেন, আজ তিনিই শান্তিকালে সংঘটিত অন্যতম নৃশংস দমন-পীড়নের কেন্দ্রীয় নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযুক্ত।

নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপ এবং আন্তর্জাতিকভাবে যাচাইকৃত ভয়েস-ম্যাচিং বিশ্লেষণ অনুযায়ী, শেখ হাসিনা সরাসরি ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পুলিশ বাহিনীকে সামরিক গ্রেডের অস্ত্র দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর অন্তত আধাঘণ্টা ধরে গুলিবর্ষণের আদেশ আসে সরকারের সর্বোচ্চ স্তর থেকে।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন ধীরে ধীরে জাতীয় অভ্যুত্থানের রূপ নেয়। এতে প্রকাশ পায় শাসনব্যবস্থার দীর্ঘদিনের অব্যবস্থা, দুর্নীতি ও কর্তৃত্ববাদ। কিন্তু আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণভাবে মোকাবেলার বদলে রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে তার ওপর চালানো হয় ব্যাপক দমন-পীড়ন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কোনো স্থানীয় প্রশাসনের অতিরিক্ত সক্রিয়তা নয়, বরং একটি কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত রাষ্ট্রীয় হামলা—যার ফলশ্রুতিতে শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, দেশের বিভিন্ন শহরে প্রাণ হারায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ।

৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞ, যা আন্দোলনের সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন হিসেবে চিহ্নিত, সেই রাষ্ট্রীয় সহিংসতার সবচেয়ে নগ্ন প্রকাশ।

গত এক দশকে শেখ হাসিনার শাসনকালকে অনেকেই ‘গণতন্ত্রের মুখোশে কর্তৃত্ববাদী শাসনের’ বাস্তব উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব, বিরোধী মতের ওপর নজরদারি, সংবাদপত্র ও সামাজিক মাধ্যমে সেন্সরশিপ, এবং নির্বিচার গ্রেফতার ছিল এ শাসনের প্রতিদিনের বাস্তবতা। ৫ আগস্ট ছিল সেই জমে থাকা দমন-পীড়নের বিস্ফোরণমাত্র।

এই দমন-পীড়নের প্রভাব শুধু বাংলাদেশের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। গণতন্ত্রচর্চার প্রশ্নে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নতুন ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠিত সরকার কীভাবে গণমানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে রাষ্ট্রীয় সহিংসতায় পরিণত করে—এটি এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও এক জ্বলন্ত প্রশ্ন।

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরও বিচার ও জবাবদিহিতার বিষয়ে এখনো স্পষ্ট অগ্রগতি দেখা যায়নি। শুধু নির্বাচনের মাধ্যমে নয়—এই দমন-পীড়নের জন্য দায়ীদের বিচারের মাধ্যমেই প্রকৃত গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।

সম্প্রতি দ্য স্টেটসম্যানের সম্পাদকীয়তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

ভিওডি বাংলা/ডিআর

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সোহাগ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
সোহাগ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
অদৃশ্য শক্তি ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে: তারেক রহমান
অদৃশ্য শক্তি ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে: তারেক রহমান
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপিকে দায়ী করা রাজনৈতিক অপচেষ্টা : আমিনুল হক
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপিকে দায়ী করা রাজনৈতিক অপচেষ্টা : আমিনুল হক