
মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরে বর্ষা মৌসুম শুরুর পর থেকেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন নতুন নতুন রোগী। শহর থেকে গ্রাম সবখানেই বাড়ছে জনমনে আতঙ্ক।এডিস মশা প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
বর্তমানে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর অর্ধেকই রাজৈর উপজেলার বাসিন্দা। এখনই দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়া হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তারা মশা নিধন ও সচেতনতা কার্যক্রমে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানায়।
চরকাকৈর গ্রামের ৭৩ বছর বয়সী কৃষক সামাদ মাদবর ও তার ছেলে হারুণ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। শরীরের প্রচণ্ড জ্বর, কাপুনি ও মাথা ব্যথা নিয়ে তারা হাসপাতালে এলে পরীক্ষা করে দুজনেরই ডেঙ্গু শনাক্ত হয়।
তাদের মতো প্রতিদিনই রোগীরা আসছেন মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। শিশু-কিশোর, এমনকি শিক্ষার্থীরাও বাদ যাচ্ছে না এই সংক্রমণ থেকে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে আলাদা ইউনিট চালু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বর্ষাকালে শহর ও গ্রাম সবখানেই এডিস মশার বংশবিস্তার বেড়েছে। বাসা-বাড়ির আঙিনায় জমে থাকা পানি ও বদ্ধ ড্রেন এডিস মশার প্রজননের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড় দেয়া মশার মাধ্যমে এই রোগ দ্রুত অন্যদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে, ফলে জনমনে আতঙ্কও বাড়ছে।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২০০ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও রোগীরা চিকিৎসার জন্য ছুটছেন। আক্রান্তের শতকরা ৫০ ভাগই রাজৈর উপজেলার বাসিন্দা। গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের সীমানাবর্তী হওয়ায় এ এলাকায় সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এই পরিস্থিতি প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
ডেঙ্গু আক্রান্ত সামাদ মাদবর বলেন, বাবা-ছেলে একসঙ্গে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবো এটা ভাবতেই পারিনি। কোথা থেকে ডেঙ্গু হয়েছে জানি না। শরীর একেবারে দুর্বল হয়ে গেছে, দুজনেই হাসপাতালে ভর্তি আছি।
রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি দিনমজুর শাহীন মাদবর বলেন, আমি টেকেরহাট এলাকায় কাজ করি। তিন দিন ধরে জ্বর কমছিল না। পরীক্ষা করে দেখা যায় ডেঙ্গু হয়েছে। প্রচণ্ড মাথাব্যথা হচ্ছে, কিছুই খেতে পারছি না।
২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি ফল বিক্রেতা নুর ইসলাম বলেন, কাপুনিসহ জ্বর হচ্ছিল, কিছুতেই কমছিল না। গ্রামের একজন ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খেয়েছিলাম, তাতেও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে এসে ভর্তি হলাম। পরীক্ষার পর ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এখনও উন্নতি হচ্ছে না।
ছয় বছর বয়সী শিশু তাইজুলকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন তার নানা আনসার উদ্দিন সরদার। তিনি বলেন, বাড়িতে খেলাধুলা করছিল, হঠাৎ করে জ্বর আসে। এরপর থেকে কাঁদতে থাকে। প্রথমে এলাকার ডাক্তারকে দেখিয়ে ওষুধ খাওয়াই, কিন্তু জ্বর কমছিল না। পরে ভয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখনও জ্বর কমছে না।
মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শরীফুল আবেদীন কমল বলেন, জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের অর্ধেকই রাজৈর উপজেলায়। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাসা-বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার রাখতে হবে এবং সবাইকে সচেতন হতে হবে। আশা করছি দ্রুতই ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
শ্রীপুরে কালবের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষক-কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন …

কুমারখালীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে কারাদণ্ড ২
কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অবৈধভাবে পদ্মা নদীর বালু উত্তোলন …

ছাগলনাইয়ায় অপরিকল্পিত ব্রিজ-কালর্ভাট নির্মাণে পানি প্রবাহে বিঘ্ন
ছাগলনাইয়া (ফেনী) প্রতিনিধি
ছাগলনাইয়া উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে উন্নয়নের …
