অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে বিএনপি


নিজস্ব প্রতিবেদক
দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও জনআস্থা বাড়াতে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। দলের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, দখল ও নানা অপরাধে জড়িত নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নিচ্ছে হাইকমান্ড। বিশেষ করে ‘হাইব্রিড’ ও ‘নব্য বিএনপি’ পরিচয়ে যারা তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত কোন্দল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, হাইকমান্ডের নির্দেশে ইতোমধ্যে ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত কমিটিগুলোর যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী কিংবা জনমনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করা নেতাকর্মীদের চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, দলীয় স্বার্থ ও ভাবমূর্তির প্রশ্নে কোনো আপস করা হবে না। যারা বিএনপিকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করছে কিংবা আওয়ামী লীগের মতো অপকর্মের পথে হাঁটছে, তাদের আর দলে রাখার প্রয়োজন নেই—এমন নির্দেশনা স্পষ্ট করে দিয়েছেন হাইকমান্ড।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, দল ও দেশের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, প্রয়োজনে তালিকাভুক্তও করা হচ্ছে।
তিনি জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের গুণগত পরিবর্তন শুরু হয়েছে। ৫ আগস্টের আগের বিএনপি আর বর্তমান বিএনপি এক নয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মাসে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, কোন্দল ও বিশৃঙ্খলার কারণে অন্তত পাঁচ হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার এবং আরও এক হাজারকে শোকজ করা হয়েছে। ভোলার তজুমদ্দিন ও লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অপরাধমূলক কাজ কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের অপকর্মের পথে কেউ হাঁটলে বিএনপিতে জায়গা হবে না। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির নেতারা দাবি করছেন, আওয়ামী লীগের ছদ্মবেশী কর্মী কিংবা সরকারপন্থী কিছু ব্যক্তি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপরাধে জড়িয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে অনুপ্রবেশও ঘটেছে। তদন্তে এসব অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে। কোথাও কোথাও দল নিজে থেকেই মামলা করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
নেতারা আরও বলছেন, অনেক সময় প্রকৃত ঘটনার তুলনায় অপপ্রচার বেশি হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি চক্র মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। তবে এসব সত্ত্বেও শীর্ষ নেতাদের বার্তা স্পষ্ট—দলীয় ভাবমূর্তির প্রশ্নে আপস নয়।
দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং রাজনৈতিক আস্থা পুনরুদ্ধারে শুদ্ধি অভিযান চলবে আরও কঠোরভাবে। দলের নতুন নেতৃত্ব ও সংস্কারের পথে এই অভিযানের মাধ্যমে বিএনপি জনমুখী ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির বার্তা দিচ্ছে।
ভিওডি বাংলা/ডিআর